জ্বলদর্চি

যেতে যেতে পথে-৯২/রোশেনারা খান

যেতে যেতে পথে

রোশেনারা খান

পর্ব ৯২

 বাইরে বের হওয়া বারণ, তবুও আজ UBI ব্যাঙ্কে গেছলাম জয়েন্ট  একাউন্টটা ক্লোজ করে আমার নামে নতুন  একাউন্ট খোলার জন্য। কিন্তু ম্যানেজার বললেন, ‘আপনার টাকা তুলতে যখন অসুবিধা নেই তখন কেন এত ঝামেলার মধ্যে  যাবেন? থাকনা যেমন আছে।ঝামেলা হলে তখন দেখা যাবে’। ঝামেলা একটা হবে জানি, তবে পরে। যাইহোক ওনার কথা শুনে ফিরে এলাম।

     এক এক করে সব বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কী আবস্থা দাঁড়াবে জানিনা। পেনশন অফিসে গিয়ে দেখি, একজন মাত্র স্টাফ দরজা ভেজিয়ে বসে আছেন। তিনি জানালেন, ৩১ মার্চ পর্যন্ত অফিসের কাজ বন্ধ।আমি যে কাজের জন্য এসেছিলাম, সেটা পিছিয়ে গেল। এদিকে শুনছি সব্জি বাজার বন্ধ হয়ে যাবে। অনেক জিনিসের সাপ্লাই বন্ধ হয়ে গেছে। সামনের রবিবের প্রাধানমন্ত্রী সমগ্র দেশে কারফিউ জারি করেছেন। সকাল ৭ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না।

     এরাজ্যে আজ প্রথম একজন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর ছেলে বউমা কিছুদিন আগে ইতালি থেকে এসেছিলেন। ভদ্রলোকের দেহ বাড়ির লোক নিতে চাইছেন না। কলকাতা সহ সমস্ত জেলায় লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কয়েকটি দোকান খোলা থাকবে। রহিমাকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ছুটি সবেতন ছুটি দিয়েছি। চিন্তা যেমন মেয়ে জামাই আর নাতনিকে নিয়ে, তেমন  আক্রান্তদের নিয়েও। দীপকে ফোন করে জানলাম, বাবলি চাকরি ছেড়ে দেবে। আর ওকে চেলটেনহাম ও সুইন্ডন দুই জায়গার হাসপাতালের অপারেশনের দায়িত্ব নিতে হবে। ডাক্তারদের কোনো ছুটি নেই। জারা বাড়িতেই পড়াশোনা করছে।যদিও স্কুল ডাক্তারদের ছেলেমেয়েদের সারাদিন স্কুলে রাখার দায়িত্ব নিয়েছে।

     আমাদের দেশে, রাজ্যে লক ডাউনের সময়সীমা বেড়েই চলেছে। আমি দিনমজুর ও অন্যান্য খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর কথা ভাবছি। সরকার নাকি তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করবে। চিন্তার বিষয় হল, সেই সুবিধা কি সবার কাছে পৌঁছাবে? আমার বাড়ির কাছাকাছি ২/১ জন থাকলে অন্তত একবেলা করে  খাওয়াতে পারতাম।পরিস্থিতি দেখে ভাবছি, খান সাহেব ভাল মানুষ ছিলেন বলেই  ভাল সময়ে সম্মানের সঙ্গে চলে গেছেন। এই সময় হলে কেউ আসতে পারত না, আসতে চাইত না। মেয়েটাও আমার শেষ বারের মত বাপির মুখটা দেখতে পেত না।
🍂
আজ মনি খড়গপুর যাওয়ার সময় কিছু সবজি ও মাছ দিয়ে গেছে। ও প্রতি শনিবার বাইকে যাতায়াত করে। তাই প্রতি সপ্তাহে কিছু না কিছু দিয়ে যেতে পারছে। চন্দ্রিমাও পাঠাচ্ছে। জাস্টিস অশোক গাঙ্গুলি আজ ফোন করে খবর নিচ্ছিলেন। ভারতীদিও ফোন করেছিলেন। ফয়জল ফোন করেছিল। যারা আন্তরিক তাঁরা সবসময়ই খোঁজ খবর রাখছেন।

     লাফিয়ে লাফিয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আমেরিকার নিউইয়র্কে প্রচুর মানুষ আক্রান্ত, মৃতের সংখ্যাও অনেক। চীনকে ছাড়িয়ে গেছে। ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত। আমাদের দেশে কেরালা এগিয়ে। তারপর মহারাষ্ট্র।বাবলিদের নিয়ে ভীষণ চিন্তায় আছি। কারো সঙ্গে কোন কথা সেয়ার  করতে পারছি না। ভীষণভাবে খান সাহেবের অভাব বোধ করছি। দেশে দেশে মৃত্যুর মিছিল চলছে।আমাদের দেশের রাজনইতিক দলের নেতা নেত্রীরা এই মারণ রোগ নিয়েও নোংরা খেলায় মেতেছে। যানবাহন বন্ধ, তাই যে যেখানে ছিলেন,  সেখানেই আটকে পড়েছেন। দিল্লীর একটি মসজিদে ধর্মসভাতে যোগ দিতে দেশের ও বিদেশের কিছু মুসলিম একত্রিত হয়েছিলেন। এটা প্রতি বছরই হয়। এদের মধ্যে কিছু মানুষ স্বস্থানে ফিরে যাওয়ার পর, ধরপাকড় শুরু হয়েছে। বলা হচ্ছে ওদের নাকি পারমিশন ছিল না। কী হাস্যকর কথা। পারমিশন না থাকলে বিদেশের মানুষগুলো  এলেন এবং ফিরে গেলেন কী ভাবে? জমায়েতের সময় ধরপাকড় না করে তাঁরা যখন নাগালের বাইরে চলে গেছেন, তখন ওঁদের টনক নড়ল? এথেকেই বোঝা যাচ্ছে আমাদের নিরাপত্যা ব্যবস্থা আসলে ‘ফোসকা গেরো’। এটা নিয়ে একটা আর্টিকেল লিখব ভাবছি।

     আজ জারার জন্মদিন, ওকে ফোন করলাম। ওদের নিয়েই আমার বেশি চিন্তা।ওরা অসুস্থ হলেও আমাকে জানাবে না, চিন্তা করব বলে। দীপের অপারেশনের  সময় এই কারণে জানায়নি। খবরে শুনলাম এপর্যন্ত বৃটেনে ২৫০০, আমেরিকায়  ৫০০০, ইতালিতে ১৩০০০ মানুষের করোনাতে মৃত্যু হয়েছে। খবর শুনতে ভয় করে এখন। আজ(৩/০৪/২০) প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেছেন ৫ এপ্রিল রাত ৯টা থেকে, ৯ টা ৯মিনিট পর্যন্ত বাড়ির সব আলো নিভিয়ে দিয়ে প্রদীপ,  মোমবাতি, নিদেনপক্ষে সেলফোনের আলো যেন জ্বেলে রাখা হয়। এসব শুনে হাসব না কাঁদব ? ভেবে পাইনা। করোনা আক্রান্ত দেশগুলির কোথাও রোগ নিয়ন্ত্রণের খবর নেই। তবে শুনছি ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়েছে। 

   ফোন করে আনেকেই বাইরে বের হতে নিষেধ করছেন। বয়স্কদের সংক্রামণের সম্ভাবনা বেশি হলেও আমাদের দেশে ৬০ এর ওপরে যাদের বয়স, তাঁদের  সংক্রামণের হার ১৭% মাত্র। তুলনায় পুরুষরা বেশি আক্রান্ত। কারণ তাঁদের বাইরে বের হতে হচ্ছে। কিছু মানুষের ঋণ কোনদিন পরিশোধ করতে পারবনা। চন্দ্রিমা এদের মধ্যে পড়ে না। তার স্থান অন্য জায়গায়। আজ সকালেই ফয়জল রাজাবার থেকে মাছ কিনে কাটিয়ে দিয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে সৌনক আসে বাইরে থেকে দেখা করে চলে যায়। কখনো খালি হাতে আসে না, ফল, মিষ্টি, চিকেন, নিয়ে আসে।

     আজ সপ্তর্ষি ফোন করে ছিল। গ্লোকাল হাসপাতালে কোন একটা বড় দায়িত্বে ছিল। সম্ভবত মার্কেটিং এ, এখন হায়দ্রাবাদে একটি আমেরিকান কম্পানিতে আছে। খান সাহেবের খবর শুনে দুঃখপ্রকাশ করল। একথাও বলল  ‘আপনি যা করেছেন, তা আজকালের দিনে খুব কম স্ত্রীই করেন’। অনেক কথার মাঝে বার বার কেন জানিনা আমাকে রাজনীতিতে যোগ দেবার কথা বলছিল।

    অনেকেই করোনা ও লক ডাউন নিয়ে লেখা চাইছেন। বেশ কয়েকটা লিখে পাঠিয়েছি। আজ ১লা বৈশাখ।কত কথা মনে পড়ছে, নিজের ছোটবেলার কথা, ছেলে মেয়ের ছোটবেলার কথা। তখন অভাব থাকলেও অনেক শান্তি ছিল, সুখও ছিল।এদিকে  কেন্দ্র আর আমাদের রাজ্যের সঙ্গে মৃতের পরিসংখ্যান নিয়ে তর্জা চলছে। তবে মৃতের সঠিক পরিসংখ্যান জানানো হচ্ছে না। যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়েছে, তারা ঘরে ফিরতে পারছে না। তাদের পরিবারের অবস্থাও সঙ্গিন।

    মানুষ তার বোধ বুদ্ধি হারিয়ে ফেলছে।ডাক্তার, পুলিশদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে, মারধোরও করছে। তাঁদের নিজেদের বাড়িতে তাঁরা ঢুকতে পারছেন না। কোন কোন গ্রামে মৃতদেহ সৎকার করতে দিচ্ছে না, তা সে যেভাবেই মৃত্যু হোক না কেন। ‘আন ফোলড’ এ একটা লেখা দিয়ে ছিলাম, অনলাইনে আজ প্রকাশিত  হয়েছে। লেখাটা লিখে যেমন শান্তি পেয়েছি, তেমন পাঠকদেরও খুব ভাল লেগেছে। ‘আজকাল’ একটা লেখা অনেকদিন ধরে ঝুলিয়ে রেখেছে। যাই হোক কোনও ভাল খবর নেই। সম্রাটের জন্য খুব মন খারাপ হয়, কাউকে কিছু বুঝতে দিই না। বাচ্চা ছেলের মত হয়ে গেছলেন। আমার তাই মনে হত। সেভাবেই মাথায় হাত বুলিয়ে দিতাম। চামচ দিয়ে খাইয়ে দিতাম,স্নান করিয়ে দিতাম। একটু আড়াল হলেই ডাক দিতেন, ‘বেবি, ও বেবিইইই। এখনো সে ডাক আমার কানে বাজে। আজ বাবলি ভিডিও কল করেছিল, সবাই সুস্থ আছে দেখে শান্তি পেলাম। খোকন ফোন করেছিল।

     এপ্রিল মাস শেষ হতে চলেছে, বিকেলে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। এবার খুব একটা গরম পড়েনি। মাঝে মাঝেই বৃষ্টি হচ্ছে। শোনা গেছল, গরমে করোনা ভাইরাস  ধ্বংস হয়ে যাবে, সবই রটনা। যে যা খুশি বলছে, কিছু মানুষ বিশ্বাসও করছে। তবে খবরে প্রকাশ, ইংল্যান্ডে আজ পরীক্ষামূলক ভাবে কয়েকজনের শরীরে ভ্যাকসিন পুস করা হয়েছে। রেজাল্ট কী হবে? কে জানে।

     আজ লিখতে বসতে সময় পাইনি। মাসে একটা লেখা প্রকাশিত না হলে ভাল লাগে না, লেখায় মন বসে না। এমনিতেই সব এলোমেলো হয়ে গেছে। আর গুছিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, তা তো কোন কিছু দিয়েই পূর্ণ করা সম্ভন নয়। একটা অন্য কারণে মনটা খারাপ হয়ে গেল। আজ একটা লেখা ‘আজকাল’এ পাঠিয়ে জানতে পারলাম, আগের লেখাটা বেরিয়ে গেছে। আমাকে ওরা জানায়নি। এখন এই লক ডাউনের সময় কোথায় পুরনো পেপার পাব? আগে আমার গুগুল সার্চ করে পেয়ে যেতাম। কেন জানি না আজ পাওয়া যাচ্ছে না।  ‘আজকাল’ রাখছিলাম, করোনার কারণে ব্যালকনিতে কয়েকদিন পড়ে থাকার পর  হাতে নিতাম। অনেক কাগজ হারিয়েও গেছে। অনেক খোঁজ করেও লেখাটা পেলাম না। যাক, জীবন থেকে কত মুল্যবান জিনিস হারিয়ে গেছে, এ তো সামান্য লেখা।          

      রমজান মাস শুরু হয়ে গেছে, আজ প্রথম রোজা। আমি রানী দুজনেই রোজা রেখেছিলাম, কোনও কষ্ট হয় নি। শুধু ওষুধ খাওয়ার সময়টা ঠিক থাকছে না। দেখি কটা রাখতে পারি। আজ শুনছি রাঙ্গামাটিতে একজন করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। মেদিনীপুর শহরে এটাই প্রথম। ধিরে ধিরে এবার ছড়াবে। কী যে হবে জানিনা। গবেষকরা জানাচ্ছেন, করোনা থাকবে, এর সঙ্গে লড়াই করেই বাঁচতে হবে।

     গত পরশু আজকাল এ যে লেখাটি পাঠিয়ে ছিলাম, সেটি আজ প্রকাশিত  হয়েছে।ভাগ্যিস গতকাল টুটুকে বলে রেখেছিলাম, আনন্দবাজারের সঙ্গে যেন  আজকালও দেয়।তাই লেখাটি দেখতে পেলাম। পরদিন গুগুল সার্চ করেও পেলাম।তাহলে আগের লেখাটা কেন পেলাম না? বুঝতে পারছি না। এসব নিয়েই যে বেঁচে থাকা, ভুলে থাকা।

     মনি যথারীতি প্রতি সপ্তাহে  মাছ, মাংস, সব্জি দিয়ে যাচ্ছে। মানুষের বিপদের যেন শেষ নেই। ভাইজাকে বিষাক্ত গ্যাস লিক করে ১২জন মারা গেছেন। প্রচুর মানুষ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এই ঘটনা ১৯৮৪ সালে ভুপালের সেই ভয়ঙ্কর গ্যাস দুর্ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিল। ঘুমন্ত অবস্থায় কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। পালাতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়েও অনেক লোক মারা পড়ে ছিল।    

     আজ ২৫ শে বৈশাখ। বিশ্বকবির জন্মদিন, ঘরে ঘরে রবীন্দ্রজয়ন্তি পালন হচ্ছে। আর আজই ভিনরাজ্যের যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা পায়ে হেঁটেই ঘরের পথ  ধরেছে। তাঁদেরই একটি দল রাতে ক্লান্ত হয়ে রেললাইনের ওপর ঘুমিয়ে পড়ে ছিল। এই অবস্থায় একটি মালগাড়ি তাদের পিষে দিয়ে চলে যায়। ১৫ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সরকারের কাছে এদের জীবনের কোন কোনও মূল্য নেই। পায়ে হেঁটে এই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে গিয়ে অনেক মানুষ পথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। মৃত মায়ের পাশে বসে কাঁদছে অবোধ শিশু।  

     অনেক দিন ধরেই খবর পাচ্ছি মায়ের শরীরটা ভাল যাচ্ছে না। খেতে ঘুমোতে পাছেন না।আরও অনেক সমস্যা হচ্ছে। রোজা রেখে ছবিকেই সব করতে হচ্ছে। যাদের সেবা করার কথা, তারা এখানে ইদে, দুর্গাপুজোই আনন্দ-স্ফূর্তি করতে আসে। ছোট আর মেজ একদিন এসে বুড়ি ছুঁয়ে গেছে, যাতে লোক বলতে না পারে শাশুড়িকে দেখতে পর্যন্ত আসেনি।

    কবে থেকে শুনছি আমফান(ঝড়) আসছে, কোথায় আমফান? প্রচণ্ড গরম। এদিকে মায়ের শরীর খুবই খারাপ, সময় কি ফুরিয়ে আসছে? বয়সও অনেক হল,৯০ পার হয়ে গেছে। তাই হঠাৎই ঠিক করলাম, কালই মাকে দেখতে  যাব।ইদের পর যাব ভেবেছিলাম, কিন্তু তাতে যদি অনেক দেরি হয়ে যায়? ড্রাইভারকে বলে রাখলাম। পরদিন সকালে মঙ্গলাপোতা পৌঁছে মাকে দেখে খুবই কষ্ট পেলাম। শরীর বলতে শুধু হাড় ক’খানা। গলার কারণে কিছুই খেতে পারছেন না।ফেরার সময় বার বার মায়ের মুখটা দেখছিলাম ও ভাবছিলাম, এই মুখ আর দেখতে পাব তো?

     যাতায়াতের পথে অনেক পরিযায়ী শ্রমিককে পায়ে হেঁটে যেতে দেখলাম। আড়াবাড়ির জঙ্গলে একজনকে ট্রাক থামানোর চেষ্টা করতে দেখলাম।তখন সন্ধ্যা ফুরিয়ে আঁধার নেমে আসছে। রাতের অন্ধকারে জঙ্গলে অনেক রকম বিপদ ঘটতে পারে। জানিনা ট্রাকচালক তাকে সাহায্য করেছিলেন কি না। শুনছি লক ডাউন নাকি উঠে যাবে। কিছু কিছু জায়গায় দোকান বাজারও খুলছে। সরকারের হাতে নাকি টাকা নেই। সেইজন্যই তো ঢালাও মদের লাইসেন্সও দিচ্ছে। সবকিছুরই অনেকটাই দাম বেড়েছে।

       আজ আনন্দবাজারে জাকাত ও ফিতরার ওপর লেখা একটি আর্টিকেল  প্রকাশিত হয়েছে। রোজা তো প্রায় শেষ হয়ে এল, এবার কেমন ইদ হবে কে জানে। সব ধরণের জমায়েত তো নিষেধ। শুভজিত বাগচি আজ আমার কাছে মেদিনীপুরের SP রাজেশ কুমারের ফোন নাম্বার নিলেন। ওঁর সঙ্গে কিছু কথা হল। বললেন, ইংলিশ কাগজের চাহিদা নেই, বন্ধ হয়ে যাবে। কোনও কাগজই মানুষ সেভাবে পড়ে না আজকাল। আমার লেখার লিঙ্ক পাঠাতে বললেন, পাঠালাম।

     গতকাল(১৪/০৫/২০) বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামানের করোনাতে মৃত্যু হয়েছে। এমনিতে বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। এই বাংলাতেও গতকাল সাহিত্যিক দেবেশ রায়ও পরলোক গমন করেছেন। সুমন ঘোষ ওর অনলাইন সংবাদপত্রের জন্য আনিসুজ্জামাকে নিয়ে একটি লেখা দিতে বলেছিল। প্রথমে পারব না বলেও শেষপর্যন্ত লিখলাম।

   আজ সকাল থেকে বৃষ্টি শুর হয়েছিল, দুপুরে শুরু হল ঝড়। এবার গাছে খুব কম আম হয়েছে, ঝড়ে যে কটা পড়ল, বেশিরভাগই প্রাচিরের বাইরে। আমফানে  দুই বাংলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এরকম ঝড় নাকি ১৭৩৭ সালে হয়েছিল। দুই ২৪ পরগণা একেবারে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।।মেদিনীপুরের খবর কাল জানতে  পারব। গতকালের ঝড়ে শুধু পশ্চিমবঙ্গে ৮০জন মারা গেছে। এদিকে কিছু কিছু বাস ট্রেন চলতে  শুরু করেছে। এর একটাই কারণ, সরকারের কোষাগারে টাকা নেই। ব্রিটেনেও ধিরে ধিরে সব খুলছে। ওখানকার মানুষ বিধিনিষেধ মেনে চলবেন। আমাদের দেশে সে আশা করা বৃথা।

Post a Comment

0 Comments