পরকীয়া ও কোহিনুর প্রেম
মো না লি সা পা হা ড়ী
কতবার ঘাড়ধাক্কা দিয়েছি তোমায়
হোয়াটস অ্যাপের দরজা থেকে,
ফিরে ফিরে এসেছো ম্যাসেজের ছোট্ট জানালায়
অনুনয় বিনয়ের সাথে
আবেদন পত্র হাতে
এতটুকু দরজা খোলার...
অবশেষে আনব্লক সময়ের স্রোতে
অনেক স্তোকবাক্যের প্লাবনে ভেজাতে চেয়েছো হৃদয়
বুঝেছি সব...তবু না বোঝার ভান সারাক্ষণ
পাছে তুমি বেশি বেশি বুঝে ফেলো আমার এই মন
অগত্যা কথা ঘোরানোর নিরন্তর প্রয়াস জারি থাকে
নাছোড়বান্দা তুমিও ভীষণ, বুঝিয়েই ছাড়বে আমাকে
যে বুঝে ও বুঝেনা,তাকে কি বোঝানো যায় বলো?
তুমিও পারোনি তাই -
বরং কথার আঘাতে তোমাকেই দোষী করেছি বারবার, অকারণে
যাতে তুমি দূরে যাও,স্বেচ্ছায়
ফেলে সব দায়,ভালোবাসবার...
জানি, জীবনের অমূল্য সম্পদ
সোনা রুপা নয়, নয় কোনো বিলাস ব্যাসন
বাড়ি গাড়ি বড় বেশি ফিকে তার কাছে
বয়সের ভারেও সে থাকে নির্ভার
একফালি চাঁদের আকাশ
সে হলো সত্যি কারের ভালোবাসা
কোনো ঐশ্বর্যই তার মতো দীপ্যমান নয়
স্ফটিকের স্বচ্ছতা মেখে সে শুধু হৃদয়ের আলো
এমন অমূল্য রতন অপাত্রে দান কি কেউ করে!
আমিওতো এই ধনে ধনী
সংসার সাজিয়েছি ইচ্ছে মতন
বিলিয়ে দিয়েছি নিজেকে,ঠিক যেন ধুপ
ছাই হয়ে পড়ে থাকি পায়ে, তাতেই তৃপ্ত আমি
ও আমায় ছড়িয়ে ফেলে,ভাঙে,খানখান করে
টুকরো টুকরো তাও ওকে ভালোবাসি
ঈশ্বর হয়ে উঠি উদার বৈভবে,
জীবনকে ঢেলে দিই
প্রেমের অজ্ঞলি ...
তোমারও তো প্রেম আছে, সে তোমার বধু
তোমার জীবন জুড়ে তার ছায়া দেখি
তুমি তার সবটুকু, সবকিছু নিয়ে-
ভরিয়ে রেখেছো তাকে ঘরে ও বাইরে,
তবে কেন আরও প্রেম জাগাও অন্তরে?
আমিও তো বদলাই রাত গাঢ় হলে
তোমাকেই নাড়াচাড়া করি মনে মনে
বুঝি, বেনোজলে বাঁধ ভেঙে গেছে, সুরক্ষা প্রাচীর, সংযম
ঢল নামে আবেগের, দুচোখে সাগর
গালের পাহাড় দেখে ঝর্ণার রূপ
ঠোঁট স্বাদ পায় লবণ হ্রদের
তুমি আমি মিলেমিশে একাকার সেই ক্ষণ
হৃদয় সঙ্গম
হয়তো তুমিও তখন
রাত বাতি নিভিয়ে বসে আছো একা,ঠায়
একাকী ব্যালকনি আর তৃতীয়ার চাঁদ
ছায়াও কায়াকে ছেড়ে নিজস্ব বিরামে
এমনই নির্জন যেন ধ্বংসপ্রাপ্ত পৃথিবীর বুকে
একা তুমি বসে আছো প্রাণটুকু নিয়ে
সে প্রাণের ভেতর আর একটি প্রাণ জেগে আছে
যাকে তুমি ছুঁয়ে দাও প্রতিটি নিশ্বাসে
আমলকি গাছে হাওয়া দিলে
যে বাতাস তোমাকে ছুঁয়ে মিশে যায় অন্তরীক্ষের
আকাশে
তার গায়ে আমারই নাম লেখা আছে...
আমার দীর্ঘশ্বাস মেখে সে আবার তোমার কাছেই ফিরে যায়
হাজার বছর ধরে পরিক্রমা শেষে
আমরা মিলিত হবো
আকাশের নীল নীলীমায়...
ফোটোগ্রাফি- সৈয়দ স্নেহাংশু
0 Comments