জ্বলদর্চি

দেশান্তরী -১৫ /হিল্লোল রায়


দেশান্তরী -১৫

হিল্লোল রায় 


এত দিনে বাঁধন টুটেকুঁড়ি এবার উঠল ফুটে

আমার ফটোস্ট্যাট কপি রেডি। একটা কপি কিছুটা খারাপ দেখতে হওয়ায় মনটা খুঁতখুঁত করছিল। পুরো টাকা দিলাম তবু সামান্য খুঁত রয়ে গেল। হ্যারিকো থেকে বল্লো কোন অসুবিধা হলে ওরা বিনা পয়সায় আবার নতুন কপি করে দেবে। মনটা একটু আশ্বস্ত হল।

শিয়ালদা থেকে ৩-১৭ -এর ট্রেণ ধরে ৪-৩২ হাবড়া পৌঁছালাম । একটা ভীষণ কর্মব্যস্ত দিন অতিবাহিত হয়ে গেল। রবিবার দিন অর্থাৎ ফেব্রুয়ারী ১৬১৯৭৫ দিনের কাজের শেষে সঞ্চয় এলো আর্গোসিতে আমার ডক্যুমেন্টসগুলো ঠিক মত গোছগাছ করলাম। সঞ্চয় আমাকে যথেষ্ট সাহায্য করলো।

হ্যারিকো থেকে যে কপিটার প্রিন্ট খারাপ হয়েছিল সেটাকে নতুন করে করতে দেওয়ার ভার সঞ্চয়কে দিলাম। সোমবারফেব্রুয়ারী ১৭১৯৭৫ সকালের দিকে অফিস যাওয়ার সময় ওটা হ্যারিকো-তে দিয়ে দিতে বল্লাম নতুন কপির জন্য। গল্পগুজব করে সঞ্চয়কে বিদায় জানালাম রাত দশটায়।

সোমবার ৮-৩৬ এর হাবড়া লোক্যালে বেরিয়ে পড়লাম। ট্রেণের গোলমালে বেশ সময় নষ্ট হল। এসেই সঞ্চয়ের ওখানে খোঁজ করলাম। কিন্তু নিজেই দেরীতে আসার ফলে সঞ্চয় হ্যারিকোতে যেতে পারে নি। আমার নথিপত্র সঞ্চয়ের কাছে রেখে আমিই হ্যারিকোয় গেলাম ফটোস্ট্যাটের জন্য। তারপর আমার অফিস।

সোমবার অর্থাৎ ফেব্রুয়ারী ১৭১৯৭৫ অফিসের কাজের শেষে হেঁটেই সঞ্চয়ের অফিসে চলে এলাম। কিছুক্ষণ গল্পগুজব সেরে চা-টা খেয়ে সঞ্চয়কে নিয়েই হ্যারিকো-তে চলে গেলাম। ফটোস্ট্যাট কপিখানা ডেলিভারী নিয়ে আগামীকালের অর্থাৎ ফেব্রুয়ারী ১৮১৯৭৫ মংগলবার কনস্যুলেটে আমার ইন্টারভিউ সম্পর্কিত প্রোগ্রাম ঠিক করছি। ট্রামের মধ্যেই আমি ও সঞ্চয় মংগলবারের কাজ ঠিক করে নিলাম। আর্গোসিতে বলেই এসেছিলাম সোমাবার রাতটা পাইকপাড়াতেই কাটাবো। সঞ্চয়কে আবার নতুন করে বলে দিলাম খবরটা আর একবার আর্গোসিতে জানিয়ে দিতে। প্রোগ্রাম স্থির হল;

সঞ্চয় সকাল ৮-১৫ র মধ্যে কনস্যুলেটে আমার জন্য অপেক্ষা করবে। আমি পাইকপাড়া থেকে বেরিয়ে ৮টার মধ্যে ওখানে ওঁর সংগে দেখা করব। এসপ্ল্যানেড থেকে ১২ নং ট্রামে চেপেছিলাম। সঞ্চয় শিয়ালদায় নেমে গেল। আমি চললাম সোজা শ্যামবাজার। ওখান থেকে বাসে উঠে পাইকপাড়ায় বড়মামার বাসায় পৌঁছাতে রাত ৮-২০তারপর বিশ্রামগল্পগুজব করে শুতে শুতে রাত ১১টা। সহজে ঘুম আসছিল না। আগামীকালের উত্তেজনায় ভিসার ইন্টারভিউ প্রসংগে। মনে নানারকম প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছেজানি না ইন্টারভিউ কেমন হবেঠিকমতো ইংরেজিতে প্রকাশ করতে পারব কিনা ইত্যাদি ভাবছি।

খুব ভোরে প্রায় ৬-৩৫ নাগাদ ঘুম থেকে উঠে পড়লাম। আজ মংগলবার ফেব্রুয়ারী ১৮১৯৭৫। আমার ভিসার ইন্টারভিউ । খুব সকাল সকাল স্নান-খাওয়া সেরে ৭-৩৫ নাগাদ পাইকপাড়া থেকে বেরিয়ে পড়লামএকটা কথা বাদ পড়ে গিয়েছে। ইন্টারভিউ দিতে যাব। তাই ধার করেছি সঞ্চয়ের কোটকারণ আমার নিজের কোন কোট নেই। এ ছাড়া নেকটাই বাঁধবার ট্রেনিংও সঞ্চয়ের কাছ থেকে শেখা। তাই গত এক সপ্তাহ ধরে টাই বাঁধার ট্রেনিং নিয়েছি। একটু অসুবিধা হচ্ছিল নিজের অনভিজ্ঞতার জন্য।

বড়মামার একখানা টাই ও সঞ্চয়ের কোট পরে প্রস্তুতি নিলাম ভিসার ইন্টারভিউ-এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যাগে ভরে কোট-টাই পরে (প্যান্ট-টা অবশ্য আমার নিজের ছিলসকাল ৭-৩৫ নাগাদ পাইকপাড়া ত্যাগ করলাম। সামনেই ৩সি বাস ধরে এসপ্ল্যানেডবাস বদল করে কনস্যুলেট অফিসে পৌঁছাতে ৮-৪৫ মিঃ । ওয়েটিং রুমে ঢুকতেই দেখিসঞ্চয় আমার জন্য অপেক্ষা করছে। ও হাবড়া থেকে এসেছে কত সকালে ভালমত খায়ওনি হয়ত।। নিজেরই লজ্জা লাগছিল ওকে অহেতুক কষ্ট দেওয়ার জন্য। এজন্য সঞ্চয় অবশ্য কিছু মনে করে নি। কনস্যুলেট গিয়ে FS 571 ফর্ম জমা দিলাম ঠিক ৯-৪৫ । ওয়েটিং রুমে আমি ও সঞ্চয় অপেক্ষা করছি। সকাল ১১ টায় আমার ইন্টারভিউ। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।

সঞ্চয় এবং আমি নিজের নিজের অফিসে গতকাল বলে এসেছিলাম আজ অর্থাৎ মংগলবার অফিসে আসতে দেরী হবে। আমরা অপেক্ষা করছি। হাঁ করে বসে আছি কখন ডাক পড়বে। ঘড়ির কাঁটায় তাকিয়ে দেখি সাড়ে এগারোটাঅথচ এখনও ডাক পড়লো না। বিদেশীদের সময়জ্ঞান অত্যন্ত টনটনেআমিও বুঝছি না কেন এই ব্যতিক্রম হচ্ছে। ইমিগ্রেশ্যান সেকশনে গিয়ে খোঁজ নিলাম।

-সরিমিঃ রেইটস দি মিস্টেক। ওয়েট ফর এ হোয়াইল প্লিজআই উইল কল ইউ

মিঃ গ্যান্টি বল্লেন।

কিছুক্ষণ পরেই ঠিক দুপুর বারোটায় আমার ডাক পড়লো। আমার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রবাহী ব্যাগ ও আনুসঙ্গিক জিনিষ সঞ্চয়ের কাছে রেখে ওয়েটিং রুমে ওকে অপেক্ষা করতে বল্লাম।

আমি ঢুকলাম ইমিগ্রেশান ভিসা অফিসেমিঃ নায়ারের চেম্বারে।

-মর্নিংমিঃ নায়ার

-থ্যাঙ্কইউপ্লীজ বি সীটেডইউ আর মিঃ হিল্লোল রে?

-ইয়েস

-গিভ মী অল দি ডক্যুমেন্টস । (মিঃ নায়ার হচ্ছেন পার্সোনাল এ্যাসিস্ট্যান্ট টু আমেরিকান কনসালমিঃ জোসেফপিনিল্)

আমি সব কিছু সমর্পণ করলাম। মিঃ নায়ার একটা ফর্মের উপর আমার সমস্ত আঙুলের ছাপ এবং হাতের তালুর ছাপ নিলেন। তারপর সাবান দিয়ে হাত ধুতে বল্লেন। হাত ধুয়ে ফিরে এলাম। একগাদা ফর্মে সই করতে হল ভীষণ তাড়াতাড়ি।


আমি সব কিছু সমর্পণ করলাম। মিঃ নায়ার একটা ফর্মের উপর আমার সমস্ত আঙুলের ছাপ এবং হাতের তালুর ছাপ নিলেন। তারপর সাবান দিয়ে হাত ধুতে বল্লেন। হাত ধুয়ে ফিরে এলাম। একগাদা ফর্মে সই করতে হল ভীষণ তাড়াতাড়ি।

প্রাণ মন করেছি সমর্পণ-

ফর্মগুলো এত তাড়াতাড়ি পূরন করে সই করতে হল যেওগুলো আমার পড়বারই সময় হয় নি। মিঃ নায়ার বল্লেন,

-প্লীজ গিভ মি রুপিজ ফর্টি দ্যাট ইকুয়্যাল টু এইট ডলারস।

আমিও সংগে সংগে চল্লিশ টাকা বার করে দিলাম। তখনও আমার ভিসা পাব কিনাএতগুলো টাকাপ্রচেষ্টা জলে যাবে কিনা ইত্যাদি মনে মনে ভাবছি। এই চল্লিশ টাকা হল ভিসার রেজিস্ট্রেশন ফি।

তারপর বললেন,

-গিভ মি রুপিজ হান্ড্রেড এ্যান্ড সিক্সটি দ্যাট ই ইকুয়্যাল টু টোয়েন্টি ডলারস।

সংগে সংগে দিয়ে দিলাম। প্রতিটা মুহূর্ত্ত বেশ উত্তেজনার মধ্যে কাটাচ্ছিভিসা পাব কী না ইত্যাদি। ভাবছি আমার সমস্ত ডক্যুমেণ্টস দেখার পর মিঃ নায়ার কয়েকটা প্রশ্ন করলেন স্পনসর সম্পর্কেঃ

-হোয়াটজ ইওর রিলেশানস উইথ ডঃ নিয়োগী ?

-হি ইজ মাই মেটারনাল আঙ্কেল

-হাউ লং ডু ইউ নো হিম?

-সিনস মাই চাইল্ডহুড

ব্যসআমার ইন্টারভিউ হয়ে গেল।। আমেরিকান কন্সাল মিঃ জোসেফপিনীল এলেন নাএমন কি কোন প্রশ্ন কিংবা খোঁজখবর করেন নি। সমস্ত ডক্যুমেন্টস ভেরিফাই করে ওগুলো রেখে দিলেন মিঃ নায়ারঃ

-প্লীজ কাম ব্যাক অন মনডে ফেব্রুয়ারী ২৪১৯৭৫ এ্যাবাউট যাট ফোর পি.এম টু কালেক্ট ইওর ভিসা

আনন্দের সংগে বীরদর্পে বেরিয়ে পড়লাম কন্সোলেট অফিস থেকে ঠিক একটা পয়ত্রিশ মিনিটে।

জ্বলদর্চি অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন।👇

সঞ্চয়কে ওয়েটিং রুম থেকে ডেকে নিলাম। সমস্ত ঘটনা খুলে বল্লাম। দুজনের মুখেই সাফল্যের হাসিউত্তেজনার শিহরণ চোখে মুখে। ওখান থেকে বেরিয়ে ট্রাম ধরে এসপ্ল্যানেড ।

ক্ষিদেয় তখন পেট চুঁই চুঁই করছে। সঞ্চয় হাবড়া থেকে খুব ভোরে ৫-৫৮ এর ট্রেণ ধরে এসেছে আর আমিও উত্তেজনায় খেয়ে আসতে পারি নি ঠিকমত।

এসপ্ল্যানেডে ফিরে দুজনেই একটা ছোটখাট নামহীন হোটেলে ভাত-ডাল-তরকারী খেয়ে নিলাম। একটু বিশ্রাম করে আমার ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সঞ্চয় ওর অফিসে ফিরে গেল দুপুর ২টোয়। এবং আমি আমার অফিস পৌঁছালাম ২-৩০ টায়।

অফিসের গতানুগতিক কাজ সেরে আমি পাইকপাড়াতেই ফিরে গেলাম। সঞ্চয়কে আমার সাফল্যের খবর আর্গোসিতে পৌঁছে দিতে বল্লাম। সঞ্চয় বল্লোঃ

-তথাস্তু!

রাতটা গল্পগুজব করে কেটে গেল। বেশ ভালই লাগছিল পাইকপাড়া ফিরে গিয়ে।

পরদিন অর্থাৎ বুধবারফেব্রুয়ারী ১৯১৯৭৫ ভোর ৬-৪৫ এ উঠলাম পাইকপাড়ার বড়মামার বাসায়। ওখান থেকে সকাল ১০-৪০ নাগাদ বেরিয়ে সোজা আমার অফিস উপস্থিতি ঠিক বারোটায়। সঞ্চয়কে বল্লাম শান্তিমামার কাছ থেকে যে ৩০টাকা ধার নিয়েছিলাম গত শনিবারসেটা শোধ দিয়ে দিতে। অফিস ছুটির পরে ওকে ওর অফিসে অপেক্ষা করতে বল্লাম টেলিফোনে। ওর সঙ্গে দেখা হলো বিকেল ৫-৪০।

তারপর ট্রাম -ট্রেণ করে ফিরে গেলাম হাবড়ায় রাত ৮-৩৫। শারীরিক ক্লান্তি আমার পুরোমাত্রায়।

পেলাম খেতাব হাতেনাতেঅট্টহাসি দিনে রাতে

ফেব্রুয়ারী ২০২১২২২৩ এই চারটে দিন গতানুগতিক অনুল্লেখ্যভাবে কেটে গেল। দিন গুনছি। ফেব্রুয়ারী ২৪১৯৭৫ সোমবার ৮-৩৬ এর হাবড়া লোক্যালে বেরিয়ে পড়লাম। সোজা আমার অফিসঠিক এগারোটায়। ঠিক করেছিআজ একটু বেরুবো অর্থাৎ সাড়ে তিনটে নাগাদ। কথামতই কাজ।

অফিস থেকে ৩-১৫ নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম। ২৯নং ট্রাম ধরে সোজা প্ল্যানেটোরিয়ামের সামনে নামলাম। ওখান থেকে হেঁটে কনস্যুলেট অফিস।

ভিসার জন্য যে টাকা জমা দিয়েছিলাম তার ক্যাশমেমো দেখাতেই ইমিগ্রেশ্য্যান সেকশান থেকে মিঃ গ্যান্টি আমার ভিসা দিয়ে দিলেন। সেই সংগে এয়ারলাইন্স এর কিছু কাগজপত্র ভাড়া সম্পর্কে । মিঃ এস.পি সিনহা (ট্রাভেল এজেন্টএখানে আমার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অভিনন্দন জানালেন মিঃ সিনহা। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললাম। আমার এতদিনের প্রচেষ্টা আজ সফল হল।

ভিসা পেলাম ফেব্রুয়ারী ২৪১৯৭৫ সোমবার বিকাল ৪-০৫ মিঃ। আনন্দে অধীর তখন আমি। গত জুন ১৭১৯৭৪ থেকে ভিসা পাবার জন্য এক নাগাড়ে ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফসল আজ ঘরে তুলছিভাবতেই ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। সিনহাকে বিদায় জানিয়ে ট্রামে চেপে এসপ্ল্যানেড চলে এলাম। এখন কাজ হল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ক্লীয়ারেন্স সার্টিফিকেট জোগাড়। মিঃ সিনহার কথামত হ্যারিকো -তে ভিসার ফটোস্ট্যাট কপির অর্ডার দিলাম। সাতেরো টাকা বিল হল। চার টাকা এ্যাডভান্স দিয়ে ক্যাশমেমো নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। সঞ্চয়ের অফিসের দিকে।

ভারতীয় মানক সংস্থায় ঢুকতেই একের পর এক অভিনন্দন পাচ্ছি। বিভিন্ন কর্মী বিভিন্ন ভাবে আমাকে উৎসাহ জানাচ্ছেন। আনন্দের ডালি উপহার দিচ্ছেন। সবাই খুশী। খুশী আমিও। উৎসাহ -আনন্দ সবার সংগে বিনিময় করছি। বেশ ভাল লাগছে। মনে হচ্ছেআমার এই সাফল্যের জন্য যেন ওরাও অধীর আগ্রহে দিন গুনছিলেন।

ভিসাখানাকে একখানা বড় কাগজে আদ্যোপান্ত মুড়ে নিলাম কারণ বাসে ট্রামের গুঁতোগুঁতিতে যাতে নষ্ট না হয়ে যায়। শিয়ালদা থেকে বিকাল ৬-৫২ ট্রেণ ধরে হাবড়ায় পৌঁছালাম রাত ৮-৩০। সবার মুখেই হাসিআনন্দোচ্ছ্বাস। সঞ্চয় সমস্তক্ষণ আমার সংগে ছিল। ওর উৎসাহ অনুপ্রেরণাও আজ বাস্তবায়িত হল। সঞ্চয় গর্বিতসেই সংগে আমি ও। হঠাৎ সঞ্চয় আর্গোসির বাড়িতে ঢোকার মুখে আমার দিকে তাকিয়ে একটা চোখ মেরে দিল...আমি অবাক হয়ে ওকে দেখছি দেখে ও বল্লঃ

-জানিস আজকে আমাদের অফিসের প্রিয়দর্শিনী রমা সেন হঠাৎ তোর সম্বন্ধে আমাকে জিগেস করছিল।

-কি?

-তুই রাগবি না বল?

-নাআজ আমার আর কোনো রাগ নেই...

-মিস সেন আমাকে তোর সাথে আলাপ করিয়ে দিতে বলছিলওর চোখে মুখে কেমন যেন একটা ভালবাসার আভাস দেখতে পেলাম। অবশ্য একজন তো প্রতীক্ষা করে আছেকি বলবলে আমাকে একটা জোর রাম চিমটি দিল। দিয়েই বলেঃ

-এত লাল হয়ে যাচ্ছিস কেনআগে তার সঙ্গে দেখা হোক!

-সেই ওপেন মিক্সিং দেশে যাবার আগেএই রমার সাথে একটু হিড়িক মেরে নিবি নাকিআমি না হয় সে সব ব্যবস্থা করে দেবো। কাক -পক্ষীও জানবে না।

-ধ্যাৎকি যে বলিস!

-আচ্ছা তাহলে সেই(?) তাকেই না হয় খবর দি?

-আগে সব ব্যবস্থা হোকতারপর। এখনও আমি নিশ্চিন্ত নই।

ভিসা পাবার পর এখন পরিকল্পনা নিতে হবে আর কি কি করণীয় আছেপ্লেনের ভাড়া ইত্যাদি। মংগলবার ফেব্রুয়ারী ২৫১৯৭৫ সকাল -৩৬ এর হাবড়া লোক্যালে এসে আয়কর ভবনে শান্তিমামার সংগে দেখা করলাম।

আবার অভিনন্দন পেলামশান্তিমামার ওখান থেকে ১১-৪৫ নাগাদ বেরিয়ে আমার অফিস সেরে বিকাল ৫-০৫ নাগাদ হ্যারিকো থেকে বাকী ৩ টাকা দিয়ে আমার ভিসার ফটোস্ট্যাট কপি ডেলিভারী নিলাম।

ক্রমশ

Post a Comment

0 Comments