সুকমল ঘোষ-এর কবিতা
আমাদের মায়েরা
একটা দুরন্ত বন্যার আগে চোখের পাতারা
গুমরে কেঁদে ওঠে। শিশুটি বড় হলে শুকনো
ঝুলে পড়া স্তনের দিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে।
দূরদর্শনে যুদ্ধের মিছিলে ইতস্তত পড়ে থাকা
রক্তাক্ত মুখের চোয়াল, ছেঁড়া পোশাকের টুকরো
উপুড় বারবি ডল, দেশের পতাকা মুঠোয় ধরে
থাকা একটা হাত; বুকের ভেতর গোলাপি ফুসফুসে
ক্রমাগত হাপর টানে একটা মানুষ, আরো অনেক
অনেক মানুষ পরনে তার লাল টুকটুকে সিঁদুর
কিংবা সাদা সিঁথি ভরা মাথার আধপাকা উসকো
খুসকো চুল। থালায় গরম ভাত নিয়ে বসে থাকে
স্থির চোখে খোলা দরজায়। কখনও বা চিৎকার
করে ওঠে—
ওরে,আমি যে তোদের মা।।
🍂
তবুও হেঁটে যায়
হেঁটে যায় পথ। ছায়া আলো কায়া রোদবেলা
রাত; যুবতী চাঁদ প্রজন্ম মায়া;
হেঁটে যায় পথ।
রঙ, রঙের মায়াবি খেলা; উপোসি মায়ের সকাল
সাদা, মেঘমালা; হেঁটে যায় পথ। দোকানের ঝাঁপ,
তপ্ত উনুনে টগবগ টগবগ উথলে ওঠে হাভাত
মরচে পড়া ধানশিষ গান, হাওয়ায় ভেসে যায়
কাপাসের তুলো, স্বপ্ন খুঁটে খুঁটে খায়, পোয়াতি
নদীর পেট; অস্পষ্ট শৈশব। হেঁটে যায়, হাঁটে পথ।
দুরন্ত ঘোড়া, প্রসব যন্ত্রণায় কাঁপে, বেঁকে যায়,
থরথর থরথর, রক্তকণারা ভাঙে, আবার ভাঙে
বিদ্রোহে অতঃপর ঝড় আসে। মাতাল বোশেখের
বুনো ঝড়; তবুও হেঁটে যায় পথ।
0 Comments