খুদা হাফিজ : বিরিয়ানীর বেশে পরিবেশিত পোলাও
রেটিং – 3/5
পরিচালক- ফারুক কবীর
অভিনয়ে - বিদ্যুৎ জামওয়াল, অনু কাপুর, শিবালিকা ওবেরয়, অহনা কুমরা, বিপিন শর্মা, শিব পণ্ডিত ।
রিলিজ – ১৪ আগস্ট, ২০২০/ ডিজনি প্লাস হটস্টার ।
বিদেশে চাকরী করতে গিয়ে নিখোঁজ স্ত্রীর সন্ধানে গিয়ে এক অসহায় স্বামীর চোখ দিয়ে উন্মোচিত হয় আন্তর্জাতিক স্তরে ‘হিউম্যান ট্রাফিকিং’ অর্থাৎ মানবপাচার চক্রের কর্মকাণ্ড। প্রতিবছর উপমহাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে কাজের জন্য গিয়ে হারিয়ে যায় অসংখ্য মেয়ে। সবার ঘরে ফেরা হয়ে ওঠেনা। তাদের স্বপ্নের সাথেই বিকিয়ে যায় শরীর। নির্মম বাস্তব দুনিয়ার এসব বিষয় নিয়েই পরিচালক ফারুক কবীরের অ্যাকশন থ্রিলার ছবি ‘খুদা হাফিজ’ গল্পের শুরুটা বেশ। বাবা-মা’র দেখা ভিন্ন ধর্মের পাত্রীকে বিয়ে করে শিক্ষিত স্মার্ট সমীর (বিদ্যুৎ জামওয়াল)। গদগদ রোম্যান্স, সুখের ঘরকন্নার এর মাস কাটতে না কাটতেই দেশে শুরু হয়ে যায় চরম রিসেশন। যার জেরে কাজ হারায় স্বামী-স্ত্রী দুজনেই। এবার সংসার চলবে কী করে? সেই অসহায় পরিস্থিতিতে কর্মখালির বিজ্ঞাপন দেখে এক ভুয়ো সংস্থার খপ্পরে পড়ে লখনউয়ের নব্যবিবাহিত দম্পতি। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ওমানে (সিনেমায় নোমান) কাজ পেয়ে যায় স্ত্রী নার্গিস (শিবালিকা ওবেরয়)। আকস্মিক নিয়োগপত্র আসায় তড়িঘড়ি স্ত্রীকে পাড়ি দিতে হয় দুবাইয়ে। সেখানেই গল্পের মোড় ঘোরে। বিদেশের মাটিতে হিউম্যান ট্রাফিকিং চক্রের শিকার হয় ওই নববধূ (শিবালিকা ওবেরয়)। কোনমতে ফোনে স্বামীকে তার অবস্থার কথা জানাতে সক্ষম হয়। এদিকে দেশে বসে মহা ফাঁপড়ে পড়ে যায় স্বামী (বিদ্যুৎ জামওয়াল)। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ে স্ত্রীকে উদ্ধার করতে। অজানা দেশে অচেনা মানুষের ভীড়ে শুরু হয় চেনা মুখের খোজ। আরব আমিরশাহের মাটিতে মানবপাচার চক্রের পাণ্ডাদের খোঁজ পেতে বেশ বেগ পেতে হয় তাকে। শুরু হয় স্ত্রীকে ফিরে পাওয়ার লড়াই। এর মাঝেই দূরদেশে আলাপ হয় ড্রাইভার অনু কাপুরের সঙ্গে। তারপর? জানতে হলে দেখতে হবে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত অ্যাকশন থ্রিলার সিনেমাটি।
সিক্স-প্যাক অ্যাবস, সুঠাম চেহারার মার্শাল আর্টিস্ট অভিনেতা বিদ্যুৎ জামওয়াল যে ছবিতে, সেখানে অ্যাকশন সিকোয়েন্স ভরপুর থাকবেই, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু প্রেম-বিরহের চক্করে সেই অ্যাকশনের মজাটাও ফিকে হয়ে গেছে। আসলে অ্যাকশন হিরোর পরিবর্তে একজন সংবেদনশীল অভিনেতা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন বিদ্যুৎ। সেই প্রচেষ্টায় তিনি যথেষ্টই সফল হয়েছেন। বলিউডি নেপোটিজমের এই টালমাটাল দুনিয়ায় আউটসাইডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। অল্প সময়ের ব্যবধানে পরপর দুটো ছবির রিলিজ সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে কি? নায়িকা শিবালিকার এটি দ্বিতীয় ছবি, কিন্তু এখানে তার চরিত্রের বিশেষ কিছু করার ছিলনা। পাঠান ড্রাইভার বন্ধুর চরিত্রে অনু কাপুর বেশ ভাল। তবে মোটের উপর ছবিতে প্রচুর রসদ থাকলেও বিশেষ মন কাড়ল না বিদ্যুৎ জামওয়ালের ‘খুদা হাফিজ’। আসলে মন্দের উপর ভালোর বিজয়গাথা সেই আদ্দিকাল থেকে বড্ড বেশী টাইপকাস্ট হয়ে গেছে বলিউডি দুনিয়ায়। এর চক্করে মার খেয়ে যায় ছবির থ্রিলার। পরিচালক সিনেমাতে কিছু টুইস্টের আয়োজন করলেও পুরনো গতের প্লট অচিরেই প্রেডিক্টেবল হয়ে পড়ে। সবমিলিয়ে অন্যরকম চরিত্রে বিদ্যুতকে দেখার জন্য ছবিটি দেখুন ভালোই লাগবে।
রেটিং :
5 অসাধারণ
4 বেশ ভালো
3 ভালো
2 দেখতে পারেন
1 না দেখলেও চলবে
0 Comments