জ্বলদর্চি

শব্দে গাঁথা মণি-মালা : ৭৩ / সালেহা খাতুন

শাশুড়িমা ও কন্যাসহ

শব্দে গাঁথা মণি-মালা : ৭৩ / সালেহা খাতুন 

পিএইচ.ডি.- এর প্রি-রেজিস্ট্রেশন সেমিনারে এতো ভালো বলেছিলাম যে, সবাই আমার প্রশংসা করতে থাকেন। এতোদিন যা বলেছি তা ক্লাসরুমের চার দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ ছিল। তা ছিল প্রাইভেট ডিসকোর্স। এবার তা খানিকটা পাবলিক ডিসকোর্স হয়ে গেল। কেননা সেখানে ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টস, ডীন, সাবজেক্ট এক্সপার্ট, বিভাগীয় অধ্যাপক ও আরো অনেক ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।

 এক্সপার্ট অধ্যাপক জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় আমার কাজের নিদর্শন দেখে আমার আগের রেজাল্ট কেমন ছিল জানতে চাইলেন। আমার প্রতি হওয়া কিছু অন্যায় দেখে তিনি বলেন, “তুমি আমার মেয়ে হলে আমি কাউকে ছেড়ে কথা বলতাম না”। তৎকালীন ডীন কবি ও দর্শনের অধ্যাপক প্রভাত মিশ্র গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিলেন। আমার গাইড সেগুলি সব নোট করে কাজে লাগাতে বললেন। দু’হাজার তিনের ডিসেম্বর থেকে দু’হাজার পাঁচের জুলাই পর্যন্ত যেখানে গেছি, যে কাজ করেছি তা প্রায় সমাধিস্থ হয়ে করেছি। অর্থাৎ সুনীতিকুমার নিয়ে ভাবসমাধি লাভ করেছিলাম। রিফ্রেশার্স কোর্স চলাকালীন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি থেকেও সুনীতিকুমারের ‘বৈদেশিকী’ গ্রন্থ তুলে পড়েছি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম পাঁচটায় শেষ হলে প্রতিদিন বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে গেছি পড়াশোনা করতে। মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট লাইব্রেরি, মেদিনীপুর কলেজ লাইব্রেরি গুলে খেয়েছি। আর বাজারে যে বই দুর্লভ নয় সেটা নিজে সংগ্রহ করেছি। 

এটা তো সত্য যে ঠিকঠাক হোমওয়ার্ক করলে বক্তব্য অত্যন্ত স্মার্টভাবে পরিবেশন করা যায়। এর ফল হাতেনাতে পেলাম। সুবক্তা বলে পরিচিতি হয়ে গেল। বিভিন্ন সভা-সমিতিতে যাওয়ার আমন্ত্রণ আসতে লাগলো। কিন্তু আমি অত্যন্ত পারিবারিক মানুষ। সব আমন্ত্রণ রক্ষা করা সম্ভব হতো না। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে যেতাম না। এজন্য অনেক শুভাকাঙ্খী বলতেন, “ ম্যাডাম, শুধু কলেজ টু কোয়ার্টার করলেই হবে না।” ভারতীয় গণনাট্য সংঘ ও গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘ - এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির আমন্ত্রণে দু’হাজার ছয়ের ছাব্বিশ মে সন্ধেতে বললাম ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে নজরুল’ প্রসঙ্গে। ‘বাংলা সাহিত্যে নজরুল’, ‘বাংলা সাহিত্যে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’, ‘বঙ্কিমচন্দ্র অন্য ভাবনায়’ প্রভৃতি গ্রন্থের রচয়িতা এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নজরুল পুরস্কার প্রাপ্ত লেখক আজহারউদ্দীন খানের স্নেহ যথেষ্ট পেয়েছি সে সময়। তাঁর নিজের লেখা বইও উপহার দেন। তাঁর বাড়িতে বারকয়েক গিয়েছি আমার পিএইচ.ডি.-র গবেষণার সূত্রে। সুনীতিকুমারের সঙ্গে তাঁর পত্রালাপ ছিল এবং সরাসরি ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে কথাও হয়েছিল। নজরুল সম্পর্কে যখন বলছি, সামনের সারিতে তখন বসে আছে আমার কন্যা। বয়স তিন কী চার। কন্যা এবং তার বাবা দুজনেই বলছিল খুব ভালো বলেছি। আসলে ওদের সামনে রেখে বলাটাই তো একটা চ্যালেঞ্জ।

এমনি করেই দু’হাজার আটের উনিশ এপ্রিল অনুভব সাহিত্য চক্রে আলোচকরূপে যোগ দিলাম। বিশিষ্ট বক্তাদের মধ্যে সেদিন ‘জ্বলদর্চি’ সম্পাদক ঋত্বিক ত্রিপাঠীও ছিলেন। উজ্জ্বল এক যুবক। যিনি উচ্চমাধ্যমিক পড়ার সময় থেকেই পত্রিকা সম্পাদনা করছেন। যা আজও নিয়মিত। তিনি নিজেও লেখালেখি করেন। তাঁর প্রথম কবিতা 'ক্লাশ রুটিন' প্রকাশিত হয় ১৯৯৫ সালে 'ল্যাকেটু' নামে একটি লিটল ম্যাগাজিনে। পরে দেশ, আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময়, সানন্দা, আজকাল, নন্দন, তথ্যকেন্দ্র ও অজস্র লিটল ম্যাগাজিনে লিখেছেন এবং এখনও লিখছেন। ১৯৯৯ সালে তাঁর প্রথম কবিতার বই 'জ্যোতিবাবু ও তুমি' প্রকাশ পেলে অনেকেরই বিরাগভাজন হন বলে জেনেছি। এরপর প্রকাশিত হয় 'ঝড়ের পাখিকে আত্মকথা'(২০০৬), 'স্বপ্ন শামিয়ানা'(২০০৭)। গদ্য পদ্য মিলে এখন তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা বেড়ে প্রায় চোদ্দ-পনেরো হয়েছে।

তিনি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৯ - এ বাংলায় এম.এ পাশ করে ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে আংশিক সময়ের অধ্যাপনায় যুক্ত হন।আনন্দবাজার পত্রিকায় সাংবাদিক রূপে কাজ করেন ২০০৩ সালে । ২০০৫ থেকে স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। মূলত কবি ঋত্বিক কিছু গদ্যও লিখেছেন। লিটল ম্যাগাজিনের নানান দাবিতে নিয়মিত সোচ্চার থাকেন। নিজেকে একজন লিটল ম্যাগাজিন কর্মীরূপেই পরিচিতি দেন। অনুভব সাহিত্য চক্রে লিটল ম্যাগাজিনের সুখ দুঃখ নিয়েই কথা বলেছিলেন। আর আশ্চর্যের বিষয় সেই তিনিই প্রায় পনেরো বছর পর আমাকে অনুপ্রাণিত করলেন, সুখ দুঃখ ভরা আত্মকথা লিপিবদ্ধ করতে।

দীর্ঘ তিরিশ বছরেরও অধিককাল ধরে তিনি ‘জ্বলদর্চি’ সম্পাদনা করে চলেছেন। যেখানে কলম ধরেছেন অন্নদাশংকর রায়, মহাশ্বেতা দেবী, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, নবনীতা দেবসেন, সমরেশ মজুমদার, বুদ্ধদেব গুহ, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, শঙ্খ ঘোষ, মনোজ মিত্র, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ স্বনামধন্য লেখকদের পাশাপাশি বহু নবীন লেখক। 

‘জ্বলদর্চি’ পত্রিকার সঙ্গে পরিচয় থাকলেও সম্পাদককে সেই প্রথম অত্যন্ত কাছ থেকে দেখলাম। একই গাড়িতে আরো অনেকের সঙ্গে মেদিনীপুর থেকে খাকুড়দা যাই। সারাদিন অনেক মানুষজনের সঙ্গে আলাপ হলো। অনুত্তম ভট্টাচার্য আমার কন্যাকে সঙ্গে দেখে বললেন, জহওরলালও ইন্দিরাকে এমনই সঙ্গে নিয়ে ঘুরতেন। সেদিন আমার বক্তৃতা শুনে মুগ্ধতার কথা অনেকেই বলেছিলেন। স্থানীয় এক পত্রিকা সম্পাদক ফিরোজ খান চিঠি লিখে তা জানান।

নতুন নতুন জায়গায় যাওয়া মানে নতুন নতুন মানুষের দেখা পাওয়া। চেনা শোনা বাড়তে থাকে। সম্ভবত এই দু’হাজার ছয় থেকেই এম.এ. এবং এম.ফিল.-এর সহাধ্যায়ী বন্ধু নীলাঞ্জনার সঙ্গে আবার নতুন করে গভীর সংযোগ স্থাপিত হয়। সে যোগ পারিবারিক হয়ে যায়। আমাদের কন্যাদ্বয়ের ভূমিকা এক্ষেত্রে অনস্বীকার্য। আর আমরা দুজনে মিলে বিভিন্ন সেমিনার রিফ্রেশার্স কোর্স পরিক্রমা করতে থাকি। কলেজ এক না হলেও আমরা বর্তমানে এক পাড়াতেই থাকি, এই আমাদের একমাত্র সুখ। সম্মানও বাড়িয়ে দিয়েছে আমার, বিভিন্ন সেমিনার এবং অনুষ্ঠানে আমাকে আলোচকরূপে আহ্বান করে। অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে আমার কলেজের বাংলা বিভাগের সঙ্গেও ওর যোগ সুদৃঢ় আছে।

দু’হাজার ছয়ের পাঁচ জানুয়ারি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউ জির সিলেবাস ওয়ার্কশপে আমরা যাই এগরার সারদা শশীভূষণ কলেজে। সেপ্টেম্বরের আট-নয়ে যাই মহিষাদল রাজ কলেজে ‘বাংলা সাহিত্যে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী মনোভাব’ শীর্ষক আলোচনা সভায়। ওখানে আমার বক্তব্যের প্রশংসা করেন স্বপন বসু। যিনি এক সময় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সম্পাদক ছিলেন এবং যাঁর চর্চার মূল বিষয় উনিশ শতকের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাস। নভেম্বরের চব্বিশ-পঁচিশ নীলাঞ্জনা আমি দুজনেই যোগ দিই খড়্গপুর কলেজ আয়োজিত পোস্ট ইনডিপেন্ডেন্স ইণ্ডিয়ান ফিকশন কেন্দ্রিক আলোচনাচক্রে।

নিজের কলেজ ক্যাম্পাসে আয়োজিত ওয়ার্কশপ ও সেমিনারেও অংশগ্রহণ করি। সে বছর ২২-২৩ মার্চ মেডিসিনাল প্ল্যান্ট নিয়ে সেমিনার এবং আর একদিন ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইট নিয়ে ওয়ার্কশপ আয়োজিত হয়। সবথেকে মজার হলো এ বছর কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করে একটি গাড়ি ভাড়া করে কয়েকজন অধ্যাপক মিলে আমরা চলে গেলাম পাঁশকুড়া বনমালি কলেজে ন্যাক আয়োজিত এক সেমিনারে। চন্দ্রিমা, সুধীনবাবু ও অন্যান্যরা ছিলেন। ন্যাক অ্যাক্রিডিটেড ইনস্টিটিউশন হায়ার এডুকেশনে কোয়ালিটি ইমপ্রুভমেন্টে কী ভূমিকা পালন করবে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রসঙ্গক্রমে আংটি এবং ঘড়ি এ দুটোর উপমা উঠে আসে।

🍂

এতো গেল বাইরের কথা। ঘরের কথায় ফিরি। দু’হাজার পাঁচের মে মাসে কন্যার তিন বছর বয়স পূর্ণ হলে স্কুলে ভর্তি করার কথা ভাবতে থাকি। কিন্তু অতো ছোটো বয়সে স্কুলে পাঠাতে মন চাইছিল না। তার উপর ছোটোদের স্কুলগুলিতে জানুয়ারিতেই ভর্তির  ফর্ম পূরণ করতে হয়। প্রকৃতির সান্নিধ্যে থেকেই বিভিন্ন শিক্ষা নিচ্ছিল। ভেজানো ছোলা খাওয়ার পর কিছুটা কোয়ার্টারের মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে কদিন পরে দেখে সুন্দর সুন্দর গাছ হয়েছে বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে। গাছ গুলি বড়ো হতে,সেই ছোলা ক্ষেতে শুয়ে থাকতো। ফুল-ফল ধরা দেখতে থাকে। নিজে হাতে শুঁটি ছিঁড়ে এনে ছাড়িয়ে খেতে থাকে। নিজে হাতে কামিনী ফুলের চারা রোপণ করে রোজ জল দিত আর উচ্চতা মাপত নিজের সাথে তুলনা করে। কলেজ ক্যাম্পাসের মালি অলোকের থেকে বিভিন্ন বর্ডার গাছ এনে চর্চা করতো ঐ ছোটো বয়সেই। অলোক এখনও আমাকে সে কথা স্মরণ করান। প্রজাপতির পেছনে ছোটাছুটি, ইলাদিকে কলেজ যাতায়াতের পথে ওর হাতে বানানো খেলনাবাটির চা খাওয়ানো কত সব কাজ তার।
"লিপি চিত্রিত লিপি আঁকাবাঁকা"

পরিবার বা বাড়ি থেকে দূরে থাকলেও কলেজের সবাই বিশেষ করে কোয়ার্টারের সবাই আপনজন ছিলেন । সবাই ছিলেন মামা-মাসি। এমনকি প্রিন্সিপাল স্যারকেও মামা বলায় অমলবাবু (ইংরেজির অধ্যাপক ড.অমলকান্তি চক্রবর্তী) হেসে বলেন, ‘তুই আমাদের মামা বলিস ঠিক আছে কিন্তু প্রিন্সিপালকে স্যার বল।’ সেই সূত্রে আমার মনে এলো এবার ওকে ওর দাদিমা আর দাদাজির সঙ্গে দেখা করানো দরকার। ইতিহাসে আছে মহম্মদ পর্বতের কাছে যান নি পর্বতই মহম্মদের কাছে এসেছিল। সেভাবেই  দু’হাজার পাঁচের নভেম্বরে মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি আগাপুরে গেলাম। শ্বশুরমশাই কোলে নিয়ে আদর করতে থাকেন। পাড়া প্রতিবেশী সবাই চলে আসেন। ছোট্ট মেয়ে দাদাজিকে জানিয়ে দেয়, ‘আমার মায়ের বাড়ি সাহাপুর, আব্বুর বাড়ি আগাপুর আর আমার বাড়ি মেদিনীপুর।’ কথায় কথায় এখন যেমন লিফ্ট দে দো ডট কমকে ডেকে নেওয়া বা গাড়ি হাঁকিয়ে(হায়ার করা) যে কোনো গন্তব্যে চলে যাওয়া অতো সুলভ ছিল না তখন। সাধ্যও ছিল না ছোটো বাচ্চাকে নিয়ে দুশো দুশো চারশো কিলোমিটার পাড়ি দেওয়া। মাঝখানে সাহাপুরে হল্ট করেই গেছি।

গিয়ে দেখি শাশুড়িমা এক গভীর শারীরিক যন্ত্রণায় আছেন। পুরো ইউটেরাস বাইরে বেরিয়ে ঝুলে আছে। তাই নিয়েই সাংসারিক কাজকর্ম করে যাচ্ছেন। শাড়িতে রক্তের দাগ লেগে যাচ্ছে। সাত সন্তানের জননী, স্বামী শিক্ষকতায় যুক্ত। কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। প্রায় জোর করেই সেদিনই তাঁকে আমার সঙ্গে নিয়ে চলে আসি। আমার ডাক্তার কাকলি কুমারকে দেখাই। ইসলামীয় নিয়ম পালনে ব্যস্ত শাশুড়িমা কোনো পুরুষ ডাক্তারকে দেখাবেন না। রিং পরিয়ে অপারেশন এড়ানোর চেষ্টা করলেন কাকলি কুমার। কিন্তু তা কার্যকরী হলো না। মেদিনীপুর থেকে ওয়েস্টব্যাঙ্ক হসপিটাল (বর্তমানে নারায়ণা)মৌড়িগ্রামে সব সময় ছোটা সম্ভব নয় । ল্যান্ডফোনে কাকলি কুমার অপারেশানের আগে কী কী টেস্ট করাতে হবে বলে দিলেন, আমি কাগজে লিখে কলকাতার ইকো ( মেডিক্যাল ল্যাবরেটরি ) তে নিয়ে গিয়ে সব টেস্ট করালুম। কাউন্টারের রিসেপশনিস্ট অবাক হয়েছেন আমি পড়ালেখা জানি বলে। নির্ভুল বানানে সব টেস্টের নাম লিখতে পেরেছি বলে। ডাক্তার কাকলি কুমারের কাছে আমি আজো কৃতজ্ঞ। ছোটো শিশু নিয়ে থাকি বলে তিনি আমার অনেক কাজ কমিয়ে দিয়েছিলেন। অপারেশান হলো। আর্থিক মানসিক শারীরিক সব ভার ছিল আমার। অপারেশানের আগে বন্ডে সই করার সময় আমি সই করতে গেলে বাধা দেন কর্তব্যরত অফিসার। বললেন ওঁর স্বামীকে ডাকুন। বললাম কিছুতেই সম্ভব নয়। তিনি আছেন একশো কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে। অফিসার বললেন তাহলে আপনার স্বামীকে ডাকুন। উনি ছেলে হিসেবে সই করবেন। নাহলে খারাপ কিছু হলে ওঁর পুরো পরিবার আপনাকে কাঠগড়ায় তুলবে। ভালোয় ভালোয় সব মিটলো। প্রায় ছমাস আমার মেদিনীপুর কলেজের কোয়ার্টারে তাঁকে রেখে সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করলাম।
(ক্রমশ)
বাড়িতে বসেই সংগ্রহ করতে পারেন 👇

Post a Comment

0 Comments