জ্বলদর্চি

JL50 (Tv Series) জে এল 50 / রাকেশ সিংহ দেব

JL50 (Tv Series)

জে এল 50 : সময়ের গোলকধাঁধায় রহস্যের উড়ান
 
গল্প ও পরিচালনা – শৈলেন্দ্র ব্যাস
অভিনয়ে – অভয় দেওল, পঙ্কজ কপুর, পীযূষ মিশ্র, রাজেশ শর্মা, রীতিকা আনন্দ। 
মুক্তি – 4 সেপ্টেম্বর, ২০২০। সোনি লিভ। 
রেটিং – 3/5

সি বি আই অফিসার শান্তনুর উদ্দেশ্যে যখন মনের গভীরতম হতাশার কথা ব্যক্ত করে প্রফেসর দাস বলেন, বিদেশে হলে নতুন কোনো সম্ভাবনার উপরে কাজ আর আমাদের দেশে হলে নিতান্ত বালখিল্যতা। কি নেই আমাদের? কেন আমরা মন্দির মসজিদের বাইরে চিন্তা করি না? এই প্রশ্ন শুধুমাত্র গল্পের শ্রোতা শান্তনুকেই বিচলিত করে না, বিচলিত করে পর্দার এপারের দর্শকদেরও। কীসের অভাব আমাদের সিনেমাজগতে যে আমরা এতদিনেও একটি ভালো সাই-ফাই মুভি বানিয়ে উঠতে পারলাম না। ভালো সাই-ফাই সিনেমার নামে দেখলাম ছোটদের ছবি, নয়তো বড়দের ভাঁড়ামো! আর টাইমট্রাভেল? আমরা ভারতীয়রা এখানেও ক্রিয়েটিভ, সিনেমার পর্দায় আমরা মেশিনে চেপে (অ্যাকশন রিপ্লে) বা দেওয়াল ভেদ করে (ফান্টুস্‌) সময়যাত্রা করলাম। তবে সময় বদলাচ্ছে, কারণ এই মাসের শুরুতেই মুক্তি পেয়েছে এক অন্যধারার সায়েন্স ফিকিশন নির্ভর ওয়েব সিরিজ ‘জে এল ৫০’।

কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ওড়া এক এরোপ্লেন হাইজ্যাক করে উগ্রপন্থীরা। তার তদন্ত চলার মাঝেই উত্তরবঙ্গের লাভাতে এক প্লেন ক্র্যাশের খবর আসে। হাইজ্যাক হওয়া প্লেনটি ক্র্যাশ করেছে ভেবে তদন্ত শুরু করে সি বি আই। অফিসার শান্তনু (অভয় দেওল) এবং তার সহকারী গৌরাঙ্গ (রাজেশ শর্মা) তদন্ত করে জানতে পারেন এটা অন্য এক প্লেন। সেই প্লেনের ভাঙা ককপিট থেকে জীবিত উদ্ধার হয় পাইলট বিহু ঘোষ (রীতিকা) এবং প্লেনের যাত্রী বিশ্বজিৎ চন্দ্র মিত্র (পীযূষ মিশ্র)। শান্তনু তদন্ত এগিয়ে নিয়ে গিয়ে জানতে পারে এই প্লেন শেষবার কলকাতা থেকে উড়েছিল ৩৫ বছর আগে। তাহলে এতদিন এই প্লেনটি ছিল কোথায়? গল্পে ডাক পড়ে কোয়ান্টাম ফিজিক্সের প্রফেসর সুব্রত দাসের (পঙ্কজ কাপূর) যিনি ৩৫ বছর আগের সেই প্লেনের টিকিট কেটেও শেষপর্যন্ত যাত্রা করেননি। পফেসর দাস জানান এটা টাইমট্রাভেল কিন্তু শান্তনু মানতে রাজী হয় না। শুরু হয় এক অন্য সম্ভাবনার তদন্ত। তাহলে কি সত্যিই টাইমট্রাভেল সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তরের খোঁজ রয়েছে ওয়েব সিরিজ জুড়ে। 
গল্প বলার ধরনের নতুনত্ব না থাকলেও বিষয়বস্তুর উপস্থাপনা এই ওয়েব সিরিজকে বেশ অন্যরকম করে তুলেছে। বিজ্ঞানের ভাষায় গল্প দেখতে দেখতে আমরা চলে যায় সম্রাট অশোকের রাজত্বে, আবার ফিরে আসি। এও তো এক টাইমট্রাভেল! স্বল্প কয়েকজন সুঅভিনেতা নিয়ে ঘন্টা দুয়েকের এই সিরিজ দর্শকদের ভাবাবে। রীতিকা আনন্দের অভিনয় বাকীদের তুলনায় একটু দুর্বল তবে বাকীরা মাঞ্জা দেওয়া অভিনেতা, অভিনয়ের ধারেই ফালাফালা করে দর্শক হৃদয়। তবে পীযূষ মিশ্রের চরিত্রটি আরেকটু সময় পেলে ভালো হত। সপরিবারে একটি ভালো কল্পবিজ্ঞান নির্ভর সিরিজ দেখতে হলে চার এপিসোডের এই সিরিজ মিস করবেন না। বর্তমান ওয়েব সিরিজের দুনিয়ার হিংসা যৌনতার বাইরে এই ধরনের সিরিজ সত্যি ব্যতিক্রম। খামতি আছে কিন্তু এটা ভেবেই আপনার মন আনন্দিত হবে না আমরাও পারি, সময় বদলাচ্ছে।  

রেটিং 
5 অসাধারণ
4 বেশ ভালো
3 ভালো 
2 দেখতে পারেন 
1 না দেখলেও চলবে

Post a Comment

0 Comments