জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা/( উৎসব ১৪২৮)/ তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়

গুচ্ছ কবিতা 

তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায় 


পর্যায়ক্রমিক 

বাবার পায়ের তলায় মাটি লেগে থাকে,
মাটি দিয়েই সংসারের মূর্তি তৈরি হয়।
মা ওই মূর্তির উপর এঁকে দেয় চোখ।
চোখের দেশে খেলে বেড়ায় বর্ষাদিনের সূর্য-রথ।
রথের চাকায় চাকায় দৌড়ে যায় প্রজাপতি... 

প্রজাপতি বেড়া ভেঙে হৃদয় করে দেয় জল, হাওয়া, মাটি...

মাটি লেগে থাকে বাবার পায়ের তলায়।



খিদের চিত্রায়ণে 

মানচিত্র ক্ষয়ে যাচ্ছে-
বিধুকাকুর দোকানের মস্ত বেলনচাকিতে যেভাবে ক্ষয়ে যায় ময়দার মণ্ড! 

পথচলতি ক্ষুধার্ত বলে -
আরও দুটো ছেঁড়া পরোটা সঙ্গে...

মানচিত্র ক্ষয়ে যাচ্ছে, 
আপনাদের কান 
খেতে চাওয়ার শব্দ শুনতে পাচ্ছে না।



 বন্ধন-চ্যুত

নিবেদন রাখা থাকে
যৌথ প্রণয়ে।

ঘামের দখলদারি করে একা শিশু
সরল,সহজ পায়ে ঠেলে দেয় বল।

বর্ষাদেশের যুবক 
প্রেমিকার কাছে কী কী বন্ধক রাখে-
জেনে নেয় কবি।

কলম ফুলেল হয়,
অরণ্যসংকুল -
বিপদের শরীর সূক্ষ্ম, 
অট্টহাসি হেসে-

ঘামের দখলদারি ফিরিয়েও দেয়।



বিস্তৃত 

আমাদের দারুণ অস্থির ওজন
কমে যায়।
 নক্ষত্রেরা সমান্তরাল পথে হেঁটে 
অস্থির কাছাকাছি এসে-
হোঁচট খেয়ে ফিরে তাকায়।

চাঁদ ওঠে। 

আকাশের নিবিড় ব্যথার উপর ঝকঝকে চাঁদ-
একটি আঁধার, 
চুরি করে।



 হাঁ করা ঈশ্বর 

হাঁ করে শুয়ে থাকে ঈশ্বরের প্রকৃত  যন্ত্রণা।
সেতারের টুংটাং দীর্ঘশ্বাসের মতো 
যন্ত্রণার বাহুপাশে ছটফট করে।

শূন্য ভূ-তল জানে শুধু শস্যের ভাষা!

ও ভাষা পড়তে পেরেই ঈশ্বরের যন্ত্রণা -
আল্লা ও যিশুর কাছে জল চায়!

মন্দির, মসজিদ, গির্জায় 
একসাথে গেয়ে ওঠে মানুষ।

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇


আরও পড়ুন 

Post a Comment

1 Comments