দূরদেশের লোকগল্প— ২৫০
তুরস্ক (ইউরোপ)
জলের পরী ঘরে এলো
চিন্ময় দাশ
তুরস্ক দেশটা বলতে গেলে সমুদ্র দিয়ে ঘেরা। এর উত্তরে কৃষ্ণসাগর। পশ্চিমে এজিয়ান সাগর, আর দক্ষিণে ভূমধ্য সাগর। পূব ছাড়া যেদিকেই দু’চোখ যায়, শুধু জল আর জল। আর কিছুই চোখে পড়ে না।
দেশটাকে তিনদিক থেকে জল ঘিরে রাখায়, বেশ কিছু জেলের বাস এই দেশে। তারা মাছ ধরেই জীবন যাপন করে।
একবার এক জেলের অসুখ করেছে। ভারি জটিল অসুখ। মানুষটা নিজেও বুঝে গেছে, সেরে উঠবার আশা নাই আর। লোকটা তার বউকে ডেকে বলল—কিছু পয়সাকড়ি রইল ঘরে। তাই দিয়ে দিন চালাবি। তবে,আমাদের ছেলেটা যেন কোনদিন না জানতে পারে, মাছ ধরে পেট চালাতে হোত তার বাবাকে।
বউটা কিছু বুঝে উঠতে পারল না। চুপ করে আছে। লোকটা পীড়াপীড়ি করতে লাগল—আমাকে কথা দে তুই, কোনদিন একথা জানাবি না।
কী আর করে? বউটা মাথা নেড়ে দিল। সেদিনই মারা গেল লোকটা।
দিন যায়। দেখতে দেখতে ছেলেটা বড় হয়ে উঠছে। একদিন তার মাও মারা গেল। ছোট্ট কুঁড়েটুকু আর অভাব ছাড়া কিছুই নাই ছেলেটার। ভাবল, ঘরে থেকে আর কী হবে? তারচেয়ে বেরিয়ে পড়ি। কোথাও না কোথাও কিছু একটা হয়ত জুটে যাবে। বেরোবার আগে, ঘরের ভিতরটা একবার দেখে যাই, কিছু আছেটাছে কি না।
একটা জাল বেরোল পুঁটলি থেকে। ছেলেটা ভাবল, তাহলে আমার বাবা জেলে ছিল! রইল পড়ে ঘর ছেড়ে যাওয়া। জাল কাঁধে ফেলে, সাগরমুখো হয়ে বেরিয়ে পড়ল ছেলেটা।
প্রথম দিনেই ফল পেয়ে গেল। দু’-দুটো মাছ উঠল জালে। একটা মাছ বাজারে বেচে, রুটি আর জ্বালানি কিনে আনল। অন্য মাছটা রেঁধে রাতের খাওয়া সারা হয়ে গেল ছেলের। এখন বেশ নিশ্চিন্ত। মাছ ধরেই দিব্বি পেট চালিয়ে নেওয়া যাবে।
এভাবেই দিন যায়। একদিন এক ঘটনা। সেদিন এমন সুন্দর একটা মাছ উঠল জালে, চোখ ফেরানো যায় না। না বাজারে বেচা যায় এ মাছকে, না উনুনে চাপানো যায়।
কী করা যায়, কী করা যায়? গভীর একটা গর্ত খুঁড়ে, জল ভরে ছেড়ে দিল মাছটাকে। খালি পেটে ঘুম এল না সারা রাত। ভোর না হতেই জাল ঘাড়ে ফেলে সাগরের দিকে চলল ছেলেটা।
বিকেলে ঘরে ফিরে তো অবাক। ঘরদোর এমন সাফসুতরো করে দিয়ে গেল কে? মন বলল, নিশ্চয় পড়শিরাই কেউ করে দিয়েছে। খোদাতালা দয়া করলে, কখনও কখনও অভাগার কপালেও সুখ উঁকি দেয়!
পরদিন সকালে বেরুবার সময় একবার কূয়োয় জিয়ানো মাছটাকে দেখে গেল। বিকেলে ফিরে আবার অবাক। ঘরদোর ঝাঁটপাট দেওয়া। জামাকাপড় গোছানো। নিজের ঘরখানাকেই চিনতে পারছে না।
ভাবতে ভাবতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ল সে। কফির দোকানে পৌঁছে, এক বন্ধুর সাথে দেখা। তাকে খুলে বলল ব্যাপারটা। ঘরের চাবি কার কাছে থাকে, বাড়িতে আর কে কে থাকে, এরকম সব কথা জানতে চাইল বন্ধু।
ছেলেটা তাকে জানাল, চাবি তার নিজের কাছেই থাকে, আর কূয়োয় একটা মাছ ছাড়া, জ্যান্ত কোন প্রাণী আর কেউ নাই সেখানে। বন্ধু তাকে পরামর্শ দিল—এক কাজ করো তুমি। কাল মাছ ধরতে না গিয়ে, গোপনে একটু নজর রাখো। দ্যাখো, কে করছে এই কাজ।
প্রস্তাবটা বেশ মনে ধরল ছেলেটার। পরর দিন ঘর থেকে বেরিয়ে, একবার জিয়ানো মাছটাকে দেখে নিল এক ঝলক। তারপর সাগরের দিকে না গিয়ে, কুঁড়েটার পিছনে গিয়ে লুকিয়ে রইল।
একটু বাদেই অবাক কাণ্ড। মাছটা এক লাফে উঠে এসেছে কূয়ো থেকে। উঠেই গা-ঝাড়া দিতেই, মাছের খোলস খুলে গেল গা থেকে। তার বদলে দাঁড়িয়ে আছে অপরূপ সুন্দরী এক মেয়ে। একিক ওদিক চেয়ে, টুক করে ঘরে ঢুকে পড়ল মেয়েটি।
ঝট করে একটা বুদ্ধি খেলে গেল ছেলেটার মাথায়। মাছের খোলসটা তুলে নিয়েই পুড়িয়ে ফেলেছে। অমনি ভেতর থেকে বেরিয়ে এসেছে মেয়েটি—হায়, হায়! এ কী করলে তুমি?
--যা করা দরকার ছিল, তাই করেছি।
মেয়েটি হেসে বলল, প্রথম দিনেই আমাকে মেরে ফেলোনি তুমি। তাই আমি এ কথার জবাব দিলাম না।
জলের জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভালোও লাগছে বেশ। মেয়েটি বলল—তুমি আমার খোলস পুড়িয়ে দিয়েছ। আর তো জলে ফিরে যাওয়ার পথ নাই আমার। তোমার এখানেই থাকতে হবে আমাকে।
ছেলের তো আনন্দ ধরে না। সে বলল—ভালোই হোল। দুজনে আমরা বিয়ে করে সুখে থাকব।
এবার পড়শীরা, গাঁয়ের লোকজন দেখল মেয়েটিকে। এত সুন্দরী কোনও মেয়ে তারা দেখেনি কোনও দিন। ভীড় জমতে লাগল জেলেদের পাড়ায়।
এদিকে হয়েছে কী, বাদশার কানে পৌঁছেছে মেয়েটির খবর। তাঁর হুকুম পেয়ে, পেয়াদা এসে তুলে নিয়ে গেল মেয়েকে। অপরূপ সুন্দরী মেয়ে। বাদশা তাকে বিয়ে করবার জন্য অস্থির হয়ে উঠলেন।
ছেলেটি বলল—তা কী করে হয়, জাঁহাপনা। বিয়ে করব বলে, আমি কথা দিয়েছি একে।
--শোন হে, দেশের সেরা জিনিষ, বাদশাহের প্রাপ্য। এর চেয়ে সেরা সুন্দরী এ দেশে নাই। অতএব আমিই বিয়ে করব। তবে, একটা সুযোগ দিচ্ছি তোমাকে। ১০ দিনের মধ্যে মাঝ দরিয়ার বুকে, সোনা আর মুক্তোয় মোড়া একটা প্রাসাদ বানিয়ে দিতে হবে আমাকে। পারো যদি, তুমিই বিয়ে করবে এ মেয়েকে। আর, না পারলে, আমি। মনে রেখো, ১০ দিন।
ছেলে মেয়ে দুজনে ঘরে ফিরে এসেছে দরবার থেকে। ছেলেকে মুষড়ে পড়তে দেখে, মেয়েটি বলল—চিন্তা কোর না। সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে। যা বলছি মন দিয়ে শোন।
মেয়ের কথামতো পরদিন সাগরপাড়ে গিয়ে হাজির হয়েছে ছেলেটি। যেখানে এই জলপরীর মতো মেয়েকে পেয়েছিল, সেখানে এক টুকরো পাথর ছুঁড়ে দিয়েছে জলে। এক ফকির উঠে এলো জল ফুঁড়ে— হুকুম করুন, হুজুর। কী করতে হবে।
ছেলেটি বলল—একটা কুর্শি এনে দাও আমাকে।
চোখের পলক পড়ল না। কুর্শি সামনে হাজির। কুর্শিটা ধরেই সমুদ্রে ছুঁড়ে দিল ছেলেটা। এবার তার কাজ শেষ। পরী বলে দিয়েছে—সাগরের দিকে ফিরে চাইবে না কিন্তু। সোজা ঘরে ফিরে আসবে।
ঘরে ফিরে এসে, কাজের ফিরিস্তি দিয়ে ছেলে বলল—যা বলেছিলে, ঠিকঠাক সেরে এসেছি। মেয়েটির মুখে হাসি—কাল সকালে গিয়ে দেখে নিও, প্রাসাদ তৈরি হয়ে গিয়েছে। আমিও যাব তোমার সাথে।
রাতে চোখে ঘুম এল না ছেলের। সকাল হলে দুজনে সাগরের পাড়ে এসে দেখল, সেখানে মেলা বসে গেছে গ্রামের লোকেদের। বসবেই তো, রাতারাতি সাগরের বুকে আস্ত একখানা প্রাসাদ গজিয়ে উঠেছে যে!
ছেলে গিয়ে বাদশাহকে সংবাদ জানাল। তিনি তার আগেই জেনে গিয়েছেন। বাদশাহ বললেন—সাগরের মাঝখানে প্রাসাদ। যাবো কী করে সেখানে? স্ফটিকের তৈরি একটা রাস্তা বানিয়ে দাও ১০ দিনের মধ্যে। পারো যদি, মেয়েটি তোমার।
মুখ শুকনো করে ফিরেছে ছেলে। সব শুনে মেয়েটি বলল—চিন্তা কোর না। সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে। কাল আবার সাগরপাড়ে যেও। ফকির সাহেবকে বলো, লম্বা একখানা তাকিয়া চাই। সেটা প্রাসাদের সামনে বিছিয়ে দিও। কেল্লা ফতে।
যেমনটি বলে দিয়েছে মেয়ে, সেইমতো করে গেল ছেলেটা। ফকির সাহেবও চাওয়ামাত্র তাকিয়া হাজির করে দিলেন। সেটা প্রাসাদের সামনে পেতে দিতেই, একটা সাঁকো তৈরি হয়ে গেল চোখের নিমেষে। আর, কী জেল্লা সেই সাঁকোর। স্ফটিকের রূপে চোখ ঝলসে যাচ্ছে।
আনন্দে নাচতে নাচতে বাদশার দরবারে গিয়ে ছেলেটি জানিয়ে দিল, কাজ হয়ে গিয়েছে। বাদশাহ ভুরু কুঁচকালেন। তবে, মনের ভাব প্রকাশ করলেন না। বললেন—এবার আর একটা কাজ। একটা ভোজসভার আয়োজন করো। রাজ্যের সবাইকে খাওয়াতে হবে। আর দেখো, খাবার-দাবার যেন কম না পড়ে। বরং যেন বাড়তি কিছু থেকে যায়। তবে, হ্যাঁ। এটাই তোমার শেষ পরীক্ষা। উৎরে গেল, তুমিই বিয়ে করবে সুন্দরীকে।
বিয়ের ভাবনা উড়ে গেল কোথায়। পুরো আকাশটাই যেন এসে ভেঙে পড়ল মাথার ওপর। নিজেরই রুটি জোটে না যার, সে খাওয়াবে রাজ্য শুদ্ধু লোককে!
ছেলের মুখে মেঘ জমেছে দেখে, মেয়ে বলল—আজ আবার কী বলেছেন বাদশা?
ছেলের মুখে সব শুনে, মেয়ে বলল—তা অমন মুখ গোমড়া করে আছো কেন? সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে। কিচ্ছু ভাবতে হবে না তোমাকে।
মেয়ে বলল—কাল আবার যাও। ফকির সাহেবকে বলো, আমাকে একটা কফি বানাবার যন্তর দিন। জিনিষটা হাতে পেয়ে, সোজা ঘরমুখো ফিরে আসবে। ভুলেও পেছন ফিরে তাকাবে না। ভুলে যেও না কিন্তু।
পরদিন সাগরপাড়ে গিয়ে, চাহিদা মতো জিনিষটা পেয়ে গেল ছেলেটা।
নেমন্তন্নের দিন লোকজনের ভিড়ে ভিড়াক্কার। সবাই পেট পুরে খেয়েছে চেটেপুটে। সবাই ঘরে ফিরে গেল সুখ্যাতি করতে করতে। এমন ভোজ আগে কখনো খায়নি কেউ এই রাজ্যে।
দেখা গেল, বাদশা যেমনটি চেয়েছিলেন, বেশ কিছু খাবার বাড়তি রয়ে গিয়েছে। ছেলের তো আনন্দ ধরে না। লাফাতে লাফাতে দরবারে গিয়ে খবর জানাল বাদশাকে।
বাদশ হাসিমুখে জানালেন—সব শুনেছি হে। সত্যিই দারুণ ক্ষমতা তোমার। তোমার পরীক্ষাও শেষ। তবে শেষবেলায় ছোট্ট একটা কাজ করে দেখাও। তাহলেই সুন্দরী মেয়ের সাথে আমিই তোমার বিয়ের সব আয়োজন করে দেব।
ছেলেটা মুখ কাঁচুমাচু করে বলল—বলুন, কী কাজ।
বাদশা বললেন-- একটা ডিম থেকে খচ্চর বের করে দিতে হবে। আমার অনেক দিনের সখ একটা খচ্চর পুষি।
ছেলে ঘরে ফিরে, বাদশার নতুন চাহিদার কথা জানাল। শুনে মেয়েটি বলল—দেরী নয়। তুমি এখনই ফকির সাহেবের কাছে যাও। সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
ছেলেটা সাগরপারে গিয়ে হাজির। ফকির সাহেব শুনে তিনটা ডিম দিলেন তাকে। বললেন, সাবধানে নিয়ে যেও। পড়ে না যায়। আর শোন, শুধু খচ্চর নয়। যা চাইবে, তাই বের হবে ডিম থেকে। হাতি, ঘোড়া, হরিণ, এমনকি চাইলে মানুষের বাচ্চাও।
অতি সাবধান হলে, যা হয় আর কী। খানিক দূর গিয়েছে, একটা ডিম পড়ে গেল ছেলেটার হাত থেকে। এমনি বড়সড় একটা খচ্চরবাচ্চা বেরিয়ে এসেছে। তিড়িং-বিড়িং দু-চার পাক লাফাল বাচ্চাটা। শেষে একলাফে ঝুপ করে সাগরে গিয়ে পড়ল। তার আর টিকির দেখা নাই।
পরদিন দুটো ডিম নিয়ে দরবারে হাজির হোল ছেলে। ভরা দরবার। বাদশা বললেন তাহলে ডিম থেকে খচ্চর বের করো। সবাই দেখুক।
দুটো ডিম ছিল হাতে। একটা তুলে মেঝেতে ছুঁড়ে মারল ছেলে। অমনি সবাইকে অবাক করে, একটা খচ্চরছানা বেরিয়ে পড়েছে। তারপরেই হইহই কাণ্ড। বের হয়েই মস্ত এক লাফ। সোজা বাদশার কোলে গিয়ে পড়েছে বাচ্চা।
বাদশা ভড়কে গিয়ে আঁৎকে উঠেছেন। কিছু বুঝে উঠবার আগেই, আর এক লাফে বাচ্চাটা নীচে। দরবারে এদিক ওদিক দু’-চার বার লাফিয়ে, বেরিয়ে গেল ফটক দিয়ে। ধর ধর চিৎকার, ছোটাছুটিই সার। কোত্থাও খোঁজ পাওয়া গেল না তার।
ছেলেটা বেশ মজা পেয়েছে এতে। বলল—আরও একটা ডিম আছে হাতে। বের করব , হুজুর?
বাদশা বললেন—বের করো। তবে খচ্চর একেবারে নয়। বরং পারো যদি, মানুষের বাচ্চা দেখাও আমাদের।
হাতের শেষ ডিমটা ছুঁড়ে দিল ছেলে। সত্যি সত্যিই ফুটফুটে একটা ছেলে বেরিয়ে পড়েছে। বেরিয়েই লাফ। সোজা বাদশার কোলে। বাদশা এবার ঘাবড়ে গেলেন না। দু’হাতে যত্ন করে ধরে নিয়েছেন। ছোট্ট একটি ফুটফুটে বাচ্চা, কার না ভালো লাগে?
কিন্তু সেই বাচ্চার হাতে যে নাকানি-চোবানি খেতে হবে, বাদশা কি জানতেন? বাচ্চাটাকে আদর করবেন বলে, মুখ নামিয়েছেন বাদশা। অমনি চটাস করে এক চড় বাচ্চার গালে। এইটুকু বাচ্চার হাতে এত জোর থাকে না কি? চড়ের শব্দে দরবারশুদ্ধ সবাই চমকে গিয়েছে।
সবাই আরও চমকে উঠল, পরের ঘটনায়। বাচ্চাটা কথা বলে উঠল বড় মানুষের মতো— ১০ দিনে মাঝ দরিয়ায় একটা প্রাসাদ বানানো যায়? তাও আবার হীরে-মাণিক দিয়ে?
বাদশা কিছু বলবার আগে, আবার চটাস শব্দ। এবার আর এক গালে— সেই একই কথা। ১০ দিনে একটা স্ফটিকের সাঁকো বানানো যায় কখনো?
এখানেই শেষ হোল না। তৃতীয় চড়ও পড়ল। সেই সাথে প্রশ্ন—যার নিজেরই রুটি জোটে না, সে দেশশুদ্ধ লোককে পেট ভরে ভুরিভোজ খাওয়াবে? কেমন বাদশা তুমি?
বলা শেষ না হতেই আবার চটাস। এবার প্রশ্ন—খচ্চর কি হাঁস না মুরগি, যে ডিম ভাঙলে বেরিয়ে আসবে? আক্কেল নেই তোমার?
জবাব দেবেন কী, বাদশা ককিয়ে উঠেছেন—ধরো তুমি একে। আমাকে বাঁচাও।
দারুণ মজা পেয়েছে ছেলেটা। সে বলল— আমি কেন ধরতে যাব? আপনিই তো এর মালিক।
--কোনও মালিকানা নাই আমার। আজ থেকে তুমিই এর মালিক। আমাকে রেহাই দাও। তার বদলে, তোমার বিয়ের সব আয়োজন আমি করে দেব। প্রাসাদের সামনের মাঠে, কালই মেরাপ বেঁধে তোমার বিয়ে হবে। দুজনে সময় মতো চলে এসো।
বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে ঘরে ফিরে এল ছেলে। দরবারের কাণ্ড শুনে, মেয়ে তো হেসে বাঁচে না। আদর করে বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নিল।
বেশ জাঁকজমক করে জলপরীর সাথে বিয়ে হয়েছিল ছেলের। রাজ্যশুদ্ধ লোক ভরপেট ভোজ খেয়েছিল। অবশ্য বাদশা তাঁর কথা রেখেছিলেন। নিজেই তার খরচ দিয়েছিলেন।
বউ আর বাচ্চা নিয়ে সুখের দিন শুরু হয়েছিল ছেলেটার।
থাকে কোথায়? কেন, সেই যে সাগরের বুকে গড়া প্রাসাদ। সেখানেই ঘর পেতেছিল দুজনে।
বাড়িতে বসেই সংগ্রহ করতে পারেন 👇
0 Comments