গুচ্ছ কবিতা
অসীম মন্ডল
পলাশ
আবার এসেছে পলাশ ডালে ডালে
ক্যালেন্ডারে ঘুরে এলো প্রান্তরে
থালা থালা রাঙা আলোর দলে
শরীর ফেটেছে বহু নদী
রক্ত পলাশ চুঁইয়ে নামে
রাঙামাটির দেশে
আজ বসন্ত
পলাশ এসেছে সাথে
শীতের বন্ধুরা মুখ ঢাকে
মুখরিত জনতার পায়ে পায়ে
পার্কের ঘন পাতাময় গাছের গান
সন্ধ্যে নামার আগে কলতান কম্বলি
ফসিল
কোনো এক ভোরে ঘুম ভেঙে উঠে দেখি
আমি প্রস্তরীভুত
হাজার জিবাস্মদের মাঝে
সকাল বিকেল দুপুর
ভোর ও সন্ধের কাছাকাছি
খুনসুটি চলে খেলা চলে লুকোচুরি
শব্দহীন সময়ের নাভির ভেতর
শাদা শাদা হলুদ পাতারা খসে পড়ে দিকে দিকে
দলেরাও একে একে
কন্দর্পের ধ্বজচিহ্ন নিয়ে বুকে
গভীর ধ্বনিময় দেহের ভেতর
কোনো এক পৌষের শেষ দিনে
মকরের পিঠে সাগরের জলে
অজস্র মসৃণ সৈকত
জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇
মেট্রো শহর
হয়তো
নয়তো কোনো গত জন্মের কাহিনি
মেট্রোর দুয়ার আর গেরস্থালি হানাহানি
রাস্তার পকেেটজুড়ে শুধু গয়নাবাক্স
কানাকানি করে
লকারের চাবি হারিয়ে ফেলেছি মাঝরাতে
খেসারির ক্ষেতে
এখন এখানে রাতদিন খালি
বকম বকম
বোয়াল পেটির মতো মতো চকচকে জিবন
শীততাপনিয়ন্ত্রিত
বিকল বিকেল বোবা গোঙানির মত
কণ্ঠ চেপে ধরে
পোড়া তেলের গন্ধ ভাসে
গাঁধি পোকার মতো
দোকানের ঝাঁপ ফেলার অনেক পরে
ফাঁকা ফাঁকা ঝাঁঝির ফোলা পেটের ভেতর
শব্দ শূণ্য হয় সময়ও
দৃশ্যপট খসে পড়ে সব
সন্ধ্যেয়
গৌড়েশ্বরির বুকে
পাতলা চাদরের মতো
মৌনি উষ্ণতায়
ভাঙনের গান
অলস রোদের চিঠি ছুঁয়ে যাক চিবুক তোমার
অসংলগ্ন বাঁশি বাজে দূরে আহত নদীর বুকে
নূপুরের ধ্বনির মতো ঝর্না নামে
পাহাড়িয়া পাথুরে উপত্যকায়
ভাঙনের গান উঠে পথের বাঁকে
চরাচর ছেয়ে থাকে একলা চাদর
অভাবি সংসারে দুমুঠো অন্ন বাড়ন্ত
সময়ের দাঁড়ি আর একলা নোঙর
সূর্য উঠেছে মাঝরাতে খোলা ফাটা ডিমের মতো
চেনা চেনা কষ্টগুলো হাঁটে মাথায় আষাঢ়ের বর্ষাতি
চলো বেড়িয়ে আসি খেন্তির মাঠ ভরাট জোয়ার
কাগজের নৌকায় বাঁধা শৈশবের ঘাট
পুটুলিতে গচ্ছিত ধন ছড়িয়ে পড়েছে ধুলায়
রাঙা আলোয় সারি গান চুঁইয়ে নামে
শীতার্ত সন্ধ্যায় খেজুরি নেশায়
সিউলির কোমরে কানায় কানায়
জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে 👇
0 Comments