ত প ন জ্যো তি মা জি
বৃষ্টিবাজার
বৃষ্টিবাজারে তৃণ ও কুসুমের মাখামাখি পছন্দ হলোনা তোমার I
তুমি অভিনব কৌতুকে মুছে দিলে খেয়ালী বিদ্যুৎ I দিনের সূচনা
পর্বে হাওয়া স্বেছাচারী I
পাতায় বৃষ্টির গন্ধ I ওড়ে প্রচারের নামাবলী ফেস বুকে I মায়াময়
চিবুকে জলের বিন্দু , বাজার বসেছে স্কুল মাঠে I বাসি জিলিপির
স্বাদ যেন পুরাতনী গান I
ছাদ ও নীলিমা কাছাকাছি I পাখিটির ডানা ভিজে গেছে I তোমার
মগ্নতা জানে সিঁড়ি I যতটা উন্মাদ ভাবো তার থেকে ঢের বেশি গাঢ়
এই অক্ষর হৃদয় I
আরও কিছুক্ষণ বৃষ্টির সঙ্গী হলো ভিজে যাওয়া নীল ঘুম ফ্রক I কবির
জন্মদিনে গীতাঞ্জলির সতেরো সংখ্যক কবিতা হোক নৈবেদ্য তোমার I
ওষ্ঠ দুটি শ্রাবণের শিলাবতী I
বিন্যাস
সাজিয়ে রেখেছি সমুন্নত অন্তর ও বহির্জগৎ I দেরী হলো আগুন
নেভাতে I জলের সম্পন্নতা প্রশ্নাতীত I প্রেম ও ভালোবাসা কি সমার্থক
নয় ?
তৃতীয় সত্ত্বায় যদি জমে থাকে ক্লেদ , যদি ভাবো সম্পর্কের সমস্ত ব্যালকনি
গুলি তোমার বিচরণ ভূমি , রাষ্ট্রনেতার মতো তোমার প্রবৃত্তি গুলিও অভিসন্ধি
মূলক I
পুরানো বইয়ের ভাঁজে কফি হাউসের বিল I আড্ডার বিবর্তন হলো কত !
সম্পর্ক সংঘাতে তোমার ভূমিকা হোক সন্ধি সম্মত I শুভবোধ প্রকৃত অর্থে
বিনত প্রজ্ঞা I
ঝড় চিরদিন উন্মাদের মতো I বাতাস নিশ্চিন্ত করে অমল বিশ্রাম I কি হলো ,
কি হলোনা , ভেজা দেশলাই কাঠি নিয়ে আগুন জ্বালার খেলা I সব খেলা
পূর্ব নির্ধারিত I
গড়িয়ে যাচ্ছে সময় গোলক I রং বদলের অভিঘাতে যদি অন্ধ হয়ে যায় দৃষ্টি ,
বাক রুদ্ধ হয়ে যায় চিরকালীন বোধ , দাঁড়াও দর্পনের সামনে একা I প্রশ্ন ও
উত্তরের মাঝে কাঁচের দেওয়াল I
স্বরবিভক্তি
গভীর গাঢ় স্বর I খাদের পাশে বেড়াতে আসা মেঘ I যুবতীবেলা চড়াই
উৎরাই I ভ্রমন শেষে হোটেল ঘরে একা I কণ্ঠে ভাঙে শিলাবতীর ঢেউ I
জলের নিচে মাছের খেলাঘর I একটি কথা, বহুরকম স্বর I
শান্ত আকাশ উড়াও ফুৎকারে I বিভক্তিরা গ্রীষ্মরাতের তারা I সংক্রমণে
মৃত্যুমুখী দেশ I কণ্ঠে তোমার মৃত্যুজয়ের স্বর I কোথায় থাকে প্রত্যয়ী
সব দিন ? সূর্যধোয়া জীবনমুখী বোধ , প্রেরণাময় মুক্ত উচ্চারণে I
জ্বালো আলো I চিত্ত জয়ের ভাষা I ঘুমের দেশে স্বপ্ন পরিযায়ী I বাহুল্য সব কাঁচের বুকে জল , যত্ন পেলে মুছে দিতে পারো I তুমি কেবল মগ্ন থাকো স্বরে , অনেক দূরে জলের বুকে চাঁদ , ভাসছে জীবন ভেলার উপর একা I
সময় তুমি অশ্বারোহী হও I সময় তোমায় জিততে হবে একা I স্বরের টানে নদীর
বুকে ঢেউ , মৃত্যু রথের থামবে চাকা জেনো I তোমার কাছে অসীম প্রত্যাশা I তুমি
পারো শব্দে দিতে শান I দুরন্ত এই প্রস্তাবনায় অন্য তোমায় পাওয়া I
বিরলতম
বিরলতম কেউ বলে ভেবো I ভেবো , বসন্তের পাতার মতো ভাবোন্মাদ I
ঝড়ের সতর্ক বার্তা মুছে দিয়ে বড় জানালার পাশে বসো অন্ধকারে একা I
আমি দেখতে চাই বহুদিন পরে আবিষ্কার করা গালের লাজুক টোলটিতে
নক্ষত্রের আলো কতটা প্রেমময় I
টিপ্ টিপ্ বৃষ্টির স্বর মুছে যাচ্ছে পাখার ঘূর্ণনে I জানলার পর্দা সরিয়ে দিতেই
জোনাকি গ্রামগুলি গর্ভগৃহের প্রদীপের মতো জ্বলছে ব্যাথাতুর I নিঃসঙ্গ
পথিকের মতো পান্থশালার খোলা বারান্দায় বসে দেখছি মিথ চুরমার করে সার্চলাইটের ফোকাসে মদ্যপের টলোমলো পা I
অগণিত গ্রহের সমাবেশ নক্ষত্র প্রাচীরে I নিথর ছাদ যেন ডালা খোলা কফিন I
ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি I একটি একটি করে গুনতে হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকের প্রাণহীন
দেহ I রাজার আদেশ ! দ্বেষ নেই মনে I কেবল আলো অন্ধকারে গলিত লাভার
মতো ঘৃণার উদগীরণ দেখে স্তব্ধ হয়ে আছি।
এই রাত্রি উৎসর্গ করি ঝড়কে I মনের ঝড় মুছেদিয়ে আস্ত একটা ঝড় কাঁপিয়ে
দিক শিরদাঁড়া I সিঁড়ির মতো করে শব্দ সাজিয়ে বার্তাটি যেন উন্মোচনের কথা
ছড়িয়ে দিচ্ছে বাতাসে I তুমি একবার বসো বড় জানালার পাশে I বিরলতম
অভিজ্ঞানটুকু লিখে রাখুক রাত্রি অক্ষর I
স্বেদ কথা
জমকালো মেঘের প্রস্তুতি দেখে চিত্রনাট্য বদলে নিলো আবহ সম্পাদক I অন্যমনস্ক ভঙ্গিতে সিগারেটের আগুনে আর একটা সিগারেট ধরিয়ে
বুঝে নিতে চাইলো সমগ্র প্রেক্ষাপট I
গ্লাসে গ্লাসে ঠান্ডা শরবত ব্রেকিং নিউজের মতো ছড়িয়ে পড়ার আগেই
বিখ্যাত ধারাবাহিকের বিজ্ঞাপনে কেঁপে উঠলো আস্ত একটা পাহাড় I গরু
গল্পের গাছে উঠলো বিজ্ঞান কে তুড়ি মেরে I
এই বিভাজনময় সন্ধ্যায় হাতে স্যানিটাইজার মেখে ভাইরাস এবং আতঙ্ককে
নিষ্ক্রিয় করে চা নিতে নিতে স্বেদমসৃণ তোমাকে মনে হলো আলোকবর্ষ দূরের
নীল গ্রহ গণনাতীত পরিক্রমণের পরেও ক্লান্তিহীন I
আবহ সম্পাদকের অনুমান অগ্রাহ্য করে বৃষ্টি হলোনা I বরং স্বেদপ্রবাহ ছায়ার
সান্নিধ্য খুঁজছে দেখে মনে হলো চতুস্পর্নী জীবনের বদলে যাওয়া অভ্যাসগুলি
মজে যাওয় নদী I একটা প্লাবন হোক দিগন্ত অবধি I
____
0 Comments