জ্বলদর্চি

রাষ্ট্রীয় একতা দিবস /দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে

রাষ্ট্রীয় একতা দিবস 

দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে 

আজ ৩১শে অক্টোবর, রাষ্ট্রীয় একতা দিবস। আমাদের সামাজিক জীবনে এই দিনটির গুরুত্ব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কেন এই দিনটিকে আমরা মানি এবং এর ইতিহাস কি আসুন এই সব কিছুই বিস্তারিতভাবে জেনে নিই 

রাষ্ট্রীয় একতা দিবস হল, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করার জন্য ভারত সরকারের সূচনা করা একটি দিবস। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই দিবসের শুভারম্ভ করেছিলেন। প্রতি বছর ৩১শে অক্টোবর অর্থাৎ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকীতে এই দিনটি পালন করা হয়।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, জাতীয় ঐক্য দিবস দেশের একতা, অখণ্ডতা এবং সুরক্ষার জন্য,  আমাদের জাতির অন্তর্নিহিত শক্তি এবং স্থিতিস্থাপকতা পুনরায় নিশ্চিত করার একটি সুযোগ এনে দেয়। এই দিনটিতে আমাদের দেশের একতা, সংহতি এবং নিরাপত্তা যে কোনও মূল্যে রক্ষা করার বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়।

প্রত্যেকটি দিবসের এক একটি প্রতিপাদ্য বিষয় থাকে।২০১৬ সালের জাতীয় একতা দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়টি ছিল "ভারতের সংহতি"।
🍂

২০১৮ সালের ৩১শে অক্টোবর বল্লভভাই প্যাটেলের ১৪৩তম জন্মবার্ষিকীতে  গুজরাটে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের একটি সুউচ্চ মূর্তির উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই মূর্তিটি র্স্ট্যাচু অব ইউনিটি নামে পরিচিত। বাংলায় বলা হয় ঐক্যের মূর্তি। ১৮২ মিটার লম্বা এই ভাস্কর্য বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য। যা প্রায় ৬০ তলা ভবনের সমান উঁচু।

ভারত রাষ্ট্রীয় একতা দিবস উদযাপন করে, এর অনেক কারণ আছে, যেমন,
ভারতের জাতীয় সংহতিতে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। স্বাধীন ভারতের সাথে দেশীয় রাজ্যগুলির একীকরণের পেছনে তিনি ছিলেন অগ্রণী। তাই, জাতীয় ঐক্য দিবস বা জাতীয় একতা দিবস স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের ঐক্যকে স্মরণ করার প্রতীক।সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের আদর্শ ভারতের আত্মনির্ভর ভারত অভিযানেও প্রতিফলিত হয় , কারণ প্যাটেল ঐক্যবদ্ধ ও সক্ষম ভারতের (এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত) ধারণাকে সমর্থন করেছিলেন।

সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ১৮৭৫ সালের ৩১শে অক্টোবর গুজরাটের নাদিয়াদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ভারতের লৌহমানব হিসেবে পরিচিত।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ।
তিনি ভারতের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। মহাত্মা গান্ধী তাঁকে 'সর্দার' উপাধি দিয়েছিলেন এবং বারদোলির সত্যাগ্রহের নেতৃত্ব দেওয়ার সময় বারদোলির মহিলারা তাঁকে 'সর্দার' বলে ডাকতেন ।
তাঁকে আধুনিক সর্বভারতীয় পরিষেবার প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। তিনি ১৯৩১ সালে করাচিতে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি) অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন । প্রধানমন্ত্রী মোদী ২০১৮ সালের ভারতের ঐক্য দিবসে, অর্থাৎ ৩১শে অক্টোবর ২০১৮ তারিখে প্যাটেলের মূর্তির উদ্বোধন করেন।

রাষ্ট্রীয় একতা দিবসের তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতি অনুসারে, এই দিনটি "আমাদের দেশের ঐক্য, অখণ্ডতা এবং নিরাপত্তার জন্য প্রকৃত এবং সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলা করার জন্য আমাদের জাতির অন্তর্নিহিত শক্তি এবং স্থিতিস্থাপকতা পুনরায় নিশ্চিত করার একটি সুযোগ" প্রদান করে।

ভারত একটি বৈচিত্র্যময় জাতি, তাই ঐক্য বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের লৌহমানব স্মরণে গুজরাটের নর্মদা নদীর কাছে সরদার বল্লভভাই প্যাটেলের একটি বিশাল মূর্তি নির্মাণ করেছে ভারত সরকার।

Post a Comment

0 Comments