জার্মান লতা
ভাস্করব্রত পতি
গ্রামাঞ্চলে অতি পরিচিত এই লতাটির নাম জার্মান লতা। পশ্চিমবঙ্গে 'ল পাতা' নামেই খ্যাত। সর্বত্র দেখা যায়। বনেবাদাড়ে অন্য বড় গাছকে আশ্রয় করে ঘন ঝোপ তৈরি করে।
লতা পাতা > ল পাতা
অত্যন্ত উপকারী লতা জাতীয় উদ্ভিদ এটি। গবাদিপশুর জন্য জাউলিসেদ্ধ করতে এই গাছটি ব্যবহৃত হয়। জার্মান লতা ছাড়াও কোথাও কোথাও একে বলে রায়ড লতা, ম্যালেরিয়া লতা, পাকিস্তানি লতা, রিফিউজি লতা ইত্যাদি। খুলনার লোকেরা বলে যশোর লতার ঔষধ। আর অসমের লোকজন জাপানি লতা বলে।
ধানজমির পাশে বেড়ে উঠেছে জার্মান লতা
এর বিজ্ঞানসম্মত নাম Mikania micrantha। এটি Asteraceae পরিবারের অন্তর্গত। পৃথিবী জুড়ে এর বিস্তার। এটি উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার মূল বাসিন্দা। বিভিন্ন স্থানে পরিচিত Bitter Vine, Mikania Vine, Climbing Hempweed, American Rope, Chinese Creeper নামে। খুব দ্রুত বৃদ্ধি হওয়ার দরুন একে বলে Mile A Minute লতা। মোটামুটি ২৪ ঘন্টায় ৮০-৯০ মিলিমিটার বৃদ্ধি হয়। এছাড়াও মালয়লামে Vayara, নেপালিতে Lahare Banamaaraa, মালয় উপদ্বীপে Cheroma, Ulam Tikas, ইন্দোনেশিয়ায় Sembang Rambat, ফরাসীতে Liane Americaine, স্প্যানিশে Guaquito বলে।
প্রায় ২০ ফুট (৬ মিটার) পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। অন্য গাছকে জড়িয়ে ধরে বেড়ে ওঠে। ঘন সবুজ হৃদয়াকার পাতাগুলি প্রায় ৪-১৩ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। পাতার সামনের অংশ ছুঁচালো। খুব তেতো। কাটাস্থানে থেঁতো করে লাগালে সঙ্গে সঙ্গে রক্তপড়া বন্ধ হয়ে যায়। এই রেওয়াজ আজও পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়। গুচ্ছাকারে সাদা রঙের ফুল ফোটে। একটি ডালে প্রায় ২০-৪০ হাজার বীজ উৎপন্ন হয় সারা বছরে।
লতার ঝোপ
আসামের কিছু জনজাতি এই গাছের পাতা কীটপতঙ্গ কামড়ের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করে। মালয়েশিয়ায় ভেড়ার খাদ্য এটি। এখানে রাবার চাষের এলাকায় এই গাছের চাষ হয়। কেরালায় গরমকালে যখন ঘাসপাতার অভাব দেখা দেয়, তখন এই গাছের পাতা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া গরুর আমাশয় হলে এই পাতার রস খুব কার্যকরী।
🍂
3 Comments
রাবণ লতার ছবি থাকলে দেবেন অনুগ্রহ করে। চিনতে চাই।
ReplyDeleteপোস্টটা anonymous হয়ে গেছে।তাই নাম দিলাম।
ReplyDeleteঅতি জরুরী তথ্য সমৃদ্ধ লেখাটি
ReplyDelete