কাচের ভিতর অন্ধকার
“আয়না শুধু দেহকে ফেরত দেয় না—
কখনো সে ফেরত দেয় অদেখা ছায়াকে।”
আমি একদিন দেখলাম—
আমার নাম লেখা নেই কোথাও।
শুধু অচেনা আয়নায়
একটা কালো ডানা
শুয়ে আছে নিঃশব্দে।
কে জানে সে আমার কিনা?
নাকি তোমার?
রাতের ভাঙা সিঁড়ি দিয়ে
যখন আমি নামছিলাম
বাতাসের নড়াচড়ায়
আমি দেখলাম
গোপন দরজা খুলে গেল
আমার হাড়ের ভেতরে।
হাড়ের ভেতর আলো
“রক্তের ভেতর আলো ঢুকলে
সে আর আলো থাকে না—
সে হয়ে যায় স্মৃতি।”
তুমি বলেছিলে
সময়কে ধরে রাখলে
সে রক্তে পরিণত হয়।
আমি বিশ্বাস করিনি।
কিন্তু আজ,
আমার আঙুলের ভিতর দিয়ে
যখন বয়ে গেলো নিঃশব্দ আলো,
আমি দেখি—
প্রেম আসলে একটা ক্ষুধার্ত ছায়া,
যে খেয়ে ফেলে সমস্ত শব্দ।
মৃত পাখির প্রার্থনা
“যে প্রার্থনা উচ্চারিত হয় না,
সে-ই সবচেয়ে ভয়ংকর প্রতিধ্বনি।”
একটা মাঠ পুড়ে যাচ্ছে—
কেউ দেখছে না।
শুধু ছাইয়ের ভেতর থেকে
শিশুর মতো কণ্ঠ
ফিরে ফিরে ডাকছে।
আমি জানি না,
সেই কণ্ঠ তুমি কিনা
নাকি আমারই ছিন্ন ডানা।
যা-ই হোক,
তার শূন্যতায় দাঁড়িয়ে
আমি লিখলাম—
“প্রেম আসলে কোনো উত্তর নয়,
শুধু এক অন্তহীন প্রশ্ন।”
🍂
অদৃশ্য স্থাপত্য
“যেখানে দরজা নেই,
সেখানেই শুরু হয় প্রকৃত প্রবেশ।”
আমরা যতবার মিলেছি
ততবার ভেঙেছে আকাশ।
তারার নিচে তখন
রয়ে গেছে অচেনা নকশা,
যেনো কংক্রিটের ভেতর জন্ম নেয়
একটা মায়াবী বাগান।
আমি হাঁটতে হাঁটতে
দেখেছি সেই গোপন স্থাপত্য—
যেখানে দরজা নেই,
কিন্তু প্রতিটি দেয়াল
আমার নাম ধরে ফিসফিস করে ডাকে।
উপসংহার : ছাইয়ের গর্ভ
“যা ছিন্ন হয়েছিল ডানায়,
তা-ই একদিন জন্ম দেয় অচেনা মহাবিশ্ব।”
আমি কারুর নাম চাইনি,
শুধু শুনেছিলাম
অদৃশ্য ঘন্টার শব্দ।
সে শব্দে জেগে ওঠে
ক্ষুধার্ত তারারা,
অস্থির সমুদ্র,
শূন্যতায় ফিসফিস করা
কালো পাথর।
আমি খুঁজতে গিয়েছিলাম—
তুমি কোথায়?
তুমি ছিলে না আলোতে,
না অন্ধকারে,
না কণ্ঠে,
না ছায়ায়।
তুমি ছিলে কেবল
আমার রক্তের ভেতর
একটা অব্যক্ত স্থাপত্য।
আজ আমি দেখলাম—
মৃত পাখির ডানা,
অগ্নিদগ্ধ মাঠ,
ভাঙা আয়না,
সব একসাথে মিশে যাচ্ছে
এক বিন্দু ছাইয়ে।
সেই ছাইয়ের ভেতরেই
আমি লিখে দিলাম—
প্রেমের শেষ নাম
2 Comments
ভীষন ভালো লাগলো কবিতাগুলো, আর নামকরণও ভীষন ভালো হয়েছে যার জন্য কবিতাগুলো পড়ার আগ্রহ তৈরি করে দিলো ,সব মিলিয়ে একরাশ মুগ্ধতা।
ReplyDeleteভীষন ভীষন ভালো লাগলো
ReplyDelete