জ্বলদর্চি

অসীম ভুঁইয়া



অ সী ম ভুঁ ই য়া 


বৃষ্টি

বৃষ্টি নামল মেঘের গর্ভ ফুঁড়ে
                 যেন অবৈধ সঙ্গম...
বহুদিন বাদে এল রূপসার এসএমএস

 তৃষ্ণায় কাতর নদী কপালেশ্বরী
 যেন এক ফোঁটা কান্নাকেই খুঁজছে

 আকাশের তৃতীয় নয়ন মেঘ
আজ তাই প্রসন্না দেবী ।

বৃষ্টি থামল, এসএমএস পড়া শেষ 
বৃদ্ধ যোগীর মতো স্থির দুটি হাতের তালুতে 
খসে পড়ল একটি নীলপদ্ম ।


স্মৃতিকথা 

ভুলের রাত - গভীরে নক্ষত্রের আনাগোনা 
হাতের আঙ্গুলে ভেঙেছে ঘুমপাতা
 
ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসে সমস্ত স্মৃতিকথা
প্রতিবন্ধন 

ভাঙাচোরা কুবাই ব্রিজের ধারে শুয়ে আছি কতকাল -
শুয়ে শুয়ে নদীটির স্বপ্ন হওয়া দেখি
দেখি এলোমেলো আগাছাদের জালিকাকার
শিরান্যাস 

অনেক ধুলোবালি বুকে জন্মের পরিক্রমা করে
ব্রিজটি।
কংক্রিটের খোঁচায় প্রতিবাদী সরগম ঢেউ হয়ে যায় 
এগিয়ে দেয় নদীটিকে সঙ্গম- সুখে ।

 আমার শুয়ে থাকা মানে প্রতিবন্ধী হতে থাকা ...
গভীর রাত্রির নিঃসঙ্গতাও নাভি  সয়ে যায় 
শিখে যাই বেঁচে ওঠার যন্ত্রনাময় শিল্পকলা ।

এভাবে রাত দিনের মুহূর্তগুলি কুচিকুচি কেটে
 জুড়ে দিই নিজের অজান্তে ... 

ভয়ে নেমে আসে গাছ পাতাদের ফাঁক - ফোঁকরে  
আমি শুয়ে থাকি আরো 
আরো গভীরতর প্রতিবন্ধনে...

হুল

 বৃষ্টি রাত । সমুদ্র -স্রোত 
একলা চলার ভয়
দিনান্তে আজ রক্ত এঁকে ভীষণ পরাজয় 

ঘর ভেঙেছি,  দোর ভুলেছি
স্বপ্ন বোহেমিয়ান 
গভীর মেঘে চাঁদ পেড়েছি ,  কলঙ্কেরই  গান

মৃত্যু নিয়ে মিথ্যে শপথ 
অষ্টপ্রহর  শেষ 
পায়ের পাতায় আঁকচিরা দাগ, বুকভরা বিদ্বেষ 

অনেক কথা পিছলে পড়ে
পথে ছাইয়ের ধূলি 
মরীচিকার ভ্রান্ত জলে করছি কোলাকুলি।

বাঁক  ফিরে যাই,  অন্ধগলি 
চিনতে অনেক ভুল
সময় ঘিরে বিঁধে  আছে, অনন্ত এক হুল।


পথক্রমা 

বাইপাসে পড়ে আছে নগ্ন চাঁদ
চাঁদের গায়ে কোনো দাগ নেই আজ
দাগ শুধু পথক্রমায়...

আমি হাঁটতে হাঁটতে পথ মেপে নিই
 পথে কোনো গর্ত নেই
 গর্ত শুধু বুকের অলকায় ... 

অনেক মৌ- বেদনা পথের ধাবায়  জেগে থাকে 
 জেগে থাকে পর্দার আড়াল
 আড়ালে অনন্ত সুখ

 ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসে পৃথিবী 
পৃথিবীর কাছে আজীবন মৃত
মৃতের শ্মশান তো  চিরকালই মুক।

--------

Post a Comment

0 Comments