জ্বলদর্চি

বিশ্বজিৎ অধিকারী ও শিশির পাল-এর অণুগল্প

বিশ্বজিৎ অধিকারী ও শিশির পাল-এর অণুগল্প 

ছায়া
বিশ্বজিৎ অধিকারী

মাঝরাস্তায় খোয়া ভাঙার কাজ চলছে। ঘরবাড়ি তো দূর একটা বড় গাছও নেই আশেপাশে। কাজের বিরতিতে ডালাওলা ট্রাকটারের একপাশে লেপটে থাকা আওতায় মাথা গুঁজে বসে জল খাচ্ছে কয়েকজন। 
কিছুদূরে, যেখানে ডাঙ্গা ঢালু হয়ে জমিতে মিশেছে, বেঁটে ঝোপঝাড়। তারই সামান্য ছায়ায় বিছিয়া রাখা কাপড়ের ওপর বসে খেলা করছিল একটি শিশু। তাকে খাওয়ানোর জন্য ছুটে এসেছে ফুলমণি। বরের হাতে বেদম মার খেয়ে পালিয়ে এসে সে এখন বাপের ঘরে আশ্রিত। বাপ স্পষ্ট বলে দিয়েছে, নিজেরটা নিজে যোগাড় করে খা।
অনেকক্ষণ বাদে কাছে পেয়ে শিশুটি দুই হাতে মা-র দিকে এগিয়ে ধরে তোবড়ানো জলের বোতল। ছেলেকে কোলে তুলে আঁচলের আড়ালে নিতে নিতে ফুলমণি অস্ফুটে বলে, তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যা বাপ আমার।

🍂
প্রি ওয়েডিং
 শিশির পাল

অষ্টমঙ্গলায় এসেছে অঞ্জলি। প্রি ওয়েডিং এর ফটোগুলো একটু আড়ালে, আনমনে দেখছিল। একা। নায়ক নায়িকার মতো কী সুন্দরই না লাগছে, নিজেদেরকে! কত প্ল্যান করে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তোলা এইসব ফটো! 

বান্ধবী এষা এসে ওর কাঁধে হাত রেখে বলে, "অঞ্জলি, আজকের দিনেও দেখছিস এগুলো! তন্ময় দেখলে তো কষ্ট পাবে খুব!" 

পাঁচ পাঁচটা বছর পেরিয়ে গেছে। অঞ্জন সরে গেছে অঞ্জলির কাছ থেকে।

অ্যালবাম থেকে চোখ তুলে বাইরে তাকায় অঞ্জলি। দ্যাখে, ব্যালকনিতে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে তন্ময়। এক মনে।

এষার হাতটা ধরে অঞ্জলি বলল, "কেন দেখছি জানিস? মন খুব চাইছে। তাই। প্রিওয়েডিং এর কোনও ফটোই যে তোলা হয়নি রে এবারে!"

সংগ্রহ করতে পারেন 👇

Post a Comment

0 Comments