জ্বলদর্চি

সুদর্শন নন্দী ও সৌমেন রায়-এর অণুগল্প

সুদর্শন  নন্দী ও সৌমেন রায়-এর অণুগল্প 

মাতৃভক্তি
        
 সুদর্শন  নন্দী               

 মা বাবা এসেছেন মেয়ে শিউলির বাড়িতে। মা এলে মেয়ের ঘরের কাজ, রান্নাবান্না, পূজাআচ্চা তিনিই করেন।  শিউলি এক প্রকার ঝাড়া হাত পা নিয়ে ইউ টিউব, ফেসবুক নিয়ে মশগুল থাকে সারাদিন । মাস খানেক পর মা বাবা বাড়ি ফিরে যাবেন। মেয়ে শিউলি কেঁদে ভাসিয়ে দিচ্ছে। বাবা বললেন, দেখ মেয়ে কতো তোমাকে ভালবাসে। তোমাকে ছেড়ে থাকতে হবে বলে কত কষ্ট দেখেছ ?
তা শুনে মা বাবাকে উঠোনে টেনে নিয়ে গেলেন।  বললেন, কাঁদবে না? যেমন বাপ তেমনই তো মেয়ে।  কাল সন্ধেবেলা শুনতে পেলাম শিউলি ফোনে কাকে বলছে— মা কদিন ছিল ঘরে কুটোটি পর্যন্ত নাড়তে হয় নি। কাল মা ঘর চলে যাবে আবার সব আমাকে করতে হবে।  মনে হচ্ছে বুক চাপড়ে কাঁদি…

🍂


মলাট

সৌমেন রায়

ছোট্ট ছেলেটার সোয়েটার ভিজে গেছে চোখের জলে । আলগা হয়ে যাওয়া পাজামাটা একহাতে ধরে মায়ের পিছন থেকে  অবাক চোখে দেখছে তার অতি নিকট জনকে। সবাই কাঁদছে। বাবা ক্রমশ ঢেকে যাচ্ছে ফুলে । সাইকেলে চাপিয়ে যাত্রা দেখতে নিয়ে যাওয়া বাবা, নতুন ক্লাসের বইতে মলাট করে দেওয়া বাবা আর ডাকবে না নাম ধরে ! তবু লোকটার চোখে জল নেই কেন? 
  ‘কিরে কাঁদছিস কেন ?  বাবার তো নতুন মলাট হবে।‘ 
ঝাপসা দু চোখ তুলে ছেলেটা জিজ্ঞাসা করে, ‘তুমি বিশ্বাস করো ?’ 
‘বিশ্বাসেই তো শান্তি রে।‘
চিতায় শোয়ানো বাবার চারিদিকে ঘুরছে লোকটা। ধোঁয়া-গন্ধ -শব্দের আড়ালে চোখ দুটো চিকচিক করে উঠল না ? ভরসা পায় ছেলেটা। সটান ঢুকে পড়ে লোকটার মধ্যে।

Post a Comment

0 Comments