জ্বলদর্চি

অলক জানা


অ ল ক জা না


আগাছা

আমিও
একদিন অন্তরের স্পর্শতা পেলে 
তোমার খোঁপায় চাঁদ গুঁজে দিতে পারি

যিনি প্রথম নাম দিয়েছিলেন
তুমি দিন তুমি রাত্রি -----
সেই ভাবেই ভাগ হয়েছিল
ফসল এবং আগাছার মধ্যে

তুমি কি কোনদিন আগাছার শস্য খেয়েছ
কী বিচিত্রময় আস্বাদ
কত অবহেলা, মমতা মাকিয়ে তৈরি করি
এক একটি শস্য-সন্তান

তোমাদের পক্ষপাতিত্বের অঙ্গার হয়ে
জানিনা আর কতদিন পুড়ব।

অবিশ্বাস্য

মুখটাকে বিশ্বাস করা যায না
কখন যে কি বলে বসে----
গতকাল ওমুক বাবুকে শালা বলতেই
একটা ঠাস করে চড় বসিয়ে দিলেন।

হাতটাকে বিশ্বাস করা যায় না
কখন যে কি করে বসে---
সেদিন চোখ ঘষে লাল হওয়ায়
অনেক টাকার ঔষধ খেতে হ'ল।

পা-টাকে বিশ্বাস করা যায় না
কখন যে কি মাড়িয়ে বসে----
হঠাৎ দেখি বোমায় পড়েছে তার গতি
আছাড় খেয়ে পড়ল মাটিতে।

চোখটাকে বিশ্বাস করা যায় না
কখন যে কি দেখে বসে---
রাস্তায় ধর্ষিতা নারী বিবস্ত্রে কাঁদছে
সূর্যের আলোয় খুন হচ্ছে শয়ের পর শ মানুষ।


বন্ধু

রোদ পোড়ায় ঘাসের কাঁথা
মাটি রক্ষা করে স্বাগত শেকড়
ধোঁয়া হয়ে উড়ে যায় সবুজ জীবন
দহন থেকে ব্রহ্ম ধোঁয়া-----
ফাটল মাটির রচনা মোছে বৃষ্টি পার্বণ। 


বিভাব

তোমার সাক্ষাতে পুনর্জন্ম আমার
কথাবিপুল বেজায় তুলোমেঘ, জলহীন

আলেয়া দহন, পুড়ে যাই, পুড়ে যাই
সন্ধ্যার বাতিঘরে। 
কবি সব জানে আকাশ-মাটির মধ্যিখানে 
দোষ-গুন আলো- অন্ধকার
কাঙ্ক্ষিত ব্যথার জন্য চিরদিন বিরহী চাতক

সহসা সূর্যাস্তের গানে মরণ সাজিয়ে রাখো
তোমার চোখতীর্থের আগুন সমগ্রে
ভেসে যেতে চাই------

অভিমান, অভিঘাতে প্রদীপ শিখায়
তুমি জ্বলে উঠলে আমি পতঙ্গপ্রমাণ
প্রশ্রয়ে আমরণ শুভেচ্ছার ছাই লিখে যাবো।
লীলাশুক

লৌহরঙ ছড়িয়ে থাকে মাটির উদাসে
আর উদাস ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে আছে কৃষ্ণকায় ঝোপ
বৈকালিক ঢোগে তলিয়ে যাচ্ছে আকাশের রঙ
ঘরে ফেরার প্রস্ততে মাতে অর্ধেক পৃথিবী----

আমি পিচ প্রশ্রয় রাস্তা থেকে ইঁটপাতা মাটি
মৌনতায় পা রাখি, বণিক হাওয়ার ভাঁজে ভাঁজে
শঙ্খধ্বনি চায়ে আলাপন, সান্ধ্যস্তব
ঘাসের আগার শিশির সলতে জ্বালিয়ে দেয় জ্যোৎস্না, ধানকাটা মাঠে চলে বাসর প্রস্তুতি

চিকনকালা ঝোপের ভেতর গড়িয়ে পড়ে
রাধা-জ্যোৎস্নার বিন্দু বিন্দু নীল
গোয়ালে গোয়ালে গোরু রোমন্থন গোণে
শুনশান এই তো মরশুম প্রেমের
আমি লীলাশুক, তিলকদৃশ্য মাখি
আর আড়াল রাখি গোপন বৃন্দাবন।

-----

Post a Comment

0 Comments