জ্বলদর্চি

অর্থের মুখ আমি দেখিয়াছি / ভাস্করব্রত পতি

বাংলা প্যারোডি কবিতা, পর্ব -- ৪

অর্থের মুখ আমি দেখিয়াছি 

ভাস্করব্রত পতি 

অর্থের মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি 'মানুষের' রূপ
ধরিতে চাহিনা আর : অন্ধকার জেগে ওঠে আপন সত্বার গাছে
চেয়ে দেখি কসাইয়ের মতো খড়গ নিয়ে পাশে বসে আছে
আমার হিয়া খানি -- চারিদিকে চেয়ে দেখি সম্পদের স্তূপ
টাকা - কড়ি - গয়না - গাঁটি - বিলাস - ব্যাসন - বাকি সব চুপ;
প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনের সাথে ছেদ পড়িয়াছে
আত্মার আত্মীয়রা আজ ভেড়ে না মোর কাছে
এমনই কলুষ বুকে প্রতিদিন অর্থের জান্তব রূপ
দেখেছিল; মামুদও একদিন অসংখ্য মানুষের প্রাণ নিয়ে
রক্তের হোলি খেলে থেমেছিল বাস্তবের চড়ায়
গজনির সুলতানের হাতে অসংখ্য লুন্ঠন দেখেছিল, হায়
সোমনাথ মন্দিরের ঘন্টাধ্বনি শুনেছিল, .... একদিন সেখানে গিয়ে
ছিন্নমূল উদ্বাস্তুর মতো যখন সে বসেছিল ভক্তের সভায়
'অর্থম অনর্থম' জেনে শিশুর মতো তাঁর কেঁদেছিল পায়।


জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇


জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে... 

বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি 

জীবনানন্দ দাশ 

বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ
খুঁজিতে যাই না আর : অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে
চেয়ে দেখি ছাতার মতো ব্ড় পাতাটির নিচে বসে আছে
ভোরের দয়েলপাখি – চারিদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ
জাম - বট - কাঁঠালের - হিজলের - অশ্বত্থের করে আছে চুপ;
ফণীমনসার ঝোপে শটিবনে তাহাদের ছায়া পড়িয়াছে;
মধুকর ডিঙা থেকে না জানি সে কবে চাঁদ চম্পার কাছে
এমনই হিজল - বট - তমালের নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রূপ

দেখেছিল; বেহুলাও একদিন গাঙুড়ের জলে ভেলা নিয়ে –
কৃষ্ণা - দ্বাদশীর জোৎস্না যখন মরিয়া গেছে নদীর চড়ায় –
সোনালি ধানের পাশে অসংখ্য অশ্বত্থ বট দেখেছিল, হায়,
শ্যামার নরম গান শুনেছিল – একদিন অমরায় গিয়ে
ছিন্ন খঞ্জনার মতো যখন সে নেচেছিল ইন্দ্রের সভায়
বাংলার নদ - নদী - ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতো তার কেঁদেছিল পায়।

Post a Comment

0 Comments