জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা-২/তাহের আলি

গুচ্ছ কবিতা-২
তাহের আলি


সৌন্দর্য্য

গন্ধরাজ ছড়ায় সুবাস ,কাননে।
মন ধরা পড়ে যুগল নয়নে।
আকাশ সৌন্দর্য্য পায়, মেঘ আর রোদ্দুরে।
নদীর রূপ ফুটে উঠে,
রূপোলি জোছনায়, মায়াবী রাতে।
কৃষ্ণ চূড়া বিবর্ণ লাগে।
যদি ফুল না ফোটে।
আর আমিও অসুন্দর হব
তোমার কাছে,
যখন আমি না হাসব।


মনের ছড়া

সূর্য উদিলে
শিয়াল ডাকি
ঘুম উবে যায় 
দিয়ে ফাঁকি।

ওই যে কাননে
শিউলি বনে
ভ্রমর ওড়ে
আপন মনে।

আছে এক 
বনের পাখি
খেয়ালী সুরে
করে ডাকাডাকি।

আর আছে এক
বহতা নদী
ভালো লাগে তারে
জোছনা হয় যদি।

তুমি বৃষ্টি
আমার সখি
ভ্যাপসা গরমে 
তোমায় মাখি।

ভালো আছো তুমি?

পৃথিবীটা এখন পদ্যময় লাগছে
শুভমের কাছে।
অন্তহীন আনন্দ ,
তার ভাবনার জগতে প্রবেশ করল।

সকালের সূর্য টা,ধরাকে
মিষ্টি আলোয় ভরিয়ে দিচ্ছে ।
পড়ন্ত বিকেলে, গঙ্গার ধারে বসে,
ষাটোর্ধরা সূর্যের অস্তাচল দেখছে ,অলস আনন্দে।
পার্ক এর আলো আঁধারী সন্ধ্যায়,
প্রেমিক যুগল প্রেমের জাল বুনছে।
চাঁদনি সন্ধ্যাটা কী মোহময়ী
হয়ে উঠেছে গঙ্গা পারাপার হওয়া
যাত্রীদের কাছে।

হঠাৎ ছন্দপতন, অন্ধ পতন।
রাজপথে একটা জটলা।
এক ভিখিরীকে একটা টাটা মার্সিডিজ
চাপা দিয়ে পালিয়েছে।
কেউ ঝুঁকি দিয়ে চলে গেল,
কেউ বা দাঁড়ালোই না।
কয়েক জন বেকার,বোখাটে ছোকরা
ছোটাছুটি করছে।
এই মানস, এই রাজু, এই ইসলাম
গাড়ী নিয়ে আয়, গাড়ী নিয়ে আয়।
মনে হয় বেঁচে আছে।
তারা ভিখিরিটিকে হাসপাতালে নিয়ে গেল।

ভিখিরিটির কেউ নেই, চাল নেই, চুলো নেই,
মাথার উপর ছাদ নেই ।
শুধু পথ আছে।
আছে একটা তুবড়ানো থালা,
একটা ময়লা ঝোলা।
সে বেঁচে আছে।
ইসলাম জিজ্ঞেস করল ...
কেমন আছো তুমি?
বললো- ,মোটামুটি আছি।
মন্দ বলে নি কিন্তু।


হৈমন্তী সুর

আজ হৈমন্তী সুর
বাজিল আমার বীণে,
সে সুর মিশিল
পাখিদের কলতানে।

ভোরের আকাশ ঢাকে
কুয়াশার চাদরে,
বৃক্ষপল্লব ধৌত হয়
পরম আদরে।

আলপথ ভিজিল
ভোরের শিশিরে,
শরীর জুড়িয়ে গেল,
ঢেউ লাগিল অন্তরে।

শিউলির কাননে
ফুটিল অনেক ফুল,
অরুণ উদিল যবে
উদ্ভাসিত নদী কূল

স্বচ্ছ দীঘির জলে
রূপোলী রোদের মেলা,
মরাল মরালী সব
করিতেছে তারা খেলা।

হৈমন্তী হাওয়ার দোলা
লাগে ধানক্ষেতে,
ধান শিসটির মাথা
নোয়ায় আনন্দেতে।

হিমেল বাতাসে
উদ্বেলিত ধরনী,
বার্তা দিল যেন
শীতের পদধ্বনি।



আসার কথা ছিল

তোমার আসার কথা ছিল,
এক খিল্লি আবেশ 
জড়ানো পান নিয়ে‌।
যেটা খেলে আমি বিহ্বল হয়ে যায়।
ডালিম ফুলের  রং এ রাঙানো
সেই শাড়ীটি পরে,
যেটি পরলে তোমাকে অপ্সরা দেখায়।

তোমার আসার কথা ছিল,
এক চাঁদনী সন্ধ্যায়।
ভেসে যাওয়ার কথা ছিল
দুজনে , এক চাঁদের ভেলায়,
কোন এক অজানায়।
আরও কথা ছিল –
তোমার টবে ফুটে ওঠা
রজনীগন্ধা দিয়ে বানানো তোড়া,
ধরিয়ে দেবে হাতে আমার।
স্মিত হেসে বলবে,
নিয়ো এটা উপহার, ভালোবাসার।

কিন্তু তুমি এলে না,
এক রাশ হতাশা,বিরহ
ঢেলে দিলে আমার
তৃষ্ণার্ত বুকে।
প্লাবন এনে দিলে
আমার নয়নযুগলে।

পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments