জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা /বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়

গুচ্ছ কবিতা
বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়


বিপ্রলব্ধ

আমার মনের দুঃখ যতো -
লুকাই হাসির অন্তরালে,
অশ্রু বারি আড়াল করি -
চশমা ঘষার ছদ্ম-জালে ।।

যাকে আমি আপন ভাবি , 
দুঃখ সে দেয় সবচেয়ে বেশি
বলে আমায় ধমক দিয়ে ,
" পাপী রে তুই ছদ্মবেশী "।।

ভালোবাসি তোমায় বলে,
বলো যদি আমায় পাপী,
তবু আমি তোমায় সদাই-
ভালোবাসার মূল্যে মাপি ।।

একটু যদি বাসতে ভালো-
কিই বা  হতো তোমার ক্ষতি ?
ধন্য হতো আমার জীবন,
তুমি হতে ভাগ্যবতী ।।

প্রেমহীন জীবন চায় নাতো কেউ,
সক্কলে চায় ভালোবাসা -
শুকনো ধুধু মরুর মাঝে -
সবুজ 'oa-sis এর' আশা ।।

সব চাওয়া তো হয়না পাওয়া-
সবাই প্রেমের মূল্য বোঝে ?
ভালোবাসা পেয়েও হারায় ,
জানেই না তো কি সে খোঁজে !

** বিপ্রলব্ধ   -  বঞ্চিত,  প্রতারিত , প্রিয় উল্লেখিত
                       নির্দিষ্ট  স্থানে গিয়েও যে প্রিয়ের
                       সাক্ষাৎ  পায় না ।

** oa-sis     -  মরুদ্যান,  মরুদ্বীপ, ক্ষুব্ধ ও বিক্ষত বিশ্বে এক               
                       প্রশান্তির  আশ্রয়



জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇



কবি

খ্যাতি পেতে সে যে বড়োই হ্যাংলা
বাংলায় লেখে কবিতা,
ছাত্র জীবনে গোল্লা পেতো সে
বাংলায় ;  জানি সবই তা ।
এখন সে লেখে শুধুই কবিতা,
মন ছোঁয় নাকি  সকলের ,
ধ্বস্তা ধ্বস্তি সদাই করে সে 
প্রথম-স্থানটা দখলের ।
বই-এর মেলায় দেখি সেই কবি
স্টেজেতে উঠেছে হরষে-
তার যতো জ্ঞান কাব্য বিশ্বে
বৃষ্টির মতো বরষে ।
বাংলার 'স্যার' সামনে ছিলেন,
দেখে তো অবাক হয়েছেন,
ফেল করা ছেলে সামনে এসেছে,
তিনি পিছে পড়ে রয়েছেন ।


উচাটন মন

মন আজ ব্যাকুল তোমাকেই শুধু ভাবি,
দেখা তো পাই না জানি না কারণ কি তা  
বুকে চেপে আছে মনখারাপিয়া জাঁতা ,
 দাও না তো আর তোমার ঘরের চাবি ।।

বড়ো আশা নিয়ে এসেছি তোমার কাছে,
ক'দিন ধরেই রাগ করে আছো দেখি ,
কেন এতো রাগ বলবে আমাকে সেকি ?
সবই তো তোমার  আমার যা কিছু আছে ।।

কি দোষ করেছি ? রাগটা ভাঙে না কেন ?
সুন্দরী আমি সকলে কাছেতে আসে ,
আমি তো ডাকিনা ওরা এসে ভালোবাসে,
 ফাঁদে ধরা যায় আমি সেই পাখি যেন ।।

বিশ্বাস আর করো না আমাকে বুঝি  ?
দেখলে আমাকে অমনি লুকিয়ে পড়ো ,
সন্দেহ বুঝি মনেতে  করেছো জড়ো?
আস্থা আনার  পথটা এখন খুঁজি ।

আমার তো  আছে অনুপম দেহ লতা, 
তাই বুঝি সবে আমার দেহই দেখে,
 সুঠাম এই দেহ দেখবে কাছেতে রেখে,
বোঝে না আমার   উদাসীন নীরবতা ।।

তোমাকেই শুধু ভালোবাসি  প্রিয়তম,
কাউকেই আমি দেখি না তোমাকে ছাড়া,
তুমি দিলদার, তুমিই চোখের তারা,
ও আশিক, মানি তুমি সর্বোত্তম ।।

তোমাকে ভোলাতে আজ আমার এই সাজা,
আতর মেখেছি, কাজল পরেছি চোখে ,
সুদেহিনী দেহ  দেখছে   পথের লোকে ,
মসৃণ  ত্বক সুবাসিত  ক্রিমে মাজা।।

ভালোবাসা দিয়ে ভোলাতে পারিনি বলে ,
বেশি করে রুজ মেখেছি আমার গালে ,
লালমণি টিপ পরেছি এই কপালে ,
ভোলাতে তোমাকে  গ্ল্যামারের কৌশলে ।।

এটা বেশ জানি তুমি তো  আমারই হবে,
ভালোবাসা কেউ ছাড়তে কখনও পারে?
রূপ ও যৌবন আছে যার  দেহ-ধারে ,
বিজয়িনী হয়ে সেতো চিরদিনই রবে ।।

আমাকে দেখলে রাগ চলে যাবে দূরে,
আমার এ রূপ দেখবে অবাক হয়ে ,
মসৃণ গতি ক্ষণ চলে যাবে বয়ে ,
বাঁশিটি বাজবে আকুল বেহাগ সুরে ।।

Post a Comment

0 Comments