জ্বলদর্চি

অনুপম পালধি


অ নু প ম  পা ল ধি


কথোপকথন 

আমি নিজে অাসিনি তো বাবা

তাহলে পাঠিয়ে দিচ্ছ কেন অন্য লোকালয়ে
তুমি শিখিয়েছ আত্মনির্ভরশীল হতে
আত্মমর্যাদাকে ধরাশায়ী না করে শিক্ষানবিশ থাকব আবহমানকাল

বড্ড বেশি ভাবো অামাকে নিয়ে 
অামিও রেগে যাই আগুনে পোড়া ঘি
অপত্যস্নেহে এত ভিজিয়েছ বলেই
বারিবর্ষণে সিক্ত অামার অশ্রু

সময়ের সাথে সমঝতা করাটা শিক্ষা 
নৃত্যপটীয়সীর বাসনায় উড়ে যায় 
সাধারণ পাঠক্রমের নিয়মিত শ্রেণিচক্র
ভরসা রাখি  নিজের উপরে

মৃদঙ্গের  বোলে খাজুরাহো কাঁপে
নর্তকীর ঘুঙুরে
অক্ষরকুঞ্জ

আবার ফিরে  এলাম

নিভৃতবাস বা অজ্ঞাতবাস নয়
জীবিকার তাগিদে পিছু হাঁটা বাস্তব 
মোলাকাত ঘটালো অক্ষরলিপিতে

শব্দচয়ন মাঝপথে ভেড়ায় ডিঙি নৌকা 
কাকভোরে মাছরাঙা লুকোচুরি খেলে
জলকেলির অভিলাষে

মাঝদরিয়ায় ভেঙে যায় ঘর
স্বপ্ন ছলাৎ ছলাৎ ডাকে যৌবনের ঘরণীকে

এসেছি বলেই ক্ষুধা মেটাব তোমার
অক্ষরকুঞ্জের শব্দ তরঙে


যুগলবন্দি

মিথ্যে বলার সাহস  রাখি আমি
 যদি সে সত্যের পরছায়ার সোপান
সত্য মিথ্যা  মানসিক যুগলবন্দি 
পরভূমে নিজবাসি ঘোমটা টানা বউ

মুখের প্রলাপ  দোচালার ঘর
 নামিয়ে ফেলবে নদীর রসাতলে
বন্ধন আঁকড়ে ধরে পিয়াসীর  মন্দির 
নন্দনকানন ঘুমায় আকাশ চাদরে

বাইপাসে কেটে পড়ো নিজের আস্তানায়
মস্তক জবানবন্দি করে কেশরাশের রাজাকে
সত্যি বললে মহাভারত শুদ্ধ হয় কি
জানা নেই 
মনের  অন্দরমহলে বিশুদ্ধ বাতাস বাসা
বাঁধে আজীবন অনাদিকাল  


জাগরী 

আর কতদিন অন্ধকার বেশে থাকবে
 অমাবস্যার রাত মানেই কি কালো পাথরের খাদান
রাতের বহুরূপী বেশে কৃষ্ণকলি সাজো
প্রভাত বাঁশির সুরে ঘুম ভাঙিয়ে 
জাগিয়ে তোলো অসূর্যস্পশ্যাকে
পরগাছা ভেবে ভোরের সূর্যোদয়ে মুখ না লুকিয়ে 
 নিশীথ সূর্যের দেশ হও 
রূপান্তরগামী

বিশ্ব বদলে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি

ভাইরাসে ধুঁকছে  টালমাটাল নিত্যলিপি
পরির্বতনের জোয়ারে টুকরো সমাজগোষ্ঠী
বেদনার শুকনো রুটি গড়াগড়ি খায় রেললাইনে
বাড়ি ফেরে শ্রমিক পরিবারহীন হয়ে

শাব্দমালা হাতের নাগালের বাইরে
মসি যন্ত্রের কারাগারে বন্দী
কলম পরিয়ায়ী শ্রমিকের দলে
কাগজ মানে সামাজিক  দূরত্ব

যান্ত্রিক দানবের ঘায়ে ক্ষত সমাজ সংস্কৃতি 
মান্যতা দিতেই হবে যুগের পথিককে

রূপ বদলে অামিও এক রূপান্তরগামী

-------

Post a Comment

1 Comments

  1. অসাধারণ হয়েছে কবিতাগুলো। খুবই ভালো লাগলো।

    ReplyDelete