গুচ্ছ কবিতা
বিমান কুমার মৈত্র
অবিনশ্বর
নেভেনি আগুন।
এখনো জলের শব্দ হয়।
ছেঁকা লাগে জ্বালে।
ঝলসানো তার প্রত্যয়
ধীরে ধীরে ধোঁয়ায় মিলায়।
এ অংক মেলে না।
কিংবা বিশ্বাসী মানুষ তাকে মেলাতে দেবেনা।
তারা খোঁজে বিশ্বাসের
শেষ ভাগ টুকু।
জন্ম যার অমিলেই।
মৃত্তিকার অন্তরে বাড়ে।
পুনরায় জন্ম নেবে বলে।
যেথায় ভাসাবে তাকে
আসবেই ফিরে।
ঘুরে ফিরে এই পৃথিবীতে,
এই স্বর্গদ্বারে।।
নির্বাণ
জীবনের ক্ষত,
যাও তবে, শান্ত নদীটিতে,
ধুয়ে এস দুর্গন্ধের অনুপ্রাস যত,
মোমবাতি জ্বালো আজ পূর্ণিমায়;
ধীরে ধীরে, সন্তর্পণে,
অন্ধকারে আলোক – ছায়ায়।
বন্ধ দুয়ার খুলে ঘরে যাও ।
যে গণ্ডূষে রেখেছিলে ফুল
ঊষা – অবসরে,
তোমার স্নিগ্ধ মুখে
নম্র আলো তলে,
অর্পণের ডালি হয়ে
ফুটেছে সকলে।
ওইখানে, ওই মর্ম - গৃহে
ওষ্ঠ রাখো ক্ষতের উপরে
অন্ধকারে রাখো মোমবাতি,
দেহ রাখো নির্বান মন্দিরে ।।
শ্মশান পাঁচালি
আমরা জ্ঞানীরা জানি
জানেনাকো ডোম,
সে শুধু পোড়ায় মড়া
নির্বাক নির্মম।
গোলাপ কুঁড়ির লাশ
ভরা মাস বধূ,
টাটকা যুবতী যার
চোখে ছিলো মধু।
অথবা পাপীর লাশ
পুন্যত্মার সাথে,
দুধের সাগর কাটে
ফোটা চোনা ক্বাথে।
এবং শুকনো লাশ
ধু ধু মরুভূমি,
ডোমেরো অরুচি করে
পেটের গোলামি।।
আবাদ ভ্রস্ট
বৃষ্টির বীজ বুনেছিলাম মেঘের ক্ষেতে,
সে এলে ঘরে কখনো তোমায়
দিত না যেতে এ ভূমি ছেড়ে;
একটি শব্দ লিখেছিলাম সাদা পাতায়
অন্তত সে বাঁচতো যদি প্রাণের
ডগায় ভাত কাপড়ে !
কেমন ডাগর চোখ বানালাম
দেখব বলে, অন্তত সে বাঁচতো যদি
থাকবে বলে আমার ঘরে।
পাতার বৃক্ষে তাকিয়ে ছিলাম
হাপিত্যেশে, একটি পাতা
আসবে বলে ঝড়ের মাসে,
আমার ঘরে।………..
পাইনি তারে।
0 Comments