জ্বলদর্চি

২০২১ নতুন বছর নতুন লেখা (গুচ্ছ কবিতা)/ বনশ্রী রায় দাস

২০২১ নতুন বছর নতুন লেখা 
গুচ্ছ কবিতা 
বনশ্রী রায় দাস


হাওয়ামুখ

শুরুতেই খাম্বাজ বাজালে
গলে গলে যায় বাঁশির উত্তাপ ,
কমা দাঁড়ি মানে না ভরাকোটাল ,
জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভাঙে ।

সবাই আমন্ত্রিত মনবাগানে বৃষ্টি ছাড়া ।

সে বৃক্ষের গোপন ভিজে যাওয়া জানে  বলে 
ডাক পাঠাইনি তাকে শ্রাবণ বিকেলে। 


 অতএব

গতি অভিমুখী চক্র এক
গড়িয়ে নামে ঘর্মাক্ত - -
লাল পাতা ফুটে কাক্ষিকে
তুমি সুখ চাও যদি নিরাকার 
বাক্য কিছু আর শরীর চাইলে 
জালকে রক্ত তঞ্চন।
ফুলে ফুলে  মাধুকরী শেষ হলে 
ভ্রমর ফিরে আসে নিজস্ব 
মাটিধুলি কারুবাসনায়।
চিদাকাশ চৌচির  
তার স্রোতস্বিনীতে আমি 
পুঁতে দিই আলফানসো অলিভ
আর অপেক্ষার থাকি
পাখি পতঙ্গ এসে কবে
চুষে খাবে আমার শাঁস
অঙ্কুরোদয়ে আবার 
         হবোই বিস্তার 


তথাগত 

আকাশের নক্ষত্র স্নান শেষে তুমি 
বোধিবৃক্ষ হয়ে যাও চাইনি কখনো ।

হেঁটে এলাম হাজার হাজার মাইল
পথের দুধারে পশরা সাজিয়ে 
কিছু বোধির মুক্ত বাকি সব ধাঁধা 
কখনো ধূমকেতুর কক্ষপথ কখনো 
আকাশের টিপে রাসপূর্ণিমা, দোল।

সৌরপথ থেকে নীল মুছে গেলে
জলকণা ধুয়ে দেয় কষ্ট শ্লোক 
পথশ্রমে ক্লান্তি মুছে দিতে আমি 
ফিরে আসি বোধিবৃক্ষের মূলে 
সেই মনুষ্য-রূপ অবতারের সন্ধানে ।



অশেষ যাত্রা 

যত দাহ দহন দিয়ে গেল কোকিল সুরের গাছ
কেমন করে ভুলি গুচ্ছ গুচ্ছ তারা খসা দিন ,
শীতলপাটিতে গুছিয়ে রাখা 
এলজোলামের প্রদাহ আগুন করেছে 
নিঝুম নষ্টচন্দ্রের হরিতালী , 
সেনা ছাউনির অপরিচিত বরফ ডানায় 
কাঁপন ধরিয়ে রক্তেচাপের দোহাই ।
ওহ্ দরদী তবু শিশমহল শনাক্ত করতে চায় 
স্নানঘর কিংবা অচিনপুরের হকিকত্ 
চাঁদ রেখেছি তাই বুকের খাজুরাহো জুড়ে 
সূর্যের বিশ্লেষণ মনের স্বস্তিতে 
এগিয়ে যাচ্ছি শোক শমনের বিষাদ ভেঙ্গে - - -

          
ভয় হয় না পুড়ে যেতে 

নিজেকে আগুন করবো বলে
দেখতে থাকি দোতারায় ঢেউ সাজিয়ে 
সৃর্যের কুসুম রঙে কিভাবে মিশে গেল 
বিদুর বৈরাগী   ।
বাবলা গাছে বসে সত্যি বাঘমামা।
রাস্তা ঘাটে দেদার চলাচল করে 
জন্তু জানোয়ার 
এমনকি কলসিতে জীভ চালিয়ে 
চুকচুক জল পান করলে সরীসৃপ ।
মেঘ টুকরো হলো গেরিলা পাহাড়ের ধাক্কায় 
প্রবল বর্ষণে আমি পিছলে যেতে থাকলাম 
রূপনারায়ণ পেরিয়ে পদ্মা পার হয়ে 
পড়লাম টেমসের চাঁদ বাঁধানি জলে
গায়ের কালি ধুয়ে দুধসাদা হলো বদলে গেল আহার বিহার - - -
কিন্তু দুই ভ্রুর মাঝে ব্রহ্ম নড়ে উঠলে 
ভীষণ ভয় করে আমার 
শেকড় খুঁজে না পেয়ে মাকে ডাকি ।
বিদুর বৈরাগীর একতারাতে আঙুলের 
ক্রমাগত ঘর্ষণে ফুলকি উড়ে
আগুনের আমি পুড়তে থাকি ।

পুড়ে যাওয়ার পর যেটুকু 
হাজার চেষ্টাতে ও এখন কেউ 
আমায় আর পারে না পোড়াতে।

জ্বলদর্চি পেজ- এ লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments