জ্বলদর্চি

সঞ্জীব ভট্টাচার্য


স ঞ্জী ব  ভ ট্টা চা র্য

রক্ষাকর্তা ! 


কোনোক্রমে টিকে থাকা। তাবড় তাবড় মানুষকে কেমন সিঁটিয়ে দিয়েছে গো !  নিজের হাত আর নিজের মুখের মধ্যেও সহজ সম্পর্ক নেই। নিজেকে নিজে বাঁচাও, অন্যকে বাঁচতে দাও। ঘরে থাকো,আগল লাগিয়ে রাখো। কেউ রক্ষা করার নেই। ভরসার জায়গা টলোমলো, ভয়ে মেজাজ হারানো। বিপক্ষকে ঘায়েল করতে যাদের এক ইশারাই কাফি ছিল তারাই কেমন হাপর টানছে। কোথায় যাবে বাপ। এ আমার এ তোমার পাপ। আচ্ছা এসময় তো রবীন্দ্রনাথের মতো মানুষ রক্ষাকর্তা হতে পারেন !
তারপরেই মনে হল, কে রবীন্দ্রনাথ? আমিই তো সেই। একগাদা প্রতিভা নিয়ে বসে আছি। বেশ তো আঙের পর বাঙ লিখতে পারি। ভালোই তো জ্ঞানী জ্ঞানী মুখ আমার। সুললিত ভাবনা থেকে শিল্প সুষমা,কোনটাতে কম! সুতরাং  দম মারো দম।
তাছাড়া রবিঠাকুরের হাতে তাঁকে আর করোনাগ্রস্ত করে কী লাভ ! আর আমরা তো অনেক দিন থেকেই করোনা-মান্য কার্যক্রম ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে মেনে আসছি। মুখোশপরা মুখ আমাদের, মাস্ক কোন ছার!  প্রতিবেশী ছাড়ুন, পরিবারগুলোকেই ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিয়েছি। আত্মীয়দের নাম মনে করতে কালঘাম   বেরিয়ে যায়। ঘরের বাইরে যাওয়া মানে খাওয়া দাওয়া মৌজ মস্তি, হাম দোনো হামারা এক বা  দোনো এবং এটাতেই যা একটু কষ্ট হচ্ছে। নাহলে বন্ধুবান্ধব বলতেও উৎসবে য তিষ্ঠতি।
এ তো ব্যক্তিগত। সমষ্টিগত ? রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়, সাম্প্রদায়িক, অর্থনৈতিক - কত বিভাজন ! স্বার্থ সেখানে ফেভিকল। 
ফলে রবীন্দ্রনাথ অনেকদিনই একঘরে। কিছুটা গানে, কিছুটা কোটেশনে। মাঝে মাঝে বাদে প্রতিবাদে তরুণীর পৃষ্ঠদেশে।
সত্যি বলতে কী মন্দিরে যেতে হলে ভেতরে বাইরে আগে পবিত্রতা আবশ্যক।এত মিথ্যাচার,এত সংকীর্ণতা,এত নিষ্ঠুরতা,এত আত্মকেন্দ্রিকতা নিয়ে কী করে সেই মানুষটির কাছে যাওয়া যায় যিনি বলেছেন , দেশে দেশে মোর ঘর আছে কিংবা যিনি সেই স্বর্গে জাগরিত হতে চেয়েছিলেন যেখানে  'বসুধারে রাখে নাই খণ্ড ক্ষুদ্র করি'। তাঁর কাছে খণ্ড মানুষের হৃদয় নিয়ে কী করে যাওয়া যায়। আসলে সেই অপার হৃদয়ের মানুষের কাছে তখনই আশ্রয় নিতে পারি, যদি তাঁর বিস্তারের সামান্য অংশও নিজের মধ্যে জাগাতে পারি। আর তখনই মনের মধ্যে প্রকৃতপক্ষে ধ্বনিত হবে ,মেঘ দেখে কেউ করিস নে ভয়.....।

--------

Post a Comment

1 Comments