আ শ রা ফু ল ম ণ্ড ল
জিন্নাত্আরা
অফুরন্ত তাড়াহুড়ো জড়িয়ে আছি
জড়িয়ে আছি বেনজির বেঁচে থাকা
বেঁচে থাকি রাত্রিদিন যাওয়া আসা
আসবে কবে জিন্নাত্আরা
আধমরা সব ইচ্ছেদৌড় টগবগিয়ে
টগবগিয়ে উড়ানমোহন গান ধরেছি
গান গাইছি নিদাঘ সুরে তোমার আসা
আসবে কবে জিন্নাত্আরা
ঢেঁকিশালে সেই চিনেছি ওঠানামা
ওঠানামা ঘেমো শরীর মানভাঙা পা
পায়ের নাচন হনহনিয়ে দোদুল আসা
আসবে কবে জিন্নাত্আরা
মুগ্ধ কিশোর ডুমুরতলে পথ হারিয়ে
পথ হারিয়ে ডাগর চোখে তোমায় পাওয়া
তোমায় পেয়ে ঘুমের ছুটি কেবল আসা
আসবে কবে জিন্নাত্আরা
রোমন্থন
সাঁতার দেব বলে
সারাদিন রোদ মাখছি
তুমিও প্রিয় পাখিটির মতন
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে
মেপে নিচ্ছ কতটা ভালো নেই কাঁপন
তোমার ঠোঁট
মুখে বুকে মনে
এখনও গোধূলির ঠিক আগে
বারান্দায় বসে
ডানার গন্ধ মাখি
ক্লান্তিমাপা দরদি ঠোঁট
আসবে তুমি ডানার ঘ্রাণ
খাঁচাজীবনে একচিলতে সুখ .….
স্বগতোক্তি
তোমার বুঝি মন ভেঙেছে আমি আছি বৃন্দাবন।
আয় সখি আয় হৃদয় সাধি মথুরাতে মেঘমাতন।।
তোমার বুঝি রাগ হয়েছে আগুন চোখে দিগ্বিদিক।
আয় না মেয়ে মান ভাঙ্গাবো বলছি আমি ঠিক ঠিক ঠিক।।
তোমার বুঝি ভাল্লাগে না খুঁজছো তুমি আগুন দিন।
আয় চলে আয় মেঘমুলুকে নাচবো দুজন তা ধিন ধিন।।
তোমার বুঝি বিরহ রাঙা ডাগর চোখে মেঘনা বান।
আয় না সখি দিব্যি বলছি তুই যে আমার মেহেরজান।।
শূন্য বিষয়ক
ছেলেবেলায় পরীক্ষার খাতায় শূন্য পেলে বিমর্ষ হতাম। মাস্টারমশাই বলতেন গোল্লায় যাবি। ছুটির পর বাড়ি ফিরে মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁদতাম।
এখন শূন্য আমার প্রিয় কিছু। ক্লাসে বাংলা পড়াতে গিয়েও বোর্ডে শূন্য আঁকি। শূন্যে কচিকাঁচা ঘুড়ি ওড়ে বোঁ বোঁ। ঘুড়িদের নিয়ে আমি গোল্লায় যেতে চাই।
ভালো লাগে না হিজিবিজি। শূন্য বেশ পরিচ্ছন্ন। ভেতরেও অনেকটা স্পেস। অবলীলায় সাতগুষ্টি নিয়ে হাত-পা ছড়িয়ে থাকা যায়। ছেলেমেয়েদের খাতায় শূন্য দিই না। এমনকি কারোর শূন্য পাবার যোগ্যতা থাকলেও। শূন্য আমার একার। আজন্মের। মাঝরাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে শূন্য আঁকি...
শব্দেরা ফিরে এসো
সানাই সুরে আর পাতি না কান
মায়ের ঢেঁকিতে ধানভানার শব্দ চাই
বাসন মাজার শব্দ চাই
খড় কাটার শব্দ চাই
গোরুর গাড়ির চাকার শব্দ
শুনব
পাখির কিচিরমিচির শুনব
ঘাট ফেরত মায়ের ভিজে শাড়ির সপসপ...
মা আমার উনুনের ছাই দিয়ে বাসন মাজছে
বাবা গাড়ি গাড়ি ধান সাজাচ্ছে খামারে
ভাই খিদে চোখে নামতা পড়ছে দুলে দুলে
শব্দের ঢেউ ভাসিয়ে দিচ্ছে চিলতে উঠোন....
-------
7 Comments
স্মৃতি যখন প্রেমের ভাষা নিয়ে ফিরে আসে কবিতায়, তখনই লেখা হয় প্রকৃত প্রেমের কবিতা:
ReplyDelete"ঢেঁকিশালে সেই চিনেছি ওঠানামা
ওঠানামা ঘেমো শরীর মানভাঙা পা
পায়ের নাচন হনহনিয়ে দোদুল আসা
আসবে কবে জিন্নাত্আরা "
সুন্দর কবিতা উপহার দেওয়ার জন্য কবিকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অজস্র ধন্যবাদ প্রিয় কবি। আপনার কমেন্টে সমৃদ্ধ হলাম। ভালো থাকবেন।
Deleteস্মৃতির থালায় ভাত মাখি,, ইচ্ছে ডাল দিয়ে,চোখের তারা ঝিলিক মারে,প্রতি হলুদ গ্রাসে.... সময়ের সীমা পেরিয়ে এই যাওয়া আসা মানুষের জীবনের সবচেয়ে কাম্য ফসল।... মন ভরে গেল।।
ReplyDeleteঅনেক ধন্যবাদ মিতাদি। একেবারে ঠিক বলেছেন। খুব ভালো থাকুন।
Deleteশূন্য বিষয়ক- খুব ভাল লেগেছে।
ReplyDeleteঅত্যন্ত সৃজনশীল উদ্যোগ। ভালো লাগছে।
ReplyDeleteপার্থপ্রতিম আচার্য /8617370066
কবিতাগুলি পড়তে পড়তে পুরানো দিনের দৃশ্যাবলী চোখের সামনে ভেসে উঠছে।
ReplyDelete