জ্বলদর্চি

মলয় জানা //দুটি কবিতা

মলয় জানা। দুটি কবিতা


উপমান তুমি

পড়বি কী তুই?   কামিন হবি,
হাটুর নীচেই   কাপড় রেখে, 
মোদের সাথে  মাঠে যাবি,
বন বাদাড়ে  জ্বালুন লিবি,
বর্ষাকালে  ধান লিকাবি, 
পড়বি কী তুই??
বাপ দাদারা  মজুর হোল,
মা ঠাকুমা  কামিন হোল,
তোদের আবার  পড়াশুনা!
পড়বি কী তুই???

নিঘুম রাতে
বাজের শব্দ যেন শোনে,
অন্ধকার দেখে
জ্যোতস্না ভেজা রাতে।
" পালিয়ে যাব 
যে যাই বলুক, পালিয়ে যাব আমি।
বলুক সমাজ পালনো মেয়ে, 
পালিয়ে যাব।
" কামিন হবি" একদম না।"

সত্যি সত্যি পালিয়ে গেল,
সমাজ ছেড়ে বাপ মা ছেড়ে, 
নিজের জেদে লেখাপড়া,
নিঘুম রাতের  বাজের আওয়াজ
পড়ার শব্দে ঢেকে দিয়ে, 
বইগুলো সব সিঁড়ি যেন
তরতরিয়ে উঠে গিয়ে,
দিদিমণির চেয়ারে বসে,
আপনমনে গুনগুনিয়ে,
" কামিন হবি, ধান লিকাবি"
পুরনো জেদ জাগিয়ে নিয়ে,
আবার নতুন সিঁড়ি খুঁজে, 
তরতরিয়ে উঠে গিয়ে 
সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে, 
তবুও কেন বিষণ্ণতা?????
" ধাপগুলো কি মিথ্যে ছিল?
খিদেয় ভরা রাতের কাঁদা,
সবকিছু কি মিথ্যে ছিল?
তবুও কেন একা একা??
আমার কোথাও ভুল হয়েছে?
কামিন হওয়াই ভালো ছিল??""


না গো মেয়ে!!
কামিনগিরি তোমার তো নয়,
তোমায় আরো উঠতে হবে,
তরতরিয়ে উঠতে হবে,
তোমায় দেখে শিখুক সবাই,
তোমায় দেখে জ্বলুক সবাই,
মনের কথা গুছিয়ে নিয়ে,
আবার চলো সিঁড়ি বেয়ে, 
একটা আকাশ অপেক্ষাতে
তুমিই হবে ধ্রুবতারা!!!


🍂
ad


শ্বেত কপোত

এখন আকাশে চাই  
শ্বেত কপোত।
যদিও সংঘে জাগে
সুরের মূর্ছনা 
বুদ্ধংস্মরণং গচ্ছামি। 
আজানে শান্তির ডাক
ওম্ মন্ত্রে শান্তির সুর।

তবুও.. 
যে শিশুরা এসেছিল,
পৃথিবীর আলো মেখে
বড় হবে বলে, 
বড় হয়েছিল যারা,
অথবা বুড়ো হয়ে
শান্তির ঘুম চেয়েছিল যারা,
তারা সব দল বেঁধে
ছাই হয়ে যায়।

এখনি আকাশে চাই 
শ্বেত কপোত। 
আকাশের বুক চিরে
মারণ আগুন নয়,
শান্তির কপোত চাই।
তুমি আমি আমরা সবাই
সমবেত আওয়াজ তুলি 
এবার শান্তি চাই।

Post a Comment

0 Comments