গুচ্ছ কবিতা
মানবেন্দ্র পাত্র
শরীর
মন ভেসে যায় আষাঢ় মাসে ডুলুং নদীর জলের ধারায়
আমার তোমার হৃদয় ভাঙে জলের মতো শব্দ কুহক
যাক ভেসে যাক যে যার মতো গায়ের গতর এবং দোহার
রাধা ও তার অশোক ফুলে বসত জুড়ে সাজিয়ে তুমি
রূপ গোঁসাইয়ের লক্ষ্মী মেয়ে হতেও পারো টপ্পা বেহাগ
এখন তুমি নীল নীলিমায় গাঁথছ বসে যে ফুল মালা
শ্লোকের কথায় সূর্য শিশির ভাঙতে গিয়ে গড়লে শরীর
আমি তোমার পরম আলো? তোমার মুখের আদল
ছুঁয়ে
ডালিম গাছে লতিয়ে উঠি দানায় দানায় যে অভিসার
দাও দিয়ে দাও আতপ-কিরণ তরল তরল আল্পনা সুখ
বসত করো সাদায় সাদায় গ্রহান্তরের অভিজ্ঞ্যানে…
ভুল করেছি বেশ করেছি,আদিম লিরিক চাইতে গিয়ে
প্রেমিক তুমি টিপ পরেছ কপাল জুড়ে লালের বাহার
পলাশ ফুটুক এই প্রহরে ভীষন ভীষন রক্তপলাশ।
রূপের অধিক কৃষ্ণ তুমি আমি কি তোমার? কালো গোঁসাই!
ভাব ভেসে যায় আষাঢ় গাঙে সবুজ হৃদয় দুকূল নদী…
মন মাধুরি মিশিয়ে দিলেই ফুটলো যখন রেইন লিলি
এখন তুমি সোনার চুলের মোমের পুতুল হতেই পারো।
কলেজ জানে এ রূপ বাহার, কলজে জুড়ে কৃষ্ণচূড়া
হৃদয় খোঁড়ো,হৃদয় খোঁজো -- প্লাবন ডাকুক তোমার নদী
ঐ জলেতে আয়না পাতি শরীর ভাসাই,শরীর ভাঙি
ভাসাও ভাসাও পদ্মপাতায় চিৎ সাঁতার ও ডুব সাঁতারে
পাপের অধিক বইব না আর, রূপ ধুয়ে দাও অথৈ জোয়ার...
পিপাসা
অন্তর্ভুক্ত পিপাসা থেকে জারুল গাছের মোহো
পেয়ে বসে,
যে এখন মোহনচূড়ার মতো মাথা বাঁধবে বলে ধূলো পায়ে হাঁটে, নিশ্চিন্তে উড়ে যায়
আত্মীয় হয়ে যায়
তোমার মতোই।
তাদের পালকে হলুদ চাঁদের মায়া
প্রতিবার স্নান সেরে নতুন হলে
রূপকল্প ধুয়ে ধুয়ে একদিন তার
ও
আমার শিরার
ব্যাথা
আচমকা সেরে যাবে ভেবে
আমিও তার সাথে মেলাই আঙুল!
জারুলের আত্মীয়-স্বজন যারা আছে
তাদের শিরায় মেঘ; শিরায় আকাশ
অতল; তোমার মতো নির্বাক
ফুলের মতো ফটে ওঠে
সবাই জানে ব্যথার মলম!
প্রদাহেও প্রতিদিন মরমের ঋতস্য আমোঘ
কুড়য়ে কুড়িয়ে রাখে
জড়ো করে শস্য ভান্ডার…
হাতের রেখার পাশে বসে দেখো
ম্লান হয়ে গেছে অনুযোগ
তুমিও কুড়িয়েছ ধানশীষ
অন্নপূর্ণা তুমি ----
বসে আছো আবহ পিপাসা
যদি
একটি শেকড় যদি ছুঁয়ে দেখতাম
একটি রোগের চোটে আরও কিছু ছবি এঁকে বুলোতাম রং
তোমার শাড়ীর আঁচল জুড়ে
গাছের গোড়ার কথা
মাটির আবহমানতা ও নম্র শেকল যদি
মনে মনে একবার
স্নায়ু দিয়ে তৈরি করতাম!
ম্যাজিক আসবাব, নিমিত্ত গোলাপি সিস্টোল
যারা উড়ে যাবে, বয়ে যাবে অশেষ দিশায়
অথচ কোকিলডাক
প্রতিবার ঢুকে যাবে অনুপম ভাষার প্রতি
মায়ার ম্যাজিকে;তবুও ফেরাতে পারবো না চুম্বন।
যদিও একটা শান্ত ট্রেন
এক'পা এক'পা করে হাঁটে
তাকেও যেতে হবে ঠিকানায়
অনন্ত সময় জুড়ে এই যে যাওয়ার রীতি
অনুযায়ী- রোগের লক্ষ্মণ
একদিন চিকিৎসাহীন তাকেও দেখা যাবে উৎসর্গীকৃত,
খুঁড়েছে বিভাব ----সারারাত।
সে এখন রতিদেবীর সাথে প্রতিরাত চাঁদ খেয়ে পিপাসা ভুলেছে৷
2 Comments
ধন্যবাদ জানাই, কৃতজ্ঞতা জানাই।
ReplyDeleteআহা, কী রাধাময়তা খেলে গেলো লেখা পড়ে! অনবদ্য।
ReplyDelete