বাংলার ঘাস পাতা ফুল ফল, পর্ব -- ২৩
তৃণমূল (দূর্ব্বা ঘাস)
ভাস্করব্রত পতি
'কচি লেবুপাতার মতো নরম সবুজ আলোয়
পুথিবী ভরে গিয়েছে এই ভোরের বেলা;
কাঁচা বাতাবির মতো সবুজ ঘাস তেমনি সুঘ্রাণ
হরিণেরা দাঁত দিয়ে ছিড়ে নিচ্ছে।
আমারো ইচ্ছা করে এই ঘাসের এই ঘ্রাণ হরিৎ মদের মতো
গেলাসে গেলাসে পান করি,
এই ঘাসের শরীর ছানি চোখে চোখে ঘষি,
ঘাসের পাখনায় আমার পালক,
ঘাসের ভিতর ঘাস হয়ে জন্মাই কোন এক নিবিড় ঘাস মাতার
শরীরের সুস্বাদ অন্ধকার থেকে নেমে।'
---- ঘাস, জীবনানন্দ দাশ
ভারতীয় সংস্কৃতির নানা ক্ষেত্রে তথা পূজা ও ব্রতপার্বণে দূর্ব্বার (তৃণমূল) স্থান উচ্চে। তাই ভাদ্র শুক্লাষ্টমী তিথিতে, দুর্বাষ্টমী ব্রতান্তে দূর্ব্বাকে অঙ্গে ধারণের বিধি রয়েছে। দূর্ব্বার জন্ম কিভাবে হয়েছিল তা নিয়ে পুরাণে একটা কাহিনী রয়েছে। ক্ষীরসমুদ্র মন্থনের সময় বাসুকীকে দড়ি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই দড়ির দু প্রান্তে ছিল দেব এবং অসুরের দল। মন্দার পর্বতকে বেড়ি দিয়ে ঘর্ষণ হচ্ছিল জোরকদমে। সেই প্রবল ঘর্ষণের ফলে বিষ্ণুর শরীরেও ঘর্ষণ হয়। এতে তাঁর গায়ের লোমগুলো সব উঠে যায়। সেই লোমরাজি সমুদ্রের ঢেউয়ে ভেসে ভেসে তীরে এসে লাগে। বিষ্ণুর সেই লোমরাজিই জন্ম দিল দূর্ব্বার। নরম দূর্ব্বা ঘাসের মধ্যে প্রেমিকার অবস্থান কল্পনা করে আধুনিক কবিরা লেখেন --
"হয়তো দূর্ব্বা ঘাসের নরম ডোগা হবে,
কিংবা তুমি তারায় মেলবে পাখা!
তাইতো আমি ঘাসের গন্ধ লেপি,
লাল ডুরিতে দূর্ব্বাঘাস বাঁধা
গনেশ পূজায় দূর্ব্বা ঘাস লাগবেই। এ নিয়ে তিনটি কাহিনী শোনা যায়। কোনও এক সময় গণেশ এবং অসুরদের মধ্যে যুদ্ধের ফলে গণেশের দাঁত ভেঙে যায়। তখন ক্ষত সারাতে দূর্ব্বা ঘাসের রস লাগানো হয় গণেশের মুখে। সেরে ওঠে ক্ষতস্থান। আনন্দে গণেশ ঘোষণা করেন যে, দূর্ব্বাঘাস তাঁর খুব প্রিয়। সেই থেকে গনেশ পূজার মূল উপকরণ দূর্ব্বাঘাস। আরেকটি কাহিনীতে গণেশ মিষ্টির প্রতি দুর্বল ছিলেন। খুব মিস্টি খেতেন। অর্থাৎ মোদকদের প্রতি তিনি অনুরক্ত ছিলেন। একবার মিস্টি খেতে খেতে তিনি এত বেশি খেয়েছিলেন যে তার পেট ফুলে ঢোল। তখন উপায়ন্তর না দেখে দ্রুত হজমের জন্য নিজের বাহন ইঁদুরের উপর বসে কয়েক চক্কর ঘুরলেন। এইসময় নাকি তাঁর হাত থেকে কয়েকটি দূর্বা ঘাসের চাঙড় পড়ে গিয়েছিল এবং সেগুলি পরে ভক্তরা তুলে নিয়ে পূজা করেছিলেন। সেই থেকে গনেশ পূজায় দূর্ব্বা ঘাসের প্রয়োজন পড়ে। আবার 'বরাহ পুরাণ' অনুসারে, সম্পদের দেবতা কুবের একটি যজ্ঞের সময় গণেশকে একটি বিশেষ দূর্ব্বা ঘাস উপহার দিয়েছিলেন। তখন গণেশ, কুবেরের ভক্তি ও আন্তরিকতায় খুশি হয়ে ঘোষণা করেছিলেন যে বা যাঁরা তাঁকে দূর্বা ঘাস দিয়ে পূজা করবে, তাঁরা তাঁর আশীর্বাদ পাবে।
মাঠ জুড়ে তৃণমূলের (দূর্ব্বাঘাস) বিস্তৃতি
"দূরাসু ভূমিষু বায়তে যজতে দূর্ব্বা"
অর্থাৎ দূরের ভূমিতেও যে যায়, সেই 'দূর্ব্বা'। আর অথর্ববেদের বলা হয়েছেহয়েছে --
"দূর্ব্বা হিংস্রাশ্রয়া তৃণলতা, অন্যান্ ভূমিজান দুর্ব্বায়তে= হিংসতে দূর্ব্বা" (৫।১২।৩২৭)
এখানে দূর্ব্বার উপমা দেওয়া হয়েছে নারীচরিত্রের সঙ্গে। দূর্ব্বার স্বভাব নাকি নারীদের মতো। অর্থাৎ সে তার নিজস্ব এলাকায় অন্য কোন তৃণকে বিস্তারলাভ ক'রতে দিতে রাজি নয়। তাই দূর্ব্বার আর এক নাম 'হিংস্রা'। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর 'ন্যায়দণ্ড' কবিতায় লিখেছেন --
"অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে
তব ঘৃণা যেন তারে তৃণ সম দহে!"
'গ্রামিনী' বা 'পোয়েসি' (GRAMINEAE) গােত্রের দূর্ব্বাঘাসের বিজ্ঞানসম্মত নাম CYNODON DACTYLON। এই দূর্ব্বা ঘাসকে হিন্দিতে বলে দূর্ব্বা।
তৃণ হল ঘাস। [সংস্কৃত √তৃণ্ + অ (তৃ) ]
সংসদ বাঙ্গালা অভিধান অনুসারে তৃণ হল ঘাস খড় বা ঐ জাতীয় উদ্ভিদ। রাজশেখর বসু সংকলিত 'চলন্তিকা' অনুসারেও একই কথা বলা হয়েছে।
দূর্ব্বা > [ √দূর্ব্ব হিংসা + অ (ঘঙ) ম্ম + স্ত্রী +আ (টাপ)
দূর্ব্বা ঘাসই হল তৃণ।
তামিলে অরুগু, সংস্কৃতে গ্রন্থী এবং তেলুগুতে গরিকে বলে। এছাড়া শতপঠিকা, সহস্রবীটা, ভার্গবী, রুহা, অনন্ত, হরিতা, হরিতালী, কচ্ছরুহা, বহুবীৰ্য্য, দুমরা, তিক্তপর্বা নামে দূর্ব্বাঘাস পরিচিত। পৃথিবীর সমগ্র সবুজ অঞ্চলের প্রায় ২০% অঞ্চল ঘাস দিয়ে ঢাকা। সারা বিশ্বে প্রায় ১০ হাজার প্রজাতির ঘাসের সন্ধান পাওয়া গেছে এখনও পর্যন্ত। তবে পশ্চিমবঙ্গে এখন পাঁচ ধরনের দূর্ব্বাঘাসের (পানীদূর্ব্বা, মালাদূর্ব্বা, শ্বেতদূৰ্ব্বা, নীলদূৰ্ব্বা ও গন্ডদূৰ্ব্বা) সন্ধান মিললেও আপাতত এদের মধ্যে সবগুলির দেখা পাওয়া যায়না এখন। দূর্ব্বা ঘাসকে পবিত্রতা ও সতেজতার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এত জিনিস থাকতে এই দূর্ব্বাকে কেন হাতে বাঁধা হ'লো? এর তাৎপর্যই বা কি? কেনই বা সর্বভারতীয় বৈদিক লৌকিক ও মাঙ্গলিক কার্যে' যব বা ধানের সঙ্গে দূর্ব্বা দিয়ে আশীর্বাদের বিধি হ'ল? এর পেছনে কি কারণ থাকতে পারে?
ধান, দূর্ব্বা, যব ও তিল হ'চ্ছে সমগ্র মানবশ্রেণীর প্রাণ সঞ্চারণের প্রথম উপাদান। আর দূর্ব্বার কাজ সেই খাদ্যশস্যগুলির জন্মভূমিকে সবলে ধারণ ক'রে রেখে তার ক্ষয় নিবারণ করা এবং যাবতীয় বিপদ থেকে রক্ষা করা। ভারতীয় সংস্কৃতিতে যক্ষ, রক্ষ, অসুর, গ্রহ ইত্যাদির আধিভৌতিক বিপত্তি থেকে মানবসমাজকে দূরে রাখার দৈবপ্রয়াসও দেখা যায়। তাই সব কিছু থেকে রক্ষাকর্তার মূল প্রতীক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে দূর্ব্বাকে। ধান, তিল, যব যেমন মানুষের প্রাণসঞ্চারণের সম্পদ, তেমনি দূর্ব্বা হল প্রজাস্থাপনের (Fecund) বা জননীয় (জননোপযোগী পরিবেশ সৃষ্টিকারী) উপাদান। তাই দূর্ব্বা মাথায় দিয়ে আমরা বলি 'ধনে পুত্রে লক্ষ্মীলাভ হোক'। আর এভাবেই আশীর্বাদের প্রতীক হিসেবে ধানদূর্ব্বার প্রচলন। আমরা বলি 'দূর্ব্বে বংশো বদ্ধতাম্'। অর্থাৎ এই দূর্ব্বার মত তোমার বংশবৃদ্ধি হোক্।
"যথা শাখা প্রশাখাভিঃ বিস্তৃাসি মহীতলে।
তথা মমাপি সন্তানং দেহি ত্বমজরামরম্।"
অর্থাৎ হে দূর্ব্বা, তুমি যেমন পৃথিবীতে শাখা প্রশাখায় নিজেকে বিস্তৃত কর, তেমনি আমার সন্তান প্রবাহ কর, আর আমার দেহকে অজর ও অমর কর।
দেহের বিকারপ্রাপ্ত পিত্তকে সাম্যাবস্থায় আনতে দূর্ব্বার জুড়ি নেই। এই বিকৃতপিত্তের প্রভাবে ৪০ প্রকার রোগের উৎপত্তি হয়। শুধু মানবদেহে নয়, অন্যান্য প্রাণীর দেহেও পিত্ত বিকারের দ্বারা ভয়ঙ্কর সব রোগের সৃষ্টি হয়। কুকুর বেড়ালদের শরীর খারাপ করলে কচি ঘাস খেতে লক্ষ্য করা যায়। আসলে বিকারপ্রাপ্ত পিত্তের দরুন লাবণ্য নষ্ট হয়, শরীরে তাপের মাত্রা বাড়ে, দৃঢ়তা নষ্ট করে, রুগ্নতা আনে, নিরুৎসাহিত করে তোলে। এছাড়া আলস্য, ক্লীবতা, অজ্ঞানতা, বিকৃতি দর্শন, ক্রোধ, অহর্ষ, মোহ, অশৌর্য, অবিপাক (বদহজম) ইত্যাদির জন্ম দেয়। শ্বেতপ্রদর (Leucorrhoea) জনিত দুর্বলতায়, সন্তান লাভার্থে, কাটা জায়গায় রক্তপাত বন্ধ করতে, চুল ওঠা ঠেকাতে, রক্তপিত্ত, বমি বন্ধ করতে, চুলকানি নিরসনে, মলের সাথে রক্তপাত বন্ধ করতে, আমাশয় প্রতিরোধে, নাসা অর্শে, পিরিয়ডসের মতো রক্তস্রাব বন্ধ করতে, প্রস্রাব করতে কষ্ট হলে তা নিরাময়ে দূর্ব্বা ঘাস খুব উপকারী। এখনও বহু জায়গায় একটা পাথর বা পিতলের থালায় জল নিয়ে বেশ কয়েকটা দূর্ব্বা এবং হলুদ দিয়ে সকালে রৌদ্রে রাখা হয়। ৩ - ৪ ঘণ্টা বাদে সেই জলে শিশুকে স্নান করানো হয়। এই রীতি জন্মের পর প্রথম কয়েক মাস পর্যন্ত করে মায়েরা। আসলে শিশুদের রিকেট রোগ থেকে রেহাই পেতে এই ধরনের কাজ করে থাকেন। রাজনীতির মঞ্চেও স্থান পেয়েছে কচি ঘাসের ফুল -- 'তৃণমূল'। রাজনৈতিক পরিচয়ে পরিচিত 'তৃণমূল' স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'তৃণমূল মানে' কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে এভাবে --
'তৃণমূল মানে এসেছে সুদিন,
দুঃশাসনের প্রতিকার;
তৃণমূল মানে রাম আর রহিম,
শিখ খ্রিস্টান একাকার।'
'দূর্ব্বা' নিয়ে বাংলা সাহিত্যে প্রবাদের ছড়াছড়ি। 'হাড়ে দূর্ব্বা গজানো' -- বাংলায় একটি অতি পরিচিত প্রবাদ। আরাম আয়েশী লোকজন বসে বসে নিষ্কর্মা হয়ে উঠলে এরকমই বলা হয়। আসলে সংসার পারাবার মন্থন ক'রতে ক'রতে অনেকেরই শরীরের হাড় গুঁড়ো হ'য়ে দূর্ব্বার মত জীবনসাগরে ভেসে যায়। তাই হয়তো এরকম বলা হয়ে থাকে এরকম। গিরিশ ঘোষের 'জনা'তে পাই "এই যে দেখেছো দূব্বো ঘাস, ইতু ঠাকুরের বরে হাড়ে গজিয়েছে"। প্রবাদে আছে "দূর্ব্বাবনে বাঘে খায়", "যখন যাঁর কপাল বাঁকে, দুব্বো বনে বাঘ ঝাঁকে", "কপাল যদি মন্দ হয়, দুব্বোক্ষেতে বাঘের ভয়" এবং "যদি ভাগ্য ভেঙে যায়, দুর্ব্বাবনে বাঘে খায়"। এছাড়াও পাই "চাটা দূর্ব্বা পড়ে থাকা", "দুর্ব্বাতুল্য ঘাস, অঘ্রাণতুল্য মাস", "দুর্ব্বা বাঁশ ধানের শীষ / এ ক'টা দাঁতে না দিস" প্রবাদগুলি। অভাবের সময় কোথাও কোথাও কচি দূর্ব্বা ঘাস সেদ্ধ করেও খেয়েছে মানুষ। তা নিয়ে এক সুন্দর কাহিনীর সন্ধান মেলে গ্রামনাম সৃষ্টির ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে।
হাতে বাঁধা হয়েছে দূর্ব্বাঘাস দেওয়া ডুরি
কোনাে এক সময় মাজনামুঠা স্টেটের মালিক রাজা যাদবরাম চৌধুরী খুবই প্রজা বৎসল, বৈষ্ণব ভাবাপন্ন, ধার্মিক ছিলেন বলে কথিত আছে। প্রজাদের অবস্থা স্বচক্ষে দেখার জন্য ছদ্মবেশ ধরে তিনি ঘুরে বেড়াতেন। ঘুরতে ঘুরতে একদিন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছিল। পরগনার রাজধানী মানে পরগনায় অবস্থিত জমিদারি সেরেস্তায় ফেরার উপায়ন্তর না দেখে কাছাকাছি এক প্রজার বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন। বাড়ির মালিককে আহার ও রাত্রি যাপনের জন্য বললেন নিজের অসহায় অবস্থার কথা জানিয়ে। অতিথি বৎসল বাড়ির মালিক অতিথিকে সাদরে গ্রহণ করলেন। কিন্তু বাড়ির হাঁড়ির খবর তাঁর জানা ছিলনা। তাই খুবই বিপদে পড়লেন।
সে যুগে মানুষ অতিথিকে মুনি ঋষি জ্ঞানে ভক্তি করত। তাই অতিথিকে আপ্যায়নের দায় বাড়ির মালিককে ভীষণভাবে পীড়ন করেছিল তখন। অনন্যোপায় হয়ে গৃহকর্তা ও গৃহকর্তী মিলে মাঠের দূর্ব্বা ঘাসের (তৃণমূল) কচি কচি কলি তুলে যত্ন সহকারে রান্না করেছিল। রাত্রিতে আহারের সময় অতিথিকে সেটাই পরিবেশন করেছিল। ছদ্মবেশী রাজা যাদবরাম রায় এই আতিথেয়তায় খুবই তৃপ্ত হন। তারপর ভােরে সেরেস্তায় ফিরে যান।
দূর্ব্বাঘাসের চারা
পরে একদিন পাইক পাঠিয়ে ওই প্রজাকে সেরেস্তায় তলব করেন। প্রজা পাইক মারফত রাজার তলবে সাংঘাতিক কোনাে অপরাধ হয়েছে এই আশঙ্কায় ভীত হয়ে কোনাও রকমে সাহস সঞ্চয় করে কাছারি বাড়িতে উপস্থিত হয়। উক্ত প্রজা কাছারি বাড়িতে এলে তিনি প্রজাকে অতীতের ওই রাত্রিতে আতিথেয়তার কথা মনে করিয়ে দেন ও রান্না সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তখন সেই প্রজা সে রাতে বাড়িতে চাউল না থাকায় মাঠের কচি কচি দূর্ব্বা ঘাসের কলি তুলে যত্ন সহকারে রান্না করে অতিথিকে পরিবেশন করেছিল, তা অকপটে স্বীকার করে। প্রজার এই অসহায় অবস্থার কথা ও সত্যবাদিতায় সন্তুষ্ট হয়ে কিছু ভূমি দান করেছিলেন। অতি সাধারণ দূর্ব্বা ঘাসের তরকারিতে অতিথিসেবার ঘটনার স্মরণে দান করা জমি সংলগ্ন এলাকার নামকরণ হয় 'দূর্ব্বাবেড়্যা'। এই দূর্ব্বাবেড়্যা ছাড়াও দূর্ব্বাচটি নামের সৃষ্টি দূর্ব্বা থেকেই।
কচি ঘাস গবাদি পশুর প্রিয় খাদ্য। কাগজ তৈরিতেও প্রয়োজন। কিন্তু শুকনো ঘাস দারুণ দাহ্য বস্তু। আমরা হাঁটতে গিয়ে প্রায়শই দলে মুচড়ে নষ্ট করে দিই দূর্ব্বাঘাস। যদিও হাজার আক্রমণ সহ্য করেও মাথা তুলে উঠে আসে দূর্ব্বাঘাসের শীষ। 'ঘাসফুল' কবিতায় জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র লিখেছেন --
'আমরা ঘাসের ছোট ছোট ফুল
হাওয়াতে দোলাই মাথা,
তুলো না মোদের দোলো না পায়ে
ছিঁড়ো না নরম পাতা।
শুধু দেখো আর খুশি হও মনে
সূর্যের সাথে হাসির কিরণে
কেমন আমরা হেসে উঠি আর
দুলে দুলে নাড়ি মাথা।
ধরার বুকের স্নেহ কণাগুলি
ঘাস হয়ে ফুটে ওঠে।
মোরা তারই লাল নীল সাদা হাসি
রূপকথা নীল আকাশের বাঁশি-
শুনি আর দুলি শান্ত বাতাসে
যখন তারারা ফোটে।'
🍂
0 Comments