জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা / জিতগোপাল সরকার

গুচ্ছ কবিতা  
জিতগোপাল সরকার 


একটি দুটি খসবে তারা যখন 

 তুমি যখন আড়াল থেকে বেশ 
 আমি তখন নীরব অভিমান। 
 তোমার সাথেই হোক পথ চলা
 ভালোবাসার নেই যে কোনোই শেষ।

নাই বা হলে তিতাস ওগো পিয়া 
নাই বা হলে রুদ্ধ মোনালিসা 
বাড়িয়ে দিও তোমার হাতখানি 
আলতো চুমি - তোমার জন্য হিয়া।

নাই বা হলে জ্যোৎস্না  সম প্রেম 
হয়তো হবে আবেগ কাতর রাত 
নাই বা হলে লাল গোলাপের কুঁড়ি
তবুও তুমিই প্রথম দেখা মেম।

মাঝরাতে তে একবারটি এসো 
একটি দুটি খসবে তারা যখন 
তোমার কোলে রাখবো মাথা খানি 
নতুন করে আবার ভালোবেসো।

কান্ত কবি তখন নীরব থেকো 
মোমবাতিটি জ্বলবে মিটমিট 
আবেগ গলায় ফিসফিসিয়ে বোলো 
আবিরগুলো আবার তুমিই মেখো।

ভালোবাসার হয় কি বিশেষ দিন !
হয় কি কোনো বিশেষ উদযাপন !
আগলে রেখো ভালোবাসায় তুমিই 
অপূর্ণতা শুধুই হোক দীন।

🍂


ভালোবাসা নয় ক্লিশে 

 ঘৃণার রাজ্যে  মৃত্যুর ভয় 
 অশনি  গর্জে বারবার 
 প্রতিবাদের শব্দগুলো  
 জ্বলে পুড়ে হয় ছারখার ।

 আস্ফালনের সদম্ভ ঘোষণা
 বাজে মৃদঙ্গ দুর্নিবার 
  প্রতিবাদীর কণ্ঠ গুলো 
 বজ্র আঘাতে চুরমার।

 রুদ্ধ কন্ঠে - শব্দ আসে না
 নেই কিছু বিপরীত 
 রিক্ত কলমে হাহাকার আজ 
 যত ভুল সব ঠিক ?

 রক্তচক্ষু থামিয়েছে সুর 
 অহর্নিশের বিষে 
 বিষাদ লগ্নে ভালোবাসা আজ 
 সবথেকে যেন ক্লিশে ।

 চুঁইয়ে পড়ে ঝর্ণার জল 
 মন্দা হয়েছে গতি
 কালো মেঘের আড়াল খুজেছে 
 আরাধ্যা সরস্বতী।

গোধূলি বিকেলে পথিক আসে 
সবুজ ঘাসের শীষে
মুক্তকন্ঠে সোচ্চারে বলে
ভালোবাসা নয় ক্লিশে ।।



 মনের মধ্যে স্থির 

আমার মৃত্যু দীর্ঘায়িত হোক 
আলোর দেখা চাইনি তো কখনও 
তোমায় লিখেছি যে কলম দিয়ে 
নয়কো সে একটুও প্রবঞ্চক ।

হাতের পরে রেখো তবে হাতখানি 
শীতের দুপুর আসুক বারংবার 
নীরব হোক সকল বিষন্নতা
তোমার কোলের নীরব হাতছানি।

গোধূলি বিকেলে আবারও তিক্ততা 
তোমার দেখা আজকেও তো নেই 
সাদা রঙের ক্যানভাসেতে সে  - ই 
সিঁদুরের স্বাদে আছে কি মিত্রতা !

রাতের ল্যাম্পপোস্ট - সাদা আলোর রেখা 
ইঁদুরে করেছে ধানের শীষ যে চুরি, 
এই তো, মাত্র কয়েক দিনের মাঝে,
এসব কিছুই তোমার থেকেই শেখা।

এই কথাটি  মনের মধ্যে স্থির 
তোমার জন্য আমার আবেগ কই,
যত জলঘোলা  হয় হোক, তবে সই,
হয়ে যাক না সব ভীষণ অস্থির।

একটু পরেই নামবে আঁধার রাত 
চুপটি করে ওদের কথা শোনো 
নরম বিছানা, ডাকে যে খাটের কোণ,
উষ্ণতা হোক হাতের পরে হাত।

পরের জন্মে প্রথম পুরুষ হবো, 
মনে রেখো, তুমিও প্রথম হবেই হবে,
তুমিও ওই ঘাসের শিশির বিন্দু (তবে) 
প্রথম ষোলোয় আবার কথা কবো।


ইচ্ছে ষোলোআনা

ভাঙা দরজার কড়া খসে পরে রোজ 
ভাঙা পাল্লায় নেই আর সেই জোর 
দমকা হাওয়া ঝাঁপটায় তার ডানা 
বন্ধ হয়েছে সম্মিলত খোঁজ।

পিচ্ ওঠা এই শহরের পথে গর্ত 
অন্ধ ভিখারি আজকেও  আছে অভুক্ত 
সারমেয়দের মিটিং এ সব যুক্ত 
আছে কি কার্ড ! ভিখারির ওই একটু খাওয়ার শর্ত।

শুকনো মুখে ছেলেটি আজ ক্লান্ত 
একশো টাকা পারেনি জোগাড় করতে 
মরণে তার নেই কোনো অভিযোগ 
আগুন চোখে আজকেও আছে শান্ত  !


কালরাত্রি তে এসেছে কত শর্ত 
বারবনিতার রঙ বিহীন মুখ 
পরিজনহীন একপেশে তে সুখ 
বিবর্ণ থেকে রঙীন হওয়ার গর্ত।

প্রেমিকা যখন চলেগেছে তখন ভোর 
খিড়কি দুয়ার ছিলো তখন ফাঁকা 
আজই এক মস্ত গাড়ীর কাঁচে তখনও ওর মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা 
শুকনো প্রেমিক অসাড় তখন, ছিন্ন বাহুডোর।

ভর্তুকি তে ইচ্ছে ষোলোআনা 
পারলে ভাতের ফ্যান করবে চুরি 
ইয়া বড় ছবিতে মালা রোজ,  তাই পরাচ্ছে কোনো এক ভুঁড়ি 
দাম নেই যার এক কণা।

Post a Comment

0 Comments