জ্বলদর্চি

জাতীয় গণিত দিবস (২২শে ডিসেম্বর)/দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে

জাতীয় গণিত দিবস (২২শে ডিসেম্বর)
দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে

আজ বাইশে ডিসেম্বর, জাতীয় গণিত দিবস 'গণিত' শব্দটির সঙ্গে রামানুজন নামটি ওতোপ্রোতভাবে  জড়িত। গণিত কি? এর সঙ্গে রামানুজনের সম্পর্কই বা কি?আসুন আমরা এই সম্পর্কে সবকিছু জেনে নিই।

গণিত এমন একটি বিষয়, যার সাহায্যে সামাজিক ক্রিয়া-কলাপসহ অনেক কিছুই সহজ ও মসৃণ হয়ে যায়। এটা বললেও ভুল হবে না যে, প্রত্যেক মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে গণনার ওতো-প্রোত সম্পর্ক রয়েছে আর সমাজের প্রয়োজনে এই উপলব্ধি নিয়ে 'জাতীয় গণিত দিবস' পালন শুরু হয়েছে।
বাইশে ডিসেম্বর দিনটিকে আমাদের জাতীয় 'গণিত দিবস' হিসেবে পালন করা হয়।
প্রবাদপ্রতিম গণিতবিদ শ্রী রামানুজনের জন্মদিন ২২শে ডিসেম্বর। ১৮৮৭ সালে তামিলনাড়ুর ইরোডে এক তামিল ব্রাহ্মণ আয়েঙ্গার পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর গণিতের উপর পাণ্ডিত্য ও বিশেষভাবে দক্ষতার কারণে তিনি Man who new infinity নামেও পরিচিত ছিলেন।গণিতের সর্বকালের সেরা পণ্ডিতদের মধ্যে তিনি একজন।
ভারত সরকার ২২ শে ডিসেম্বর কে জাতীয় গণিত দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ২০১২ সালের ২৬ শে ফেব্রুয়ারি মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতের প্রতিভাবান গণিতজ্ঞ শ্রীনিবাস রামানুজনের জন্ম দিন ২২ শে ডিসেম্বর তারিখটিকে (যেদিন তার ১২৫ তম জন্মদিবস হয়) 'গণিত দিবস' হিসেবে ঘোষণা করেন এবং ২০১২ সাল টিকে গণিত বছর হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

🍂

প্রত্যেকটা দিবসের একটা আলাদা করে উদ্দেশ্য থাকে, সেই রকম গণিত দিবসের ও একটি উদ্দেশ্য আছে। সাধারণ মানুষের গণিতের প্রতি যে ভীতি, সেই ভীতি কে কাটিয়ে ওঠা এবং গণিতের প্রতি যাতে মানুষের গভীর আগ্রহ ও ভালোবাসা তৈরি হয় এবং অবশ্যই মহান গণিতবিদ রামানুজনের অবদানকে স্মরণ করার জন্য তাঁরই জন্ম দিবসে গণিত দিবসটি পালন করা হয়।
যাঁর জন্ম দিবসে দিনটি পালিত হয়, অবশ্যই তাঁর সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া উচিত।
শ্রীনিবাস রামানুজন মৌলিক গণিতের কোন আনুষ্ঠানিক শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ ছাড়াই গণিতের বিশ্লেষণ, সংখ্যা তত্ত্ব, অসীম শ্রেণী এবং সিরিজ বিভাজনের মতো বিষয়ে গণিতে অসীম অবদান রেখে গিয়েছেন। তাঁর জীবদ্দশায় রামানুজন  অনেক জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধানও করে গেছেন। তিনি প্রায় ৩০০৯টি সমীকরণ ও অসমতা সমাধান করেছেন, এছাড়াও বিভিন্ন গাণিতিক ফলাফল তৈরি করেছেন। সব থেকে বড় ব্যাপার হলো ওই গাণিতিক ফলাফলের অর্ধেক রামানুজনের নিজস্ব এবং অনন্য। এতে রামানুজন ফান্ডামেন্টালস, রামানুজন থিটা ফাংশন এবং কৃত্রিম ফাংশনের মতো উচ্চক্রমের অপ্রচলিত ফলাফল রয়েছে।
১৯১৮ তিনি উপবৃত্তাকার ফাংশন ও সংখ্যা তত্ত্বের ওপর গবেষণার জন্য রয়েল সোসাইটির একজন ফেলো নির্বাচিত হন। ওই বছরেই ট্রিনিটি কলেজেও তিনি ফেলো নির্বাচিত হন প্রথম ভারতীয় হিসেবে।
২০১২ সালের পর থেকে প্রত্যেক বছরই ২২ শে ডিসেম্বর স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য শিক্ষামূলক ইভেন্টের মাধ্যমে গণিত দিবস পালিত হয়।

Post a Comment

0 Comments