Posts

কালিমান্তান (বোর্ণিও)-র লোকগল্প (সবজান্তা চিংড়ির সর্বনাশ)/চিন্ময় দাশ

Image
দূরদেশের লোকগল্প—কালিমান্তান (বোর্ণিও )  চিন্ময় দাশ  সবজান্তা চিংড়ির সর্বনাশ সমুদ্রে ঘেরা দেশ বোর্ণিও। যেদিকে তাকাও, শুধু জল আর জল। সেই জলের মাঝে ছড়ানো ছিটানো টুকরো-টাকরা সব দ্বীপ। বোর্ণিও দ্বীপটা অবশ্য বেশ বড়সড়। এখন তো এই দ্বীপের পূবদিকটা মালয়েশিয়া, আর দক্ষিণ ইন্দোনেশিয়ার অধিকারে আছে।  কিন্তু আমাদের আজকের এই গল্প, এইসব দখলদারির বহু বহু কাল আগের কথা। বোর্ণিওর উত্তরে আছে দক্ষিণ চীন সাগর আর দক্ষিণে জাভা সাগর। বোর্ণিওর সেন্ট্রাল কালিমান্তান রাজ্যটা এই জাভা সাগর ঘেঁষা। কালিমান্তানের একেবারে দক্ষিণের অংশে আছে সেবাঙ্গাউ ন্যাশনাল পার্ক। মনে হবে যেন, জাভা সাগর ফুঁড়ে উঠে এসেছে ঘণ জঙ্গলটা।  একবার হয়েছিল কী, ভয়াণক আগুন লেগে গিয়েছিল জঙ্গলে। বনের কত প্রাণী যে পুড়ে মরেছিল সেই দাবানলে, তার কোন  লেখাজোখা নাই। কিছু পুড়ে মরেছে, কিছু প্রাণ নিয়ে পালিয়েছিল উত্তরের পাহাড়মুখো হয়ে। সে ভারী মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল।  পোড়া ছাই ছাড়া, গাছপালা নাই বিশাল এলাকা জুড়ে। নাই কোন জীবজন্তু। শূণ্য খাঁ-খাঁ প্রান্তর, দিগন্তরেখা পর্যন্ত ছড়ানো। চোখ পড়লেই বুক ফেটে যাওয়ার কথা। কিন্তু দেখে ভারি মজা হোল সমুদ্রের মাছেদের।

আবদুলরাজক গুরনাহ -এক উদ্বাস্তুর প্রতিবাদী লেখনী/সজল কুমার মাইতি

Image
আবদুলরাজক গুরনাহ এক উদ্বাস্তুর প্রতিবাদী লেখনী সজল কুমার মাইতি আবদুলরাজক গুরনাহ এই বছরের অর্থাৎ ২০২১ সালের সাহিত্যের নোবেল পদকজয়ী। গুরনাহের জন্ম ১৯৪৮ সালে। আফ্রিকা মহাদেশের তাঞ্জানিয়া রাষ্ট্রের জাঞ্জিবর নামক এক সুন্দর দ্বীপে জন্ম। এই দ্বীপে ছোটোবেলা কেটেছে গুরনাহের। ভারত মহাসাগরের একটি দ্বীপ জাঞ্জিবর একটি মহানগর। এই দ্বীপেই গুরনাহের বেড়ে ওঠা। কিন্তু ভাগ্যের কালচক্রে উনিশ শতকের ষাটের দশকের শেষভাগে জন্মভূমি চ্যুত হয়ে উদ্বাস্তু হিসেবে ইংল্যাণ্ডে আসতে বাধ্য হন গুনরাহ। ১৯৬৩ সালের ডিসেম্বর মাসে এই জাঞ্জিবর দ্বীপ ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে স্বাধীন হয়। ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্র একসময় সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের কেন্দ্র ছিল। বিভিন্ন ঔপনিবেশিক শক্তি যেমন - পর্তুগীজ, আরব, জার্মান ও ব্রিটিশদের বিভিন্ন রকমের অত্যাচারের সাক্ষী থেকেছেষএই দ্বীপ। এই দ্বীপরাষ্ট্র জাঞ্জিবর সমস্ত পৃথিবীর সঙ্গে ব্যবসা বানিজ্যে বহুকাল থেকে যুক্ত। দাস ব্যবসা ও ঐতিহাসিকভাবে এই রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত। এই জাঞ্জিবর গ্লোবাইলেজশনের আগে ও এক বিশ্বজনীন সমাজের অংশ ছিল। এই স্বাধীন দ্বীপের প্রথম রাষ্ট্রপতি হন আবে

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা -৫৫(উৎসব -৪)

Image
সম্পাদকীয়, সু আর কু দুই ভাই বোন। সু খুব ভাল মেয়ে আর কু কিন্তু ভারি দুষ্টু ছেলে। আজকের উৎসব এই সুকুর গল্পে ভরা। সেটা কেমন?  এই যেমন ধরো মা দুগগা ভাল তো অসুর দুষ্ট। তাইতো মা দুগগা ত্রিশূল বিদ্ধ করে যুদ্ধে হারিয়ে দিল মহিষাসুরকে। অসুরদলনীর সেই মূর্তি প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে পূজিত হল। আর তোমরা আমরা ভিড় করে সেই মূর্তি দেখতে গেলাম। পুরুলিয়ার এক অখ্যাত গ্রামের মাটির ঘরের তেমনই এক দুর্গা মূর্তির ছবি পাঠিয়েছেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক সুদীপ পাত্র। শুধু কি দুর্গা আর অসুর! আমরাও তো দুবছর ধরে প্রতিনিয়ত করোনাসুরের সঙ্গে লড়ছি। সেই নিয়ে গৌর জ্যেঠু অনিকেত নামে যে উপন্যাসটা লিখছিলেন এবারের সংখ্যায় তার চতুর্থ পর্ব। আর একটা মজার কথা এবারের সংখ্যা থেকে তপশ্রী আন্টি তোমাদের জন্য আর একটি ধারাবাহিক উপন্যাস লিখে পাঠিয়েছেন। সেটা সুএর গল্প না কুএর তা বাপু তোমাদের পড়েই বলতে হবে, হ্যাঁ। এবার বলোতো, স্কুলে গিয়ে ক্লাস করা ভাল না অনলাইনে ক্লাস। আমি জানি আগের বছর যখন প্রথম প্রথম অনলাইনে ক্লাস শুরু হল তখন তোমরা কি মজাই না পেয়েছিলে। আর যত দিন যাচ্ছে তত বিরক্ত হয়ে উঠছ ঘরে বসে বসে। করোনাসুরের প্রতি বির

প্রগতিশীল/সন্দীপ দত্ত

Image
গল্প প্রগতিশীল সন্দীপ দত্ত মোটরবাইকটা দাঁড় করিয়ে জটলার মধ্যে গিয়ে গলা বাড়ানোর চেষ্টা করল রাতুল,কিন্তু লোকটাকে দেখতে পেলনা। শরীরটা উপুড় হয়ে আছে। ধূসর রঙের প‍্যান্টের ওপর অনেকগুলো মানুষের রোষমাখা জুতোর দাগে প‍্যান্টের রঙ পাল্টে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ঘিয়ে শার্ট হয়ে গেছে মেটে। রাতুল  ভিড়ের দু'চারজনকে জিজ্ঞেস করতেই ওরা চোখে তাপ নিয়ে বলল,"শালা সরকারি কর্মচারী! দু'হাত ভরে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা নেবে,অথচ কাজের বেলা অষ্টরম্ভা। হাতে স্পীড নেই তো আসিস কেন? বুড়ো হলে তো মানুষ ঘরে থাকে। অফিসেও আসবি আবার ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কাজও করবি,তা কি হয়? আমাদের সময়ের কোনও দাম নেই? চেয়ারটা ছেড়ে একবার দেখ না,স্পীড কাকে বলে দেখিয়ে দেব। বুড়ো হাত নিয়ে কখনও কম্পিউটারের কাজ হয়? শালা চাকরিও দিবি না,চেয়ারও ছাড়বি না,তাহলে তো মার খেতেই হবে।" বলে লোকটার পাছায় সজোরে আরও ক'খান লাথি পড়ল নিমেষে। কান থেকে ছিটকে বেরিয়ে গেল চশমাটা। পথের ধুলোয় লুটোপুটি খেল কাচদুটো।      রাতুলের বুকের কথাই বলল ওরা। মনের কথা। সরকারি অফিসগুলোর এই কয়েকটা বুড়ো লোকের জন‍্যই এখনও তারা বেকার। অভিজ্ঞতার দাম রাখতে গিয়ে অবসর হতে হতেও হয়না।

ভগবান/তড়িৎ ভট্টাচার্য

Image
ভগবান তড়িৎ ভট্টাচার্য  ভগবান কে ? তিনি কোথায় থাকেন? কেমন তাকে দেখতে ? এ সব কথা বলার জন্য অন্য মানুষ আছেন আমার কি ক্ষমতা যে আমি ভগবান সম্বন্ধে আপনাদের অবহিত করবো। আসলে যে বিষয়টা ভেবে একটু লেখার ইচ্ছে আছে তা হলো সবাই তো দেখি ভগবানকে চেনেন একমাত্র আমাকে বাদ দিয়ে। সারা দেশের প্রায় সব বাড়িতেই এই ভগবান সম্বন্ধে নানান উক্তি আমরা শুনি যেমন ভগবান যা করেন মঙ্গলের জন্য কথাটি বলেই মাথায় হাত ঠেকান আকাশের দিকে চেয়ে অর্থাৎ ঐ মহাশূন্যে কোথাও তিনি আছেন সেই উদ্দেশ্যে প্রণামটা পাঠানো। অবশ্যই তাঁর বা তাঁদের ভগবানের সঙ্গে নিশ্চয়ই পরিচয় আছে। তা না হলে এতো নিশ্চিন্তভাবে প্রণামটাকে কি করে পাঠান। এ ছাড়া যেমন ছেলের ও মেয়ের পরীক্ষা আসছে যথারীতি পড়তে নিয়ে যাওয়া থেকে তাকে নিয়ে বসা, পেছনে লেগে থাকা এবং তার সঙ্গে ভগবানকে উদ্দেশ্য করে ভগবান দেখো একটু ছেলেটা বা মেয়েটা যেন পাশ করে যায়। মা সরস্বতীর কাছে নিবেদন নয় যিনি বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী একেবারে সোজা ভগবানকে। কি দারুণ যোগাযোগ। সংসারে অশান্তি হলো সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে এলো সেই কথা- ভগবান এর বিচার করবেন। এতো বড়ো কথা আমায় বলা এবং তারপর কান