মো না লি সা পা হা ড়ী
প্রলয়ের মুখে সুখের যাপন
অগনিত লাশের পাহাড় ঠেলে
জ্বলে উঠে নির্ভীক সন্ধ্যাদীপ
শাঁখের আওয়াজ জানান দ্যায়
সভ্যতার বুকে এখনো নিচ্ছি শ্বাস চরম ক্ষিপ্রতায়-
ঝড়, মহামারী নিয়ে সংসার বাঁধা
নিরন্ন রাত মধু হয়ে যায় জোছনায় ভিজে
ক্ষুধার অলংকার পরেছে জীবন অকৃত্রিম সুখে
মৃত্যুকে বুকে নিয়ে ব্যবধানহীন যাপন
অদৃশ্য আলোয় রাঙা আনন্দের খনি
মহাপ্রলয়ের দিনেও ঠিক রেখে যাবো উত্তরসূরি
মহাকালের বুকে
বাঁশের বাঁশি বাজিয়ে যে ডেকে আনবে সকাল
আগামীর গর্ভ থেকে...
জলপাই রং ও গ্রাম্য কিশোরী
যবে থেকে কিশোরী হয়েছে গ্রাম্য নিবিড় মন
জলপাই রং- আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি।
এই যে তুমি দুর্বার বন্যার সামনে প্রতিরোধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছো
এই যে তুমি শত্রু শিবির থেকে ছিনিয়ে আনছো দেশের কণা কণা মাটি
এই যে তুমি হাত বাড়ালেই বন্ধু হচ্ছো সব দুর্গতদের
তোমাকে - তোমাকে - তোমাকে আমি ভালোবাসি।
এখানে নেই কোনো কামনার রং
ইপ্সিত বিলাসের প্রত্যাশিত ক্ষণ
এ শুধু পৃথিবীর মতো সূর্যকে ভালোবাসা
দূরত্ব থাক না মাঝে-
তবু তোমার আলোতেই আলোকিত হই
সকাল থেকে সাঁঝে।
তোমাকে...কবিতার স্রষ্টাকে
এমন শোকের সময় অশোক ফুলের মতো
ফুটিয়ে তুলছো কবিতা!
মনের বিলাসিতায় রাঙিয়ে তুলছো পৃথিবী?
নানা রাগে জীবন সাজাচ্ছো শৌখিন প্রচেষ্টায়...
ডায়েরির পাতা ছিঁড়ে খুঁড়ে অভাগা ভারতবর্ষ এঁটো কাঁটা হাতড়ায়
শবের আঁচল টেনে ধরে দুধের শিশু
খাড়া করে দাঁড় করাতে চায় দুখিনী মা'কে
কলমের নিব ফালাফালা করে ঐ কারা
পরিত্রাণ খোঁজে
সাহায্য ভিক্ষা করে
আলোর মুখ দেখতে চায়।
ধিক কবি!
পারোনা মশাল জ্বালাতে মনের অন্ধ গলি ঘুঁজি?
একমুঠো সাদা ভাত আসন পেতে বেড়ে দিতে,
বুকের পাঁজরে ছড়িয়ে দিতে একচিলতে শান্তির আশ্বাস!
তবে আজ বন্ধ থাক শব্দফুল ফোটানোর খেলা
বন্ধ হোক অজস্র কবিতার মিছে কচকচি...
বাড়ি
বিশ্বাস আর ভরসা গেঁথে গেঁথে
ভালোবাসার মলম প্রলেপ দিয়ে
আমরা বাড়িটা বানিয়েছিলাম স্বপ্নের গন্তব্যে।
দিনের পিঠে দিন যত গেছে
কথার পিঠে কথারা অলিগলি জুড়ে বাসা বেঁধেছে দুর্বৃত্ত বোলতা বা ভিমরুল
চিলেকোঠায় পলায়নরত মনপাখি আঁকুপাঁকু
সিঁড়ি বেয়ে অস্তিত্বের ওঠা-নামা
শিউলী ঝরানো উঠোনে বিছিয়ে দিই যন্ত্রণার সুগন্ধি ছাই
এভাবেই স্বপ্নের বাড়িটা ছুঁয়ে যায় হতাশার ভরাডুবি রং-
সার সার উৎকণ্ঠা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে একাকী।
সমান্তরাল যাত্রাপথে আমরা
জল থৈ থৈ ষাট নম্বর জাতীয় সড়কের বিসর্পিল ভঙ্গির ওপর
ভাঙা সাইকেল সওয়ার একাকী
ভেজা পিচ্ছিল পথের ওপর আরো ভিজে আমি দূর গন্তব্যের অভিমুখে
নরম বৃষ্টিকণা সহস্র কাঁটা রোমকূপে
দিনের আলোয় অদ্ভুত আঁধারে দৃষ্টি আবছা
জনাকীর্ণ যাত্রাপথে সহযাত্রী দু'একজন
পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে অসম্ভব তাড়নায়
হঠাৎ মনে হলো এ যেন আমার জীবনের জলছবি,
ফেলে আসা গতজন্মের বর্ণাঢ্য চিত্রশিল্প
ষাট নম্বর জাতীয় সড়ক আর আমি বিসর্পিল ভঙ্গিতে সমান্তরাল এগিয়ে চলেছি...
-------
0 Comments