কয়েকটি কবিতা
বাসুদেব গুপ্ত
হাঁউমৌচৈ
বুড়ো বুড়ো ব্যাং
বোকা বাঁকা ঠ্যাং
উঁচু ডালে বসে নেড়ে যায়
আ হা হা হা।
মাথা মাথা চৌ
গাদা গাদা মৌ
স্ট্রং ষ্ট্র দিয়ে শুষে খায়
আ হা হা হা।
নড়বড়ে হাত
ব্রেনে গেঁটে বাত
দাঁড়িপাল্লা রায় বেচে যায়
আ হা হা হা।
মোটা মোটা ফোন
পেটে জনগণ
ইন্টৈরভিউ দিতে যায়
আ হা হা হা
বুড়ে বুড়ো ব্যাং
মাথা মাথা চৌ
নড়বড়ে হাত
মোটা মোটা ফোন
সারা দিনরাত নেচে যায়
গাড়ীচাপা পড়া শিশুটির মা কেঁদে যায়
না না না না
আ হা হা হা।
কথা হবে
কথা বলতে যেও না
গলা মুচড়ে দেবে
জিভ টানবে ছিঁড়ে
দাঁত উপড়ে নেবে
গান গাইতে যেও না
গীটার মুচড়ে দেবে
সেতার টানবে ছিঁড়ে
কীবোর্ড উপড়ে নেবে
ভালোবাসতে যেওনা
বুকে ঢালবে আগুন
চোখে ঢালবে এসিড
ঠোঁটে ছোবল দেবে।
সেই মেয়েটা সেই ছেলেটা
খেলতে খেলতে ছুটতে ছুটতে
মায়ের কাছে শিখলো
বাবার কাছে শিথলো
গর্তে ঢুকে থাকতে হবে যদিও মানুষ
বোবা হয়ে থাকতে হবে যদিও মানুষ
অন্ধকারে ইঁদুর হয়ে ছুঁচোর মত
নোংরা তেলাপোকার মত থাকতে হবে।
গল্প এমন শুরু হলেও শেষটা মজার
মানুষ হতে পারলো না তাই বিছে হল
গান গাইতে পারল না তাই জিভ চিরলো
ভালোবাসতে পারলো না তাই বিষের থলি
ঝুলিয়ে পিঠে দাঁড়িয়ে আছে পথের ধারে
আসবে কখন সেই নেতারা যাদের আইন
কথা বলতে দেয়নি
গান গাইতে দেয় নি
ভালোবাসতে দেয় নি
কথা হবে
ফন্দী
আলস জল। ভাসিয়ে দাও এবার
সাংগ কাল। দেবার আর নেবার
নামছি পথে । পিছনে যারা বসে
কাঁপায় আলো । অন্ধকারের কোষে
গেলাসে আধা । আধেক থাক চোখে
চলকে পড়ে। স্তব্ধ হওয়া শোকে।
পাগল হাসি। ঝর্ণা হলো ভেঙে
নদীতে ঝাঁপ । পাহাড় এলো নেমে ।
ভাসছে জল । ডুবছে সেও জল
সীমানা নেই । সব কিচ্ছু টলোমল
সূর্য নেই । চন্দ্রও নেই মোহনায়
ত্রস্ত মাটি । মরবে কিনা দোটানায়
সেখানে তুমি । এখানে আমি বন্দী
জীবন জানি । পুতুল নাচের ফন্দী ।
🍂
অদেখা বৃষ্টি হবে নদী
অদেখা বৃষ্টির মাসে শুধু
চোখের পাতায় এলো বর্ষা
চোখের দুকূল যায় ভেসে
আকাশ হোক না পুড়ে খাক
বালকের মুন্ডু নিয়ে অলিম্পিকে নতুন খেলা হোক
কে আগে দৌড়তে পারে ন্যাংটো বুড়ো মাগী
না রাষ্ট্রের তুমুল ভাষাবিদ মিষ্টি বৈরাগী
আগুন হাঁটতে শুরু করে
কেউ আটকাবার নেই সস্তা নয়
তবুও পেট্রল ছুঁড়ে ক্যাম্পফায়ার ভারী হয়ে ওঠে
হাওয়া ঘোরে মাথায় পোড়ানো মানুষের ধোঁয়া
দুঃখের পুটুলি বয়ে চিন্তাশীল সাবধান মন
ফোনে বা হোয়াটসাপে তাও সন্তর্পণ
অথবা নেহাতই উদাসীন।
কত লোক রোজ মরে যায়
প্রকৃতির নিয়মে সেকি আমাদের দায়?
আকাশে গন্ধ ভাসে পচা মানুষের
অলিম্পিকে রাষ্ট্র রোজ নতুন মেডেল পোডিয়ামে
অদেখা বৃষ্টি শুধু
চোখের পাতায় ঝরে জল
দেশের চোখের জল জমে জমে ভয়ংকর নদী হতে থাকে।
ক্ষমা
ক্ষমা
এখন ঘাসের পাশে
আমার শরীর একা শুয়ে আছে আলোর আহার
এখনো তোমার চাই কিছু?
এসেছ এ প্রান্তিকে আমার ছায়ার পিছু পিছু?
নিয়েছ আমার দিন কলাপাতা মোড়া আগুন মাখিয়ে
স্বপ্ন ছিল সূতোবাঁধা হলুদ শিউলিরসে লেখা
ছিল আশা একবার দেখে যাবো পাপহীন তোমার কনীনিকা
একদিন দেখে যাবো মাংসের টুকরোহীন হাসি
একদিন আন্দোলিত বৃষ্টি ঝরা দিনে
কারো হাত মকরন্দ হবে, হোক তার চন্চল যত
একটি মুহূর্তে জন্ম নেবে প্রেম
যার কোন জি এস টি নেই
যার কোন ঘুষ নেই মিথ্যেকুসুম নেই
দাওনি কেবল কাঁচ ছড়িয়ে দিয়েছ সেই রক্তমাখা পায়ে
প্রবেশ দাওনি সভাস্থলে
ভাসিয়ে দিয়েছ যত খেলার পুতুল ছিঁড়ে খুঁড়ে
এখনো মেটেনি খিদে আরো কিছু আছে এই হাড়ে
আরো কিছু প্রোটিন কামড়ে নিতে চাও অনিন্দ্য ও দাঁতে?
আর কিছু নেই শুধু দিলাম তোমায়
শেষ সম্বল এই ক্ষমা দিলাম তোমায়
হয়ত অমৃত হবে কোনদিন কাকভোরে আহীর ভৈরব
তোমারও হৃদয় ছুঁয়ে দেবে
ঘাসের আন্দোলনে চিনে নিও ক্ষমা
করে গেছে একদিন মণিপুরে কারো দীন শব ।
0 Comments