জ্বলদর্চি

শিশির পাল ও সঞ্জীব ভট্টাচার্য-র অণুগল্প

শিশির পাল ও সঞ্জীব ভট্টাচার্য-র অণুগল্প 

ও টি পি

শিশির পাল

মাস মাইনের টাকা তুলছিলেন মাখনবাবু। টাকা বেরোনোর আওয়াজ শেষ হওয়ার আগেই কারেন্ট অফ। এ টি এমের স্ক্রিন কালো হয়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে মেসেজ এল, ফিফটিন থাউজেন্ড ডেবিটেড।

গুগল সার্চ করে ব্যাংকের টোল ফ্রি নম্বরে কল করতেই মহিলা বললেন, "চিন্তা করবেন না। আপনার টাকা এখনই ফেরত হয়ে যাবে। আমি একটা লিঙ্ক দিচ্ছি। এনিডেস্ক। সেখানে ক্লিক করুন। আর আপনাকে একটা ওটিপি পাঠাচ্ছি সেটা বলুন।"

মাখনবাবু দেখলেন, ব্যাপারটা তাহলে বেশ সহজ। ওটিপি বলাটাও তো সোজা!

টাকার চিন্তায় মাথা কাজ করছিল না মাখনবাবুর। ওটিপি শেয়ার করেই দিলেন। 

এখন মাঝে মাঝেই , একবার ব্যাংক আর একবার থানায় ছুটছেন মাখনবাবু।

🍂

অচেনা
                   
সঞ্জীব ভট্টাচার্য 

রঞ্জন সেন। বাংলার অধ্যাপক। বয়স পঞ্চান্ন ছুঁই ছুঁই। বন্ধুদের কথায় যৌবনের দূত।অভিধা এখন শ্লেষাত্মক। ডাক্তারের নির্দেশমত হৃদযন্ত্রের পরীক্ষা।বসে আছেন তো বসেই আছেন। তাও বিরক্তি বোধ হচ্ছে না।চারপাশে সব সুন্দরী তরুণী। মাঝে মাঝে আড় চোখে তাকাচ্ছে। তিনি তাদের অনিবার্য মুগ্ধতা টের পাচ্ছেন ,যেরকমটি পেয়ে থাকেন। আর এটাই তাঁর বাঁচার রসদ।অবিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও কখনোই তিনি একা বোধ করেন না।বরং নির্ভেজাল আনন্দ নিয়ে নিজেকে সতেজ করে রাখেন। 

         'স্যার একটু দেরী হয়ে যাচ্ছে,কিছু মনে করবেন না প্লিজ। '
'মনে করবো কেন?আপনি ,আপনারা সবাই আছেন। হার্ট এমনিতেই ভালো হয়ে যাচ্ছে।'
মেয়েটির ওষ্ঠের হাসি যেন সারা মুখে ছড়িয়ে পড়ছে।নিজেকে আবারো নতুন করে আবিষ্কার করলেন রঞ্জন। 

একসময় তাঁর ডাক এলো ।তিনি একটা ঘরে গিয়ে ঢুকলেন। ছোট্ট খাটের মত শোয়ার জায়গা।পাশে মেশিন নিয়ে এক ছিপছিপে রমণী।তাঁকে খাটটাতে শুতে বলল।

  'না না ওভাবে না বাবা।পেছন ফিরে একটু কাত হয়ে যান।'
রঞ্জন প্রথমে মেয়েটিকে ভালো করে দেখতে চাইলেন। তারপরে ভাবলেন দরকার নেই। ভেজা চোখ নিয়ে ইচ্ছে করেই ভুলভাল শুয়ে পড়লেন তিনি।

Post a Comment

0 Comments