গুচ্ছ কবিতা
শিবদেব মিত্র
সাথে সমুদ্দুর
( অনুভবের সাত-কাহন)
যা ঘটেছে তারফলে
বুকের পাটা পেরেক পেটা, এত সহজে ভাঙছিনা
তোমার উপমা তুমি তোমার! আমিই যা আমার না
তাই যা ছিলনা আগে, রাখিনি তা কিছু তারপরেও
উড়োমেঘে মন রেখেছি, যা ঘটেছে তারফলে...
বোধহয়, যা হয়েছে তা ভালোই ! জানা হয়েছে তাতে
ঘোমটা মাথায় খেমটা আসলে কেমন করে নাচে
বেশ করেছ? করো! তোমায় বারণ করেছে কে
আমার নীতি আমার। তোমারটা, তোমার ইচ্ছে ...
আজকাল ভালো আছি! আকাশে ফুটে থাকে তারা
গভীর আরও গভীরতার ধ্যানে যেন শূন্যে দিশেহারা...
ঢের হয়েছে, ছাড়ো
ধুশ্ শালা সব ফালতু! এসব ভাল্লাগেনা মোটে...
কলার চোপায় পা! ছিটকে গেছি উল্টো পিঠে, রকে
সমঝোতা দালাল বানায়, সংঘর্ষ নেতা...
ঢের হয়েছে ছাড়ো ওসব নাটুকে আদিখ্যেতা
যা দেখেছি চমকে গেছি জ্ঞান হওয়া ইস্তক
দুনিয়া বিপণনের ! আর সেখানে পণ্যই সম্পদ
ঢের হয়েছে, ছাড়ো তো ওসব ভাল্লাগেনা আর
জোট বাঁধা সব ধাঁধা... আসলে যে যার, তার।
পতিত এ মানবজমিন! ফলত সোনা করলে আবাদ
পড়েছো খপ্পরে তো, ষোলো আনাই পুরো বরবাদ
মন খারাপ মেঘের মতো, উড়িয়ে আনে বৃষ্টিকে
সেই ছেলেটাই বেশি ভেজে, হৃদয়ে যার কালসিটে
পা আমিও বাড়াইনা
মূর্তি রাখিনা আর ! তবে তাকে ছুঁয়ে থাকি ধ্যানে...
উড়ি উড়ি ঘুরি ঘুরি যা, করিনা ভরসা তেমন রকমে
তার মানে তো এমন না, প্রেমে পড়ি না রোজ
নিত্য নতুন পাক খাওয়া সব সন্ধানী বিক্ষোভ
তবে কারো মূর্তি নেই! সব কিছু ছায়া দিয়ে ঘেরা
সেই খোলাচুল, বৃষ্টি দুপুর কিংবা তার
নস্যাৎ করে চলে যাওয়া সব চটুল ইশারা
এখন প্রেম জনপ্রিয়! নিত্যনতুন প্রেমও এসে জোটে
শুধু পাইনা তার দেখা, হেঁটে যাওয়া যায় যার সাথে
এগোইনা কখনই বেশি। বেঁধে থাকি, নিজস্ব সীমা
এমনই দুর্লঙ্ঘ তা ! যার ওপরে পা আমিও বাড়াইনা
ছাল চামড়া ওঠা
সত্যি বলতে এটাই, আস্ত গবেট তাই!
কিংবা তুমি ভাবতে পারো- গবেটও না, মাথামোটা!
এটা তো ঠিক, আমিও স্পিসিস... এই দুনিয়ায়
না হয় কিছু ধাক্কা খেয়ে ছাল চামড়া ওঠা
হোঁচট খাই, উঠে দাঁড়াই ! আবার হাঁটি ঝোঁকে
রক্ত গড়ালে খুব আদরে লাগিয়ে নিই মলম
কাজ বলতে দুবেলা রোজ বাজানো ডুগডুগি
আর খুঁজে ফেরা, রাস্তাঘাটে... নামেই
গণ প্রজাতি সেম! তবু দুনিয়ার মানুষ কত রকম !
জগা-ই, নন্দ ঘোষ !
ঢেকুর তুলে... বলার কি আর, এসব কথা ?
ভেজায় যা জলই! এ জলের মতই, সোজা
তার খোলা চুল, বৃষ্টি দুপুর... আর সে দিন
চতুর্দিক আবছা আলো! অন্ধকার, লোডশেডিং ...
একলা জগাই, জুড়ল লড়াই, বুঁদিগড়ের মাঠে..
আস্কারাতে আটখানা সে, যুদ্ধের আহ্লাদে...!
থাক্ সে কথা!আজ অযথা। খুঁজে কি লাভ দোষ ...
সবাই সতী! কি তাতে ক্ষতি? জগা-ই, নন্দ ঘোষ!
আসলে ক্ষতের বিদ্রোহ
সেয়ানা বড় সময় ! দাঁড়ায় না সে এলে
সত্য যা কিছু চরম! বৃক্ষ চেনায় ফলে...
অদ্বিতীয় যারা তারাই আসল ভৃগু
চতুর্দিকে ফাঁদ ! পাহারা দেওয়া ঘুঘু...
চাঁদ ভেবেছি যাকে তারও তিনটে উপগ্রহ
কলঙ্ক নাকি সব আসলে ক্ষতের বিদ্রোহ
বোঝো এবার ঠ্যালা জমে উঠেছে খেলা
মায়া কেবল অস্ত্র তার মোক্ষ হ'ল মোহ!
কলঙ্ক নাকি সব আসলে ক্ষতের বিদ্রোহ!
আরশি নগর
(প্রিয় আরশি'র জন্মদিনে )
ভুলে গেছি ভাষা তার, সুরটুকু ছাড়া -
একফালি ভাঙা চাঁদ আর কিছু তারা...!
আকাশ কি আর টুকরো হয়? দেখতে অমন লাগে
কত মেঘের কোলে মেঘ জমেছে, বিষণ্ণতার দাগে
হয়তো কাছেই আরশি-নগর, বন্ধুত্বের বাড়ি
অনেক অনেক ভালো বাসা... বাম দিকে পথ,তারই
কমিয়ে নিচ্ছি স্মৃতির ভর, হারিয়ে যাওয়ার দায়ে
যেমন ভুলে থাকা সে সব মুখ, মন ক্যামনের ভয়ে
আরশি-নগর,মায়ার শহর ! আমি,হারানো এক-তারা
এখনও সেসব বাউল বাতাস, জাগ্রত অন্তরা'য়... !
জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇
আরও পড়ুন
0 Comments