জ্বলদর্চি

রাজেশ্বরী ষড়ংগী


 রা জে শ্ব রী  ষ ড়ং গী   


যেটুকু পড়ে আছে

১.
এই যে অগ্নিদগ্ধ রাত বাক্যহীন জেগে আছে কোমলগান্ধারে
নাভিচক্রে তার ছায়া মনে পড়ে যায়

নদীবৃক্ষে বসে আছে সন্ন্যাসী আলো-
তাকে কিছু অভিমান খুলে দাও
ঘুম ভেঙে জেগে উঠবে গানের ভৈরব

২.
চারণক্ষেত্রে যে রাখাল ফেলে এসেছে কুয়াশার গান
তাকে দাও মোহবর্ণ পাখির ডাক
সন্ধ্যার জলস্পর্শ  
কলঙ্কবতী মেঘের আদর

প্রার্থনা করো আমাদের প্রতিটি জীবন যেন   
মেষপালক কিংবা বাঁশিওয়ালা রাখাল হয়ে থাকে
সমারোহ দিনে

ডুবে যাওয়া সব আলো নদী পারাপার করে
এইমাত্র বসেছে ছায়ায়
স্নান সেরে যে সব পাখিরা ফিরে যাচ্ছে সন্ধ্যার কোলে
তার ক্লান্তিকে আহার দাও
শয্যা দাও ঘাসের কোটরে

এমন মুক্তির দিনে কান্নাকে ধুয়ে নিয়ে ভাসাবো কোথায়

হাতের রেখার কাছে যে আয়ু বসে আছে
তাকে প্রতিদিনই রেখে আসি পাহাড়ি টিলার গায়
এ ভাবেই একদিন অন্ধ হয়ে ফিরে যাব
বাদামী হাঁসের কাছে
আয়োজনহীন কথা পড়ে থাকবে সমারোহ দিনে
                       
 
প্রেম ও পুরুষ

আমি মায়ামৃগ হলে তোমার কী নাম হবে?

প্রতিবেশী কী নামে ডাকবে তোমায়? 

বিনিময় হবে নারীর গর্ভ

পৃথিবীর সমস্ত কম্পন তোমার স্নেহ হয়ে ঝরে পড়ে

আমি পুনর্বার জেগে উঠি প্রেম ও পুরুষের গর্ভ থেকে    


আচ্ছন্ন

আলপথ ভেঙে ডুবিয়ে রেখেছি পা
স্তব্ধতা বাজুক বুকে

দিকচিহ্নের পাশে যা কিছু দাঁড়িয়ে আছে
আরও দূর দিগন্তে আঁকা
এই যে দেহের তাপ স্নান সেরে তুলে ধরছে জলের পতাকা
তাকে কি বোঝাতে পারি মুগ্ধতার সুখ?

একদিন আলো নিয়ে চলে যাবে যাবতীয় দিন
এমন শূন্য হাতে রেখো না আস্তিন
তাম্রলিপি রৌদ্র উপহার নিভে যেতে পারে 
আচ্ছন্ন ছায়ায়     
                 
মৌনভ্রমণ

এই যে বোধের কাছে ক্ষত রেখে ফিরে আসি অরণ্যবাহারে
পাখায় পাখায় ওড়ে বালিহাঁস
জল উড়ে যায় স্নেহলতা থেকে
                    জেগে ওঠে গুল্মজ্যোৎস্না

কতখানি ঘুম নিয়ে লুকোবে শরীর
ঝরে পড়ে  বিষাদ বাকল

হাওয়া এসে দেখে আর ফিরে যায় বসন্ত বনে  
না- হয় একদিন মৌনভ্রমণে যাব

সমস্ত কথা থাক দেহের গোপনে

----

Post a Comment

2 Comments

  1. মনের গভীর গোপন গুহাচিত্র ! বিবিধ বিচিত্র রঙ ! মুগ্ধতা অতলান্ত !

    ReplyDelete