জ্বলদর্চি

প্রেম যখন রবির দুয়ারে/সূর্যকান্ত মাহাতো

প্রেম যখন রবির দুয়ারে

সূর্যকান্ত মাহাতো

এত বড় একটা রবীন্দ্র সরোবরের কোন ঘাটে যে নামব, আমি সেটাই তো ঠিক করতে পারছিলাম না। পাড়ের এপার ওপার কেবলই ছুটে মরছি। অবশেষে তার 'সোনার তরী' বেয়ে প্রেমের ঘাটেই খেয়া ভাসালাম। তবে দেখলাম যে, এখানেও তরী বাওয়া সহজ ব্যাপার নয়। তবুও যেটুকু 'রবি প্রেম' জল ছেঁকে তুলে আনতে পারলাম সেটুকুই নিবেদন করলাম। 

 শুরুতেই বলে রাখা ভালো যে, আমি এখানে রবি ঠাকুরের কোনও প্রেম কাহিনী বর্ণনা করতে চাইনি। সে আস্পর্ধাও আমার নেই। কিন্তু তার জীবনের পরতে পরতে ছুঁয়ে গেছে যে প্রেম, যে প্রেম তাকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বানিয়েছে, যে প্রেম তার সৃষ্টির প্রেরণা হয়ে উঠেছে, আমি তাকেই ধরার চেষ্টা টুকু করেছি মাত্র।

 স্ত্রী মৃণালিনী দেবী ছাড়া তার বয়ঃসন্ধিতে প্রথম প্রেম এসেছিল এক মারাঠি  ষোড়শী কন্যা আন্না তড়খড়করের কাছ থেকে।
দ্বিতীয় প্রেমটা এসেছিল লন্ডনে। স্কট ডাক্তার পরিবারের দুই কন্যাদের থেকে। তৃতীয় প্রেমের নাম কাদম্বরী দেবী। চতুর্থটি প্রেম নয় তবে কবির হৃদয়ে দাগ কেটেছিল বিদেশিনী ভিক্টরিয়া ওকম্পু। প্রতিটি সম্পর্কই ছিল অসমাপ্ত। তাই সৃষ্টি দিয়েই কবি সেগুলোকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন জীবনভর।

  মায়ের মৃত্যুর পর নতুন বৌঠানের স্নেহচ্ছায়াই আর উৎসাহে রবীন্দ্রনাথের পথ চলা ও সাহিত্য চর্চা। গন্ডিবদ্ধ স্কুলকে নিয়ে 'অভিলাষ' এর মতো কবিতা রচনা করলেন। লিখে ফেললেন "হিন্দু মেলার উপহার।" কিছু পরেই লেখা শুরু হল সেই বিখ্যাত "ভানুসিংহ ঠাকুরের কবিতাবলী"। এর একটা ছোট ইতিহাসও আছে। একদিন বর্ষণ মুখর দুপুরে কবি এক খাটিয়ায় উপুড় হয়ে একটা স্লেটে লিখে ফেললেন, "গহন কুসুমকুঞ্জমাঝে"। এইটুকু লেখার পর তাঁর নিজের উপর কেমন একটা বিশ্বাস জন্মে গেল। তারপর লিখে ফেলল একটার পর একটা কবিতা। আর এভাবেই তার পদাবলী সৃষ্টি।প্রথম কবিতার পংক্তি ছিল, "সজনী গো---আঁধার রজনী ঘোর ঘনঘটা চমকত দামিনী রে।"

  বিদ্যালয় শিক্ষা একরকম বন্ধের মুখে। কোনও বিদ্যালয়েই তাকে বেঁধে রাখা গেল না। ধারাবাহিক বিদ্যা চর্চাও সেভাবে হচ্ছিল না। তাই দাদা সত্যেন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথকে বিলাতে ব্যারিস্টারি পড়াতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব রাখলেন। কিন্তু বিলাতে যেতে হলে ইংরেজি জানতেই হবে।  সত্যেন্দ্রনাথ রবিকে তাই কিছুদিন আমেদাবাদে নিজের কাছে রাখলেন। একাকী রবি বাড়ির ছাদে শুধু ঘোরাঘুরি করেন আর নিজের মনে গানের সুর তুলেন। এখানেই প্রথম গানে সুর দিয়েছিলেন, "নীরব রজনী দেখো মগ্ন জোছনায়।" "বলি ও আমার গোলাপবালা।"

  একা একা ইংরেজি শিক্ষা সেরকম ভাবে হচ্ছিল না বলে দাদা সত্যেন্দ্রনাথ তার এক মারাঠি বন্ধু পান্ডুরঙ্গ এর বাড়িতে বোম্বাইয়ে পাঠিয়ে দিলেন রবীন্দ্রনাথকে। সেই বাড়িরই এক ষোড়শী কন্যা যেমনি বুদ্ধিমতী আর শিক্ষিতা তেমনি ছিলেন চালাক চতুর আর মিশুকে। রবীন্দ্রনাথের কাছে যিনি হ্লাদিনী বা চার্মিং। বিলাত ফেরত এই মেয়েটির নাম আন্না তড়খড়কর। কবির বয়ঃসন্ধি কালের প্রথম প্রেম। 

  দিলীপ কুমার রায়কে এক সাক্ষাৎকারে রবীন্দ্রনাথ জানিয়েছেন, প্রায় সময়ই আন্না যেচে তার সঙ্গে মিশতে আসত। নানান অজুহাতে তার আশেপাশে ঘুরে বেড়াত। কখনও রবীন্দ্রনাথের মন খারাপ হলে সান্ত্বনা দিত। আবার তার মন ভালো থাকলে আন্না পিছন থেকে তার চোখ টিপে ধরত। একটা অন্যরকম কিছু যে ঘটতে চলেছে সেটা কবি বেশ ভালোভাবেই টের পেতেন। কিন্তু সেটাকে উস্কে দেওয়ার মতো কোনও তৎপরতা কিংবা প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব কবির ছিল না।

  এছাড়াও একদিন চাঁদনি রাত। মনোরম পরিবেশ। কবির বাড়ির জন্য মন কেমন করছে। তাই আনমনা। এমন সময় আন্না হঠাৎ করেই কবির ঘরে এসে হাজির। কবিকে বললেন, "আহা কী এত ভাবো আকাশ পাতাল!" তার আচরণ কবির কাছে কেমন যেন ঠেকল! তাই সংক্ষেপে হুঁ হাঁ করেই উত্তর দিলেন। তারপর হঠাৎ করেই কবির চেয়ারের খাটের উপর বসে পড়ে বললেন, "আচ্ছা আমার হাত ধরে টানো তো---টাগ- অফ- ওয়ারে দেখি কে যেতে?"
না। কবি সেদিন হাত বাড়াতে পারেনি। বরং এত খেলা থাকতে আন্না হঠাৎ  টাগ অফ ওয়ার কেন খেলতে চায়ল তখন সেটাই কবিকে বেশি ভাবাচ্ছিল।

  একদিন তো আন্না কবিকে আচমকা বলে ফেলেছিল যে, কোনো ঘুমন্ত মেয়ের দস্তানা চুরি করতে পারলে তাকে চুমো খাওয়ার স্বাধীনতা জন্মায়। এর পর আন্না পাশে দস্তানা নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। কিন্তু জেগে দেখেন সেই দস্তানা একইভাবে পড়ে আছে। না। কবি সেদিন দস্তানা নেওয়ার মতো তাগিদ খুঁজে পায়নি।

  তাই বলে যে কবি মন সেই অনুরাগে ভিজেনি এমনটা নয়। একদিন আন্না কবিকে বললেন, "তুমি আমার একটা নাম দাও।"
কবি তার নাম দিলেন "নলিনী"। একটি কবিতায় ঐ নামটি গেঁথেও দিলেন ভৈরবী সুরে---
"শুন নলিনী, খোলো গো আঁখি।"
কবির গানের সুরে আন্না এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, একদিন তো বলেই ফেললেন, "তোমার গান শুনলে আমি বোধহয় মরণ দিনের থেকেও প্রাণ পেয়ে জেগে উঠতে পারি।"

  "ভগ্নহৃদয়" এর নলিনী হোক আর ১৮৮৪ সালে লেখা নাট্য রচনা "নলিনী"-র নলিনী চরিত্র হোক সবই আন্নার ছায়া সেখানে স্পষ্ট। এই প্রেমকে কবি একেবারেই জীবনের শেষ প্রান্তে এসে স্বীকার করেছেন। দিলীপ কুমার রায়কে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, 
"কিন্তু সে মেয়েটিকে আমি ভুলিনি বা তার সে আকর্ষণকে কোনো লঘু লেবেল মেরে খাটো করে দেখিনি কোনো দিন। আমার জীবনে তারপরে নানান অভিজ্ঞতার আলোছায়া খেলে গেছে--- বিধাতা ঘটিয়েছেন কত যে অঘটন---কিন্তু আমি একটা কথা বলতে পারি গৌরব করে যে, কোনো মেয়ের ভালোবাসাকে আমি কখনো ভুলেও অবজ্ঞার চোখে দেখিনি---তা সে ভালোবাসা যে রকমই হোক না কেন।"

  এই আন্না পরে এক বিদেশিকে বিয়ে করে এবং ১৮৯১ সালে অপঘাতে তার মৃত্যুও হয়।

  রবীন্দ্রনাথের দ্বিতীয় প্রেমটি এসেছিল বিলেতে। কবি তখন লন্ডনে পড়াশোনার জন্য ডাক্তার স্কট নামে এক গৃহস্থ পরিবারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অল্পদিনেই কবি সেই পরিবারের আপন হয়ে উঠেছিলেন। সেই পরিবারেও দুটি কন্যা ছিল। কবির সঙ্গে খুব সহজেই তাদের ভাব জমে উঠেছিল। বড় কন্যাকে কবি বাংলা শেখাতেন। বন্ধুত্বটাও তাই সহজেই গড়ে উঠেছিল।"সন্ধ্যাসংগীত" এর "দুদিন" নামে একটি কবিতায় তার ইঙ্গিতও দিয়েছেন কবি। তবে এই প্রেমটা কবিকে বেশ নাড়া দিলেও সাহসের অভাবে সেটা স্বীকার করতে পারেননি। দিলীপ কুমার রায়কে বলেছেন, "দুটি মেয়েই যে আমাকে ভালোবাসত এ কথা আজ আমার কাছে একটুও ঝাপসা নেই---কিন্তু তখন যদি ছাই সেকথা বিশ্বাস করবার এতটুকুও মরাল কারেজ থাকত।"

  'ভগ্নহৃদয়ের' 'ললিতা' আর কেউ নয়,সে যে মিস স্কট তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

  পরবর্তীকালে ফের যখন লন্ডনে কবি গিয়েছিলেন, সেই বাড়িটি ছিল না। ডাক্তার পরিবারের কে কোথায় হারিয়ে গেছে কবি তা জানেন না। মিস স্কট হয়তো বিবাগী হয়ে গেছেন। কিন্তু তারপরেও কবির কাছে "সেই বাড়িটি মনের মধ্যে চির প্রতিষ্ঠিত হইয়া আছে।" 

  না পড়াশোনা, না ডিগ্রী লাভ, না ব্যারিস্টারি পাশ কোনও কিছুই হল না। সব কিছু অসমাপ্ত রেখে বাবার আদেশে কবি দেশে ফিরলেন। দেশে ফেরার পর সবথেকে বেশি আপ্যায়ন করেছিলেন কাদম্বরী দেবী। নিঃসন্তান নারী হৃদয়ের সমস্ত স্নেহ, প্রেম, প্রীতি, আশা আকাঙ্ক্ষা সবই ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ঘিরে। দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর কবিকে কাছে পেয়ে কী যে আনন্দিত হয়েছিলেন তা বলে বোঝানো যাবেনা। উল্টে রবীন্দ্রনাথও সমান খুশি হয়েছিলেন।

  রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে কাদম্বরীর সম্পর্কটাকে কোনও  একটা নির্দিষ্ট নাম দিয়ে বোধহয় ধরা যাবে না। সরাসরি 'প্রেম' বলেও দেগে দেওয়া যাবেনা। আবার সেটা অস্বীকারও করা যাবে না। আসলে সম্পর্কটা ছিল প্রেমাতিত।

  যাই হোক এই কাদম্বরী দেবীর জন্যই রবীন্দ্রনাথ 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর' হয়ে উঠতে পেরেছিলেন। জীবনের প্রথম প্রত্যুষে রবির যে কিরণ ঘটেছিল তা দাদা জ্যোতিরিন্দ্র ও বৌঠান কাদম্বরীর অপার সহযোগিতায়। প্রথম জন তার ভিতরের সংকোচ খুলে দিয়েছিলেন। আর দ্বিতীয় জন তো তার কাব্য জীবনের ভাবধারা উন্মোচনে সোনার কাঠির স্পর্শ দিয়েছিলেন। দাদা জ্যোতিরিন্দ্র নাথের সাহিত্য বৈঠকে প্রবেশের অনুমতি বৌঠানই কবিকে করে দিয়েছিলেন।
 
  এবাড়িতে এসে নতুন বৌঠান রবীন্দ্রনাথের সৌন্দর্য বোধকে একটা উঁচু তারে বেঁধে দিয়েছিলেন। যেটা কোনও দিন আর খুলে যায়নি। রবীন্দ্রনাথের মানসিক গঠনে কাদম্বরী ছিলেন যেন একটা পিলার।

  রবীন্দ্রনাথের কাব্য প্রতিভাকে আরও বেশি ক্ষুরধার করে গড়ে তুলতে উৎসাহ তো দিতেনই  সেইসঙ্গে একটা অদ্ভুত কৌশলও নিয়েছিলেন কাদম্বরী দেবী। ইচ্ছে করেই রবীন্দ্রনাথকে বলতেন, "কোনকালে বিহারী চক্রবর্তীর মতো লিখতে পারবে না।"
এছাড়াও বলতেন, "রবি সবচেয়ে কালো, দেখতে একেবারে ভালো নয়, গলা যেন কী রকম। ও কোনদিন গাইতে পারবে না, ওর চেয়ে সত্য ভালো গায়।"

  রবীন্দ্রনাথ তখন ভাবতেন, "কী করে এমন হব যে আর কোন দোষ তিনি খুঁজে পাবেন না।" তখন আরও বেশি বেশি করে অনুশীলন আর চর্চা করতেন। নাটক লেখা, অভিনয় করা, গান বাঁধা, তাতে সুর দেওয়া, কাব্য রসাস্বাদন করা প্রতিটা কাজেই রবীন্দ্রনাথ আর কাদম্বরী দেবী একে অপরের পরিপূরক।

  রবীন্দ্রনাথের বিয়ের পরপরই ঘটে গেল সেই আকস্মিক দুর্ঘটনা। এক নিশীথ রাতে আফিম খেয়ে আত্মহত্যা করলেন কাদম্বরী দেবী। রবীন্দ্রনাথ যেন পাষান হয়ে গেলেন। এমন দুঃখ কষ্ট ব্যক্তি জীবনে আর তিনি কখনও পাননি।

  দুর্ঘটনার দিন কিংবা দু একদিন আগে এক সন্ধ্যাবেলা কবি মনোযোগ দিয়ে কিছু একটা লিখছিলেন। এমন সময় কাদম্বরী দেবী কবির ঘরে এসেছিলেন কিছু একটা বলতে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে লেখায় ব্যস্ত দেখে বলি বলি করেও কিছু না বলে ফিরে আসার সময় আর একটিবার কবির দিকে করুণ চোখে তাকিয়েছিলেন, যা কবির চোখ এড়িয়ে যায়নি। বৌঠান ঠিক কী বলতে এসেছিলেন---এই কাঁটার ব্যথা কবিকে সারাজীবন কষ্ট দিয়ে গেছে। যার উত্তর খুঁজে চলেছেন একটার পর একটা কবিতায়---

  "মনে কি দ্বিধা রেখে গেলে চলে সে দিন ভরা সাঁঝে,
যেতে যেতে দুয়ার হতে কী ভেবে ফিরালে মুখখানি---
কী কথা ছিল যে মনে।।"

"সেদিন আমায় বলেছিলে আমার সময় হয় নাই---
ফিরে ফিরে চলে গেলে তাই।।"

"হায়, অথিতি,এখনি কি হল তোমার যাবার বেলা।"

  কাদম্বরী দেবীর মৃত্যুর পর কবি "পুষ্পাঞ্জলি"-তে লিখেছেন, "যাঁহারা ভালো, যাঁহারা ভালোবাসিতে পারে, যাঁহাদের হৃদয় আছে, সংসারে তাহাদের কিসের সুখ! কিছু না। কিছু না।"

  কবির কথায় বারবার উঠে এসেছে নতুন বৌঠান, "খুব ভালোবাসতুম তাঁকে। তিনিও আমায় খুব ভালোবাসতেন। এই ভালোবাসায় নতুন বৌঠান বাঙ্গালী মেয়েদের সঙ্গে আমার প্রাণের তার বেঁধে দিয়ে গেছেন।"
 
  বৌঠানের সঙ্গে অভিনয়ে সেদিন গান বেঁধেছিলেন, "আই তব  সহচরী, হাতে হাতে ধরি ধরি।"
জীবনের শেষবেলাতেও বৌঠানকে  মনে করেই লিখলেন,
"ভালোবাসি, ভালোবাসি
এই সুরে কাছে দূরে জলে স্থলে বাজায় বাঁশি
আকাশে কার বুকের মাঝে ব্যথা বাজে,
দিগন্তে কার কালো আঁখি আঁখির জলে যায়গো ভাসি।"

কবি একটা গান লিখেছিলেন---
"প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে
কে কোথা ধরা পড়ে কে জানে---"
 
  দক্ষিণ আমেরিকা ভ্রমণে সেটাই সত্য হয়েছিল। এই ভ্রমণে না বেরোলে দুটো অপ্রাপ্তি থেকে যেত। একটি হল শ্রীমতী ভিক্টরিয়া ওকম্পুর মতো অকৃত্রিম বান্ধবী পাওয়া। আর অন্যটি হল "যাত্রী" ও "পুরবীর" মতো দুখানি বই। 'বিজয়া' নামকরণে কবি "পূরবী" কাব্য ভিক্টরিয়াকেই উৎসর্গ করেন। "অতিথি" কবিতায় লিখলেন---

  "প্রবাসের দিন মোর পরিপূর্ণ করি দিলে নারী
মাধুর্য সুধায়; কত সহজে করিলে আপনারি
দূরদেশী পথিকেরি..."

  পুরুষ নারীর কাছে কেবল সেবাই চাইনা, প্রেরণাও চায়। তাই
স্ত্রী সহ তার প্রণয়ীদের সম্পর্কে কবির যে দৃষ্টিভঙ্গি তা যুগ যুগ ধরে সমান সত্য---

 "প্রতি মেয়ের স্নেহ বলো, প্রীতি বলো, প্রেম বলো আমার মনে হয়েছে একটা করুণা---favour: কারণ আমি এটা বারবারই উপলব্ধি করেছি যে প্রতি মেয়ের ভালোবাসা তা সে যে রকমের ভালোবাসাই হোক না কেন---আমাদের মনের বনে কিছু না কিছু অফোটা ফূল ফুটিয়ে রেখে যায়---সে ফুল হয়তো পরে ঝরে যায় কিন্তু তার গন্ধ যায় না মিলিয়ে।"

তথ্যসূত্র: রবীন্দ্র জীবনী- প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়/ তীর্থঙ্কর- দিলীপ কুমার রায়/ ঠাকুর বাড়ির অন্দরমহল- চিত্রা দেব/ প্রবন্ধ সংকলন- শ্রী সুকুমার সেন।

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

2 Comments

  1. অসাধারণ লিখেছো❤️
    খুব সুন্দর হয়েছে❤️

    ReplyDelete