জ্বলদর্চি

ম্যাম / পার্থপ্রতিম আচার্য

  ফোটোগ্রাফি- সৈয়দ স্নেহাংশু   


ম্যাম 

পা র্থ প্র তি ম  আ চা র্য 


সকালে দারুণ রোদ রোদ ছিল 
দুপুরে বাদামি সন্ধে
সাদা কুয়াশায় শালমুড়ি দিয়ে 
গম্ভীর ম্যাম দাঁড়াল... 
হলুদাভ লাল ক্রিসেনথিমাম 
বাতাস ছুঁয়েছে গন্ধে, 
দাগ ধরা ন্যাবা কাঠের বাড়িটা 
স্বেচ্ছায় মুখ বাড়াল।  

আউলানো মেঘ, এলোমেলো মেঘ 
ছড়ানো ছেটানো বৃষ্টি... 
বিস্তৃত খাড়া পাহাড়ের ঢালে 
হৃদয় কী ধ্বনি শুনছে? 
এত পাগলামি ভালো নয় 
তবু ঝোরাটির অনাসৃষ্টি --
সানুদেশ থেকে মুক্তদৃষ্টি 
পাহাড়ের টেড়ি গুনছে।  

মন্থর গতি বৈকালি মেঘে 
বরফের কুচি চূর্ণ...
নিরবধিকাল হাওয়া শনশন 
যেন পাহাড়িয়া সংগীত... 
শেওলা জড়ানো সিঁড়ি ভাঙা পথ 
প্রস্তরে পরিপূর্ণ... 
বহুদূরে যেন জলরঙে আঁকা 
অস্থির ঢেউ রংগীত। 

থেমে থেমে হাঁটা, তিতির চরণে, 
নিচে তাকিও না লক্ষ্মী... 
পাকদণ্ডীর কুর্নিশ বোঝে 
সর্পিল স্টিম ইঞ্জিন? 
আকাশ, আত্মা, ঈশ্বর রূপে 
যাপনের শত ঝক্কি --
রেখেদিলে ওই ব্যথার পাহাড়ে 
প্রাণ, প্রবাহিত মসৃণ... 

কন্দর গুহা অন্দর ঘুরে 
একবার ম্যাম তুমিও --
বিরক্তিকর  চশমা সরিয়ে 
মুখোশ টি রাখো  নামিয়ে --
বিভ্রমহীন কাঠের বাড়িতে 
যদি পারো একা ঘুমিও,  
আমিও না হয় থেকে যাব  বৃথা 
ঠাণ্ডার দৌড়  থামিয়ে... 

বেদনাবিহীন মানুষ থাকেনা।  
জীবন যাপনে স্পষ্ট --
কিছু প্রেম থাকে গোপনে, কাননে 
ফুলের মহিমা জড়িয়ে... 
প্রকৃত প্রমিত বিষাদে প্রবল 
কৃপা হয়ে জাগে কষ্ট... 
তবুও ভ্রমণে সংসার থাকে 
কণ্টক কাঠি সরিয়ে।  

কাহিনির ঘোড়া, আলেয়ার আলো 
দেবদারু, পাইন রাঙানো 
চুলখোলা রোদ, সন্ধ্যার আগে 
অস্থির ঝুঁটি নাড়ালে 
কী ভাবে বুঝবে ' কু ঝিক ঝিক'... 
খুচরোয় মন  ভাঙানো --
তোমার জন্য মুক ও বধির 
ঋজু পাষাণের আড়ালে !  

ঘুমভাঙা ভোরে  মুঠোমুঠো ফুল 
দিতে পারি প্রিয় সকালে... 

বন্ধনী খুলে, নিমীলিত চোখে 
ইঙ্গিতে ঠোঁট  বাড়ালে... 

   ফোটোগ্রাফি- সৈয়দ স্নেহাংশু   


Post a Comment

3 Comments

  1. খুব ভাল লাগল😄

    ReplyDelete
  2. অনেক দিন পর একটা ভাল কবিতা পড়লাম।

    ReplyDelete