জীবনের কোলাজ
পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়
রাস্তা দিয়ে চলেন হেঁটে
পাড়ার কাজের মাসি।
এ জায়গাটা নিমতা, এবং
তিনি বনগাঁ-বাসী।
কাজের বাড়ি, অনেকগুলো
অনেকদিনের থেকে।
ঠাণ্ডা মাথা, কাজটা ভালো
ঘর'গুলো তাই টেকে।
বয়স, ধরো, ষাটের কোঠায়
দেখতে বেশি লাগে।
এমন মোটেই ছিল না তার
কয়েক বছর আগেও।
যাকগে! এসব কথার কথা
আসল কথা বলি।
মাসির লড়াই, দুঃখ ও সুখ
বাঁচার অলিগলি।
মাটির বাড়ি, বাড়ির ভিতর
অনেকগুলো ঘর।
ঘরের ভিতর ছেলে মেয়ের
বাসা পরস্পর।
দুটো ছেলে, মাতাল, সাথে
কাজের বেলায় ঢেঁকি।
বিধবা এক, আরেক মেয়ে
মায়ের প্রতি মেকি।
ঘরে বসে সকলে খায়
মায়ের টাকা আয়ে।
যদিও সব উপায় করে
বিভিন্ন উপায়ে।
মায়েরও এক মরদ ছিল।
মরদ তো সে বটেই।
সকল রকম পোড়া কপাল
একের কেন ঘটে?
তাড়ি খেত, পেটাতো বউ
বেহেড নেশার ঘোরে।
এতেও মাসি সুখেই ছিল,
শীতের সে এক ভোরে-
হঠাৎ করে হার্টের ব্যামোয়
মাতাল নিলো ছুটি।
মাসি তখন থেকেই একা
আগে ছিলেন দুটি।
কাঁধে জোয়াল দায়িত্বে তার
পিঠের ভাষা কুঁজো।
আরও অনেক কিছুই ব্যথা
সময় পেলে খুঁজো।
যারা নিজের সকল ছেড়ে
পরের কথা ভাবে।
তাদের বাঁচায় এমন অনেক
খবর পাওয়া যাবে।
খবর নিয়ে সে'সব কিছু
চোখের জলে ধুয়ে-
ভোলার পরে , পরিশ্রমে
থাকে সবাই শুয়ে।
সে সব মানুষ কাজের মাসির
জীবনপথের কাঁটা।
কবি মরে বৃথাই লিখে
শোকের কবিতাটা।
মানুষ, তারা তো জ্ঞানপাপী
তবুও জাগে আশা।
দু এক জনে বোধহয় বোঝে
আসল ভালবাসা।
সে আশাতেই জীবন কাটান
বাড়ির মাসি, কাজে।
বয়স? হবে ষাটের কোঠায়
এখন আশি'র সাজে।
সমাজ বদল, জীবন বদল
স্লোগান তোলেন নেতা।
হাজার রকম পতাকা আর
হাজার রকম কেতা।
অধিকারের হিসেব টুকু
জানা বোঝার ভানে।
সবাই ছোটেন, পাগল যেন
কাঁচা টাকার টানে।
টাকায় নাকি সকলই হয়
টাকা'ই বলে কথা।
ও'ধার কথায় কথায় মাতে
এ'ধার নীরবতা।
কবিতা কি সকল বোঝে
সকল করে থিতু।
তাদের হাতের কলমটা যে
ভয়ের থেকেও ভীতু।
যা থাকে তা তেমনই তাই
বদলটা হয় না তো।
সবাই জানে এসব, শোনো
দেওয়ালে কান পাতো।।
0 Comments