জ্বলদর্চি

পদ্মপাতায় শিমুল-৩০ /সীমা ব্যানার্জ্জী-রায়

পদ্মপাতায় শিমুল-৩০

সীমা ব্যানার্জ্জী-রায়

।।হৃদয়শতদল করিছে টলমল।।

আমার অফিসের ফোনে এরপর সেই ভদ্রলোক হঠাৎ করেই ওনার একাকীত্বের গল্প শোনাতে শুরু করলেন । পরে শুনেছিলাম বটী ওনাকে বলেছিল। ওনার স্ত্রী আমেরিকানাকে আঁকড়ে ধরেছিল। এখানে এসে কিছুদিন পর 'বাঙালির একঘেয়েমি সংসার' তার কাছে হ্যাকুচতেতো লাগতে শুরু হয়েছিল। তাই তিনি তাকে নার্সিং পড়ার জন্য পরামর্শ দেন। সেও পড়ে ফেলে। তারপরেই হাসপাতালের কাজে লেগে পড়ে। এখানে নার্সদের অনেক প্রেস্টিজ এবং মাইনে। দুরন্ত ঘূর্ণির মত ঘুরছিল বছর।

একদিন ওনার অফিস থেকে আসার আগেই সে নিজের আমেরিকান বান্ধবী ও তার হাজব্যান্ড কে বাড়িতে ডেকে খাওয়ায়। সেই সময় উনি ঘরে ঢোকেন। একটু গলা নিচু করে বাংলাতেই জিজ্ঞেস করেন, “বাইরে একটি নতুন গাড়ি ট্যাগ শুদ্ধ দাঁড়িয়ে আছে-ওটা কার গাড়ি গো।” ইংলিশেই সব কথোপকথন হচ্ছে, কারণ সে তো বাংলা বলেই না আজকাল।”

--মাই কার। হোয়াই দিজ কোয়েসচেন? সে ভ্রু কুঁচকে বলেছিল।

--আমাকে জানাও নি তো কিছুই, বিদিশা? অবাক হয়ে বাংলায় প্রশ্ন করে বসেছিলাম।

--প্রয়োজন বোধ করি নি। আর সব কিছু জানাতে হবে কোথায় লেখা আছে?-সপাট উত্তর।

ওর আমেরিকান বান্ধবী আর তার হাজবেন্ড হাসছিল আমাদের কথোপকথনে। আর সে ওদের দিকে তাকিয়ে আমার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে রাগী মুখ দেখাচ্ছিল। ভাবলাম বলি ওদের কী ধারণা হচ্ছে ভারতীয়দের সম্বন্ধে? কিন্তু কেন জানি না একটু নিজেকে কন্ট্রোল করেছিলাম। ছোট থেকেই আমি এই স্বভাবের মানুষ।

--তবে খুব ইনসাল্ট ফীল করেছিলাম। না ভেবেই বাংলাতে বললাম, “ওকে! তাহলে আমার সাথে থাকার কোন মানে হয় না, তাই তো?”

--'অ্যাবসোলিউট! আমি আমার ছেলেদের নিয়ে চলে যাচ্ছি। তোমার কাছ থেকে কিছুই চাই না। আমি যা কামাই সেটা অনেক। আমি অপেক্ষা করছিলাম এইরকম একটা মুহূর্তের। কারণ আর কিছুই না 'Disgusted'। হেসে বলেছিল।

--'আশ্চর্য তো! একটা কথাতেই সে রাজি হয়ে গেল? খুবই সামান্য ব্যাপার তো। সে কি আবার বিয়ে করেছে?

-হ্যাঁ করেছে! আমার কাছ থেকে যাবার ছয়মাসের মধ্যেই বিয়ে করেছে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ছোট্ট একটা উত্তর দিয়েছিলেন তিনি।

“ওর চেয়ে বয়সে একটু ছোট সুসিম। আমি কানাঘুষো শুনছিলাম-কিন্তু বিশ্বাস করতে পারি নি। যার দুটো টিনেজ ছেলে-সে এই কাজ করবে আমার ধারণার বাইরে ছিল। আগে থেকেই হয়ত ওরা প্ল্যান করেছিল। সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। তবে পরে সব কিছুই ওরা দুজনে প্ল্যান করে আমার কাছ থেকে আদায় করেছিল। আমি আর কোর্ট কেসে যাই নি। বিদিশা ভুল পথে পা দিয়ে ফেলেছিল।”

--ভেঙ্গে গেছিল একটি সংসার। ভেঙ্গে গেছিল মন। ছন্নছাড়া হয়ে গেছিল দুই ছোট ছোট সন্তান। কাজেই স্পষ্টতই ভেঙে পড়েছিলাম আমি। সেটা তো স্বাভাবিক। কিন্তু সেইদিনের দুই ছেলের শোক কে আমি ভুলতে পারি না আজও শিমুল। একেই বুঝি বলে পুত্রশোক। দুর্যোধনের ঊরুভঙ্গে গান্ধারীও কি ভেঙে পড়েননি? নারীর যায়গায় এখানে পুরুষ। বিবাহবিচ্ছেদের পর কোনও পুরুষ আর বিয়ে না করলে সে একেবারে নিষ্কলুষ। হয় তাকে দুঃখী মানুষ ভাবা হবে, নয়তো সাধুসঙ্গ গোছের কিছু একটা। মানুষের কী যে সব আদিম ধারণা, জানি না বাবা। তিনি তো কবি ও...তাই আরো লালনের গানে বললেন...

- “ওরে মন তুই কেন রে খাঁচার ভেতর?

তোর যে পাখি খাঁচা খুলে ওড়ে আকাশপানে

লালন কয় খাঁচা খুলে সে পাখি পালায় কোনখানে'

-- শোনার পর আর বেশি কথা বলতে পারলাম না। আমারও যে একটা অতীত আছে যার দুঃখের ঝাঁপি উজাড় করার জন্য একটা পাহাড়ের মতন মানুষের সন্ধান এসে গেল আপনা আপনি। আগের ফোঁটা ফোঁটা দুঃখই যে দানা দানা মুক্ত হয়ে যাবে তা আর জানব কি ভাবে? কোনও সংস্কারই আর মাথায় রইল না। সবার-ই ঘরে অশান্তি আছে-কেউ মুখ খোলে কেউ মান-সম্মানের ভয়ে মুখে কুলুপ এঁটে থাকে।

আবার বাড়িতে একদিন ফোন করলেন সেই ভদ্রলোক। সে'জদা ফোন ধরলেন। সে'জদার কথা বলে ভালো লেগেছে জানালেন বাড়ির সবাইকে। কিন্তু বিয়ে অবধি এগিয়ে যাবে তা আর মাথায় ঢোকে নি বাড়ির বড়দের এমন কি আমার ও।

কিন্তু সত্যি বলছি আমাদের বাড়ি আসার পর তাঁর বাঁধনহারা চোখের জল আমাকে আমার সংকল্প থেকে টলিয়ে দিয়েছিল। আমি কারুর চোখের জল দেখতে পারি না-একটুও বাড়িয়ে বলছি না। আমি সংকল্প করেছিলাম আর কোনদিন বিয়ে করব না। পুরুষেরা মানুষ হয় না। তাদের মন বলে কোনো পদার্থ নেই শরীরে। ভাঙবে মন ভাঙবে পাষাণ আঘাতের পর আঘাত পেয়ে-কিন্তু আমি টলব না আর, এই আমার প্রতিজ্ঞা ছিল। মানুষ ভাবে এক, কিন্তু ওপরওয়ালা আড়ালে দিব্বি কলকাঠি নেড়ে চলেন।

--এই রে! আমি কি চিনি তাঁকে, মনে হয় না। ইন্টেরেস্টিং। বলো বলো শুনি। নাম ক্যা হায় ভদ্রলোকের? একটু টুক করে জোক ছেড়ে দিল পলাশ।

--উফ, দেখেছো আবার শুরু করলে কিন্তু। তুমি চিনবে কি করে?

দিদিয়া, দাদাদের সাথে রেগুলার কথাবার্তা হচ্ছে সেই ভদ্রলোকের। বাড়ির সবাই বেশ খুশি। কিন্তু তাও বড় দুই দাদা বললেন, “ শিমুল এত সরল, আবার কোন বিপদ যে ঘটবে না, বলা যায় না। কাজেই খুব সাবধানে এগোতে হবে এইবার।”

দিদিয়ার কথাই মেনে নিলাম। কারণ, দেখলাম, সত্যি বৌদিরা স্বাভাবিকভাবে কেমন যেন অন্যরকম হয়ে যাচ্ছে। তাদেরও বয়স হয়েছে। দিদিয়া বেশ অসুস্থ, ডাক্তার বলে দিয়েছিলেন যতদিন আশ ততদিন শ্বাস। ডায়াবেটিস দিদিয়ার শরীরটাকে ছিঁড়ে খুঁড়ে তছনছ করে দিচ্ছিল। মানুষটাকে তো কিছুই দিলাম না, একটু শান্তি তো দিতে পারি?

ওদিকে ওনার মা ছেলেকে সমানে বুঝিয়ে চলেছেন, “মিন্টু। আজকাল ঘরে ঘরে এরকম হচ্ছে। আমি মা হয়ে তোকে বলছি তুই কোন অন্যায় করছিস না। উইকেন্ডে বাচ্চারা আসলে আমিই ওদের বুঝিয়ে দেবো। তোকে মাথা ঘামাতে হবে না । চল এখন খেয়ে নি চল তো। রাত হল। বেশি রাতে খেলে আমার আজকাল আর সহ্য হয় না।”

পলাশ মায়ের সাথে যেতে যেতে বলে উঠলঃ “ওদের কি ভাবে বোঝাবে মা। ওরা কি ভাবে বুঝবে? ভেবেছো সেটা? মা আঙ্কল কে বিয়ে করেছে তাহলে ড্যাড আন্টিকে বিয়ে করবে?”

-মা হেসে বললেন, ওসব ছাড় তো! ওসব পুরানো ভাবনা ছেড়ে দে। ঠাকুরের পরীক্ষার দিন এবার শেষ হল রে মিন্টু। ছোট্টবেলায় মা -বাবাহারা মেয়েটাকে দেখে কেমন যেন মায়ায় পড়ে গেলাম। এটাই বোধহয় উচ্চশিক্ষিতা-এর উদাহরণ।”

মা যেন আবার নতুন উদ্যম পেয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যাবেলা দুই ছেলেকে নামিয়ে দিয়ে গেল তাদের মা বিদিশা। তারা ভেতরে এসেই আবার চিৎকার-এ বাড়ি মাথায় করে দিল...

ওরা আসলে ঠাকুমা শিখিয়ে দিলেন ওদের বলতে যে, “ড্যাডি কে বলো-কাল আমরা ওকলাহোমা যেতে চাই। টার্নার ফলস-টা দেখতে খুব ভালো লাগে। চিকেন স্যান্ডুইচ, কোক -স্প্রাইট, আর আইস্ক্রিম ইগলুতে নিয়ে নেব যাবার পথে বুঝলি?” সেদিন রাতে পিজ্জা খেয়েই ডিনার সারা হল।

যেতে যেতে হঠাৎ ঠাকুমা বললেন- “আমি না থাকলে ড্যাডিকে কে দেখবে? দুজনেই চুপচাপ।

কাজেই ড্যাডিকে দেখার জন্য একজন নতুন মামের দরকার- তাই না?”

ওরা তো কিছুই বোঝে না। টুকটুক করে ঘাড় নাড়লো এ ওর দিকে তাকিয়ে।

ঠাকুমাই উত্তর দিয়ে দিলেন নিজের প্রশ্নের ।

- “তোমাদের নতুন মাম আসছে আর কয়েকদিনের মধ্যে। তোমরা তৈরী থাকো তাকে ওয়েলকাম জানাতে হবে তো। আর আমি ফ্রী হয়ে যাবো ড্যাডির চিন্তা থেকে।। -কি তোমরা রাজি আছো তো?”

ওরা একসঙ্গে বলে উঠলঃ “ হোয়াট? নিউ মম! -ওহ মাই গড! লেটস সি হার !”

বাড়ির সবার সাক্ষীতে রেজিস্ট্রি করে ব্যাটনরুজেই বিয়ে হয়ে যায় । দেশ থেকে দাদা-বৌদির আনা নীল বেনারসী, সোনার হার-বালা, কানের দুল, পলাশের জন্য ধুতি-পাঞ্জাবী, সোনার বোতাম, আংটি কোন কিছুর অভাব হল না এই বিয়ের। সবাই শিমুলকে যে ভালবাসে। তাই তাকে প্রাণভরে আশীর্বাদ করার জন্য এ ওর কাছে শুনে অ-নিমন্ত্রিতরাও এসেছিলেন। প্রথমে সেখান থেকে শিমুলের অজ্ঞাতে সবাই আসে নিউ অর্লিন্সের বিখ্যাত হরে কৃষ্ণ মন্দিরে। যেখানে সিঁদুর দানের সব ব্যবস্থা পাকা করে রেখেছিলেন বড়রা।

শিমুল কিন্তু এসব কিছুই জানে না। তবে সে সেই মেয়ে নয় যে-অহেতুক অশান্তিতে ভরিয়ে দেবে পরিবেশ। তবে মনে মনে সে মোটেই খুশী নয়। সে সিঁদূর মাথায় দেওয়ার পক্ষপাতী নয় মোটেই। তারপর যারা খবর পেয়ে এসেছিলেন তাদের নিয়ে ইন্ডিয়ান রেঁস্টোরায় রিসেপশন পার্টিও সারা হয়ে গেল। স্ন্যাক্সঃ সামোসা, চিকেন উইংগস, দই বড়া, টার্কি প্যাটিস থেকে শুরু করে চিকেন বিরিয়ানী, ফিশ ফ্রাই, শুখা গোবি (পাঞ্জাবী স্টাইল), শাক পনীর, গোলাপ জামুন, রসগোল্লা।

সে যাই হোক, নমঃ নমঃ করে বিয়ে হয়ে যাবার পর লাক্সারী ডাবল ট্রী হোটেলে সবাই জমায়েত হল। আমার দুই গডমাদার মিস বারবারা উইলিয়ামসন আর মিস লরা অ্যামবিউ এসেছিলেন। সেজদার কাছে খবর পেয়ে ওনারাও অফিস থেকে ছুটি নিয়ে এসেছিলেন। ওনারা আমাকে 'ইন্ডিয়ান ডটার' বলতেন। মিস বারবারা দিয়েছিলেন ওনার মায়ের একটি ব্রোচ-অসাধারণ সেই ব্রোচ। আর মিস লরা দিয়েছিলেন একটি অনিক স্টোনের সাদা হাতি।

মনে আছে? হঠাত একদিন ফোন করে বলেছিলেন, “আই ওয়ান্ট টু ভিজিট ইউ-ইটস ওকে ফর ইউ, শিমুল?”

-“ইয়েস, হোয়াই নট? উই উইল বি হ্যাপি দেন।”

মিস লরা তো তিনবার এসেছিলেন আমাদের এই বাড়িতে। নিজের হাতের তৈরী কত গিফট নিয়ে এসেছিলেন । যখন তোমার ক্যাডিলাক গাড়িটা ট্রেণ স্টেশন থেকে চুরি হয়ে গেল, উনি শুনতে পেয়েই একটা নিজের হাতে তৈরী সিরামিকের অ্যাঞ্জেল এনেছিলেন, এইগুলো ভোলার নয়।” বলেছিলেন, “আমি প্রার্থনা করেছি তোমার জন্য। আর বিপদ আসবে না মাই সুইট ডটার।

এখানে এসেই বললেন, “ ফ্রায়েড পাফড ব্রেড, এগ প্ল্যান্ট ফ্রাই অ্যান্ড রাইস পুডিং মেক ফর মি।”

কি তৃপ্তি করে খেয়েছিলেন। আমি খুব খুশি হয়েছিলাম। সমানে আমার রান্নাঘরের চেয়ারে বসে বসে আমার রান্না করা দেখছিলেন দুজনে।

খুব ভালোবাসতেন ওনারা। বিয়ের কথা জানাতেই এসেছিলেন। জীবনে সবার কাছেই ভালোবাসা পেয়েছি। তাই আমি আমার ঠাকুর-মা-স্বামীজি, বাবা-মা-দিদিয়া-সেজদা কে আমার অন্তরের শ্রদ্ধা জানাই। ওনারাই আমার সব। আর আমার সব দাদারা-বৌদিরা তো ছিলই উপস্থিত। আবার ব্যাঙাচির লেজের মতোই টুক করে খসে পড়ল 'ব্যানার্জ্জী'।

এতদিনে পেয়েছি নিজের করে একখানা বাড়ি, পরিযায়ী পাখি হয়ে আর থাকতে হবে না।।

সিঁদুরকে বড্ড ভয় পেতাম তাই নিরিবিলিতে বিয়ে সেরেছি। ভেবেছিলাম সিঁদুর কেন লাগাতেই হবে? সিঁদুর লাগালেই কি বিয়ে পাকাপাকি টিকে থাকে? প্রথম বিয়ে অত নিষ্ঠা ভরে করেও তো ভালো ফল হয় নি। তাহলে সিঁদুরের মাহাত্ম্য কিসের? হাবুডুবু খেতে খেতে-ই উত্তরণ আবার জীবনের তীরে। পেলাম এবার পলাশকে।

--ঘুড়ি ফেঁসে যায় শুনেছি, মানুষও ফেঁসে যায়। ফাঁসে না, পলাশ প্রেমে ফেঁসেছে। আবার একটা চুটকি দিল পলাশ।

ডাবল ট্রী হোটেলের স্যুইটেই ফুলশয্যার ব্যবস্থা করেছিল পলাশের মামারা আর শিমুলের বাড়ির সবাই মিলে। শিমুল ভীষণ ফ্র্যাঙ্ক। ন্যাকামো নেই, লজ্জা নেই, অথচ অসভ্যতাও নেই। সে বলল, “ প্লিজ শোনো রাত বারোটা বাজলেই হোটেলে আমাদের ঘরের সমস্ত আলো কয়েক মিনিটের জন্য নিভিয়ে দেবে। বাড়ির ওরা প্ল্যান করছিল, আমি আড়াল থেকে শুনেছি। সেই নিয়ে চাপা হাসাহাসিও করছিল ওরা।”

--“সে কি? কেন? কিছু ভেবেছো শিমুল?” স্পষ্ট করে, সুন্দর করে জিজ্ঞেস করল পলাশ। আজ বাড়ির লোক সারপ্রাইজ দেবে পলাশকে...

লাইট নিভতেই শিমুল ভয়ে একেবারে বিছানায়...হঠাৎ তোমার উফফ ! লাগছে লাগছে ...আওয়াজে হেসে ফেললাম। আমি এতক্ষনে খেয়াল করলাম সে রীতিমত পলাশের বুকের পাশটিতে বসে আছি। লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি সরে যাব তখনই পলাশ জড়িয়ে ধরে বলল, “এবার তো ভালোবাসায় বিশ্বাসী হও শিমুল। ...লেট আস ট্রাই আওয়ার লাক ওয়ান মোর টাইম। বসন্তেই তো শিমুল আর পলাশ উঁকি মারে। ওরা একসাথে আসে আবার একসাথে চলে যায়। আজ সেই বসন্ত।”
আমার ফোনে মেসেজ ঢুকলো... “বলেছিলাম না বেশি কথা বলতে নেই। বুদ্ধি বেরিয়ে যায়!”
আমি হেসে বললাম, “আমি তোমার গলা টিপে মেরে দেব নবৌদি...”
ফোনটা হাত থেকে কেড়ে নিয়ে পলাশ বললো... “সম্পর্ক নিয়ম মেনে গড়তে নেই বৌদি। ভেঙে যাবার ভয় থাকে। যে সম্পর্ক আপনা আপনি তৈরি হয়ে যায়...সেটাকে বলে ভালোবাসা।”

কানে কানে ফিস ফিস করে পলাশ বলল, খরস্রোতা নদীকে বাঁধ দিতে নেই, শুধু স্পর্শ করতে হয় তার উচ্ছ্বলতাকে। আমি লজ্জায় ততক্ষণে পলাশের ঘাড়ের কাছে মুখ লুকিয়েছি।
বিয়ের পর দুই দাদা-বৌদি, ভাইঝিদের আর দিদিয়ার সাথে শিমুল এলো পলাশের নতুন ঠিকানায়। শিমুলের জীবনে আরেক অধ্যায়ের সূচনা শুরু হল.....

(চলবে)

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments