জ্বলদর্চি

কবিতা গুচ্ছ/ পারমিতা রায়

কবিতা গুচ্ছ 

পারমিতা রায়ের 
             
           
শারদীয়া ১৪৩২ 
  
এই দুর্গা পুজোয় ঢ্যাং কুড় কুড় বাজতে থাকে ঢাক, 
ঢাকী আসেন সুদূর বাংলা থেকে নিয়ে ঢাকের
সুর , তাল, ছন্দ নিয়ে।
এই  চেন্নাই শহরের বাঙালিরা হয় পাগলপারা , চারিদিকে শোনা যায়,তুমুল হাক ডাক
মাঝে মাঝে বাঙলার বৃষ্টি এসে দেয় ভ্রুকূটি, 
তবে, তামিলনাড়ুর রৌদ্রের 
দাবদাহে, রৌদ্রতাপে
বৃষ্টির জল নেয় ছুটি ।
তুমুল আলোর উৎসব সাজে, 
চেন্নাই শহরের, বাঙালি অ্যাসোসিয়েশন গুলিতে, 
নেই কোনো রাখঢাক
খোলামেলা আনন্দ 
বাঙালিদের প্রাণ, 
দুর্গোৎসবে মেতে ওঠে 
 বাঙালিদের মনপ্রাণ।
শাক দিয়ে তো যায় না ঢাকা লক্ষ মানুষ দোলে
পাঁচ মহাদেশ কাঁপতে থাকে অভাগা ভূমণ্ডলে, 
দশ বারো তো নেহাতই তুচ্ছ
সারা বছর আশায় গুচ্ছ
পুচ্ছ রঙীন খুঁজছে কাকে দুনিয়ার বহূ মানব প্রাণ ভুগছেন অমঙ্গলে ।

মা কিন্তু সার্বজনীন, 
মা সকলের চোরের এবং সৎ মানুষদের , মালিকের এবং শ্রমিকদের, আপাতত দৃষ্টিতে যারা লক্ষী মেয়ে তাদেরও এবং আপাতদৃষ্টিতে যারা অলক্ষ্মী মেয়ে তাদেরও।
এবং যারা জন্ম নেবে , সেই আগামী সন্তানদেরও এবং
শিশুদেরও, যুবকদের ও , মধ্যবয়সীদের ও বৃদ্ধদেরও এবং মন্ত্রী বোর্ডেরও
ঈশ্বর যদি নাও বা থাকে 
জীবন যদি পড়ে দুর্বিপাকে , 
তখন মা দুর্গার আশীর্বাদে সব দুঃখ ভোলানোর এই আসর হোক চমৎকারের ।

ভাবনা গুলো থিমে থিমে আলোয় টাপুর টুপুর 
বৃষ্টি পড়ে বৃষ্টি থামে পুজোর আবেশে, শোনা যায় দিনে নূপুর এর শব্দ মায়ের পায়ে।
পিতৃপক্ষে উদ্বোধনে , 
মায়ের স্থিতি অবন্ধনে 
ভাবছে লোকে লেসার বোকে সবার সেরা সিঁদুর খেলা,লালের সাজে, সজ্জিত 
মহিলাদের বরণ ডালায়, 
রঙীনের খোঁজে, 
শরতের আকাশ জুড়ে 
রক্তিম আভার 
সিঁদুর খেলায়।।

🍂


মার বিদায় বেলায় 
          
যেতেই হবে মাগো 
তোমায় , জানি তা , 
আমরা সন্তানেরা , তবুও 
মা তোমার অপেক্ষায় 
থাকি বছর জুড়ে তোমার এই
অবোধ দীন সন্তানেরা, 
থাকি সকলে তোমার অপেক্ষায়।
কেন মা ফেলে গেলে ধূলোয়, 
এই সন্তানদের, 
এখনো তো রয়েছে , 
অনেক অসুর, 
রয়েছে অনেক দানব, 
দাপিয়ে বেড়ায় তারা সমাজ জুড়ে
তোমার অনুপস্থিতিতে, 
এ্যাখোনো মরেনি তারা, 
চলছে অবিরাম 
তাদের ভীষণ তান্ডব।
এই সকল অসুরদের 
দমন করতে মাগো ,
তুমি এসো বছর, বছর
ওদের বিনাশ করে 
কোরো মাগো তুমি সংহার।
তবু হোলো আজ বিজয়া,
এইতো মা তোমার উপহার।

     
মা দুর্গার কোলে মা লক্ষ্মী 

আজ পূর্ণিমায়, আলোর    স্নিগ্ধতা ঝরে চাঁদের রাতে, 
মা লক্ষ্মীর আগমনে মায়ের পায়ে ,শঙ্খের শব্দে 
মায়ের পায়ে যেন 
নুপুর বাজে।
মা এলো বাঙালিদের ঘরে, 
মোদের হৃদয় জুড়ে, প্রাণ জুড়ে, ফুলের সুগন্ধে সুবাসে। 
মা লক্ষ্মী এলো ঘরে, 
স্বপ্নের চোখে 
আলো ঝলমলে।
আনন্দ ভরে ওঠে গৃহকোণে, 
আশার আনন্দ 
জাগে মনে প্রাণে।
ধূপের সুবাসে বাতাস ভরে, 
মা তোমার আশীর্বাদে 
সোনার ফসল ফলে।
সিঁদুর রঙে রাঙা আকাশে 
তুমি মা এলে সুখের প্রকাশে। 
তোমার হাসিতে কালো মেঘ সরিয়ে ধরার বুকে নতুন ফুল ফুটিয়ে আনন্দের জাগরণে,
সকলের গৃহে শান্তি আসে।।

Post a Comment

0 Comments