মেদিনীপুরের বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রপত্রিকা
ভা স্ক র ব্র ত প তি
অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা মূলত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জেলা। আন্দোলনের জেলা। সেই ব্রিটিশ সময়কাল থেকে আজ পর্যন্ত সেই ট্র্যাডিশান চলছে। ফলে এখান থেকে প্রকাশিত পত্র পত্রিকাগুলিতে তারই ছাপ পড়ে। স্বাধীনােত্তর সময়কালে বিপ্লবীদের কথা কিংবা বর্তমানের নন্দীগ্রাম, লালগড়ের কথাই প্রাধান্য পায় কাগজে। সেখানে বিজ্ঞানের ঠাঁই নেই। আর যেটুকু পাই তাও হাতেগোনা।
বিজ্ঞান মানে স্বাস্থ্য, পরিবেশ, চিকিৎসা, কলা বিজ্ঞান, জনপ্রিয় বিজ্ঞান, পরিবার কল্যাণ, কৃষি সবকিছু বােঝায়। এইসব বিষয় নিয়েই কেবল পৃথক পত্রিকার হদিশ মেদিনীপুর তথা পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে বেশ কম। আপাতত ২০ টি এরকম পত্র পত্রিকার হদিশ মিলেছে। যদিও এগুলির বেশিরভাগই ইতিহাস হয়ে গেছে। যেগুলি চলছে তাও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে।
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ এবং স্টুডেন্টস হেল্থ হােম-এর উদ্যোগে জেলা জুড়ে বিজ্ঞান বিষয়ক নানা কর্মশালা, সচেতনতা বৃদ্ধিও হয়। কিছু ক্লাব, নানা রাজনৈতিক সংগঠন,এন.জি.ও.র প্রচেষ্টায় অবশ্য তা করে থাকে। মাঝেমধ্যে স্মরণিকা প্রকাশিত হয় এদের উদ্যোগে। এর বাইরে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ বিজ্ঞানকে ভালােবেসে প্রকাশ করেন বিজ্ঞান পত্রিকা। একটু নজর দিয়ে দেখলে দেখা যাবে বুকস্টলগুলিতে ন্যুড ছবির বই যে টাকায় বিক্রি হয়, তার পাঁচ শতাংশ বিক্রি হয় না কোনও বিজ্ঞান বিষয়ক পত্র পত্রিকা।
এবারে কয়েকটি বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকার বিবরণ দেওয়া হল--
বিজ্ঞান মনীষা -- মূলত, ডঃ সন্তোষ কুমার ঘােড়ইয়ের উদ্যোগে মেদিনীপুর শহরে 'বিজ্ঞান মণিষা' নামক পত্রিকাটির আত্মপ্রকাশ। ১৯৬৯ এ তিনি মেদিনীপুর কলেজে অধ্যাপক হিসাবে যােগ দেন। বিজ্ঞানী সত্যেন বোস-এর অধীনে বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ-এর 'জ্ঞান ও বিজ্ঞান' পত্রিকার প্রসারে যুক্ত। সেসময় মেদিনীপুর কলেজে বিকালে বিজ্ঞান বিষয়ক আলােচনা হত। তারপর ১৯৭৪-এ সিদ্ধান্ত হয় একটি বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা প্রচারের। সেই মােতাবেক ঐ বছরের জুলাই থেকে প্রকাশিত হতে থাকে বিজ্ঞান মনীষা। ১৯৭৪-১৯৭৬ পর্যন্ত এটি ত্রৈমাসিক আকারেই প্রকাশিত হয়। এরপর ১৯৭৬ সাল থেকে এটি আত্মপ্রকাশ করে মাসিক হিসাবে। সে সময় বিজ্ঞান মনীষা' এমনই জনপ্রিয় ছিল যে তখনই গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১২০০ জন। যা রীতিমত অবাক করার ব্যাপার। একটা বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকার গ্রাহক সংখ্যা যে হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে তা অনেকেই বিশ্বাস করবে না। আসলে, লেখার গুণ, সম্পাদনার গুণ এবং বইয়ের উপস্থাপনা জনপ্রিয় করে তােলে পত্রিকাটিকে।
এমনকি পত্রিকা প্রকাশের জন্য নিজস্ব প্রেস তৈরি হয়। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বহাল তবিয়তে পত্রিকাটি প্রকাশিত হতে থাকে। এরপরই নানা আভ্যন্তরীন কারণে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। পত্রিকার প্রকাশক এবং সম্পাদক হিসাবে ডঃ সন্তোষ কুমার ঘােড়ইয়ের নাম করা যায়। তাছাড়া ডঃ যােগেন দেবনাথ এবং বি এড কলেজের ডঃ অতুল মণ্ডলের নামও এই পত্রিকার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।
একসময় এই পত্রিকায় লিখেছেন পশ্চিমবাংলার বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক মানুষজন। বিশেষ করে আই.আই.টি খড়গপুরের বিজ্ঞানী হর্ষনারায়ণ বােস, গগন বন্দ্যোপাধ্যায়, চুনিলাল রায়, অজিত চৌধুরী, সুকুমার মাইতিদের নাম উল্লেখযােগ্য। বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী নারায়ণচন্দ্র রানা আধুনিক বিজ্ঞানের ওপর লেখা পাঠাতেন টি.আই.এফ.আর. থেকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহু অধ্যাপক লেখা পাঠাতেন নিয়মিত।
‘বিজ্ঞান মনীষা’র দাম ছিল প্রতি সংখ্যা তিন টাকা। শেষের দিকে প্রতি সংখ্যার দাম দাঁড়ায় ১০ টাকা। তবে বছরে ১২ টি সংখ্যার জন্য নেওয়া হত মাত্র ১০০ টাকা। বিভিন্ন সময়ে 'বিজ্ঞান মনীযা' প্রকাশ করেছে নানা বিশেষ সংখ্যা। যেমন – শক্তি বিষয়ক সংখ্যা, অপ্রচলিত শক্তির উৎস সংখ্যা, পানচাষ, মাশরুম, কুসংস্কার বিরােধী সংখ্যা। 'বিজ্ঞান মনীযা'-র উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে মাশরুম চাষ, কুসংস্কার বিরােধীতার ওপর। কিন্তু ধীরে ধীরে এই পত্রিকার সাথে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ লােকজন কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি হওয়ায় ছড়িয়ে পড়েন রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। ঘাটতি দেখা যায় পত্রিকার প্রকাশে। আবার বিজ্ঞান মঞ্চের জন্য লােকজন বেশি করে আগ্রহ দেখানােয় বিজ্ঞান মনীষাতে পরিচালনার অভাব দেখা যায়। তাছাড়া দিনে দিনে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক কারণে বন্ধ হয়ে যায় 'বিজ্ঞান মনীষা'র নিজস্ব প্রেসটি। একসময় সাড়া জাগিয়ে জন্ম নেওয়া মেদিনীপুর জেলার অন্যতম বিজ্ঞান পত্রিকাটি অবশেষে চলে গেল ইতিহাসের পাতায়।
সুস্বাস্থ্য বার্তা -- দুই মেদিনীপুরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত পত্রিকা এই 'সুস্বাস্থ্য বার্তা'। ১৯৮৭ -এর জানুয়ারি মাসে প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়। ত্রৈমাসিক এই পত্রিকাটি সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি বিজ্ঞান পত্রিকা। প্রতি সংখ্যার মূল্য ১০ টাকা। সরকারি রেজিস্ট্রীকৃত পত্রিকার রেজিষ্ট্রেশন নম্বর - R.N. 48108/88। মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগরের নন্দী কম্পিউটার থেকে ছাপানাে হয় ম্যাগাজিন ফর্মের এই সুদৃশ্য পত্রিকাটি। সম্পাদকীয় ঠিকানা - সুস্বাস্থ্য চক্র মেদিনীপুর, সি-3 বাজটাউন, মেদিনীপুর- ৭২১১০১। পত্রিকার সম্পাদক পদে রয়েছেন ডাঃ দিবাকর সামন্ত। মূলত সুস্বাস্থ্য চক্রের একটি প্রকাশনা এই পত্রিকা। এই চক্রের পরিচালকমণ্ডলীতে দুই মেদিনীপুরের বহু ডাক্তার বাবু। সম্পাদকমণ্ডলীতে পুরঞ্জন দাস, সুমিত কুমার সামন্ত, ডাঃ অসীম কুমার মাইতি। সভাপতি পদে ডাঃ জি. কে. ঘােষ এবং সহ-সভাপতি পদে ডাঃ সত্যনারায়ণ ঘােষ, শুভেন্দু শেখর দাস ও অমিত সাহু। কোষাধ্যক্ষ ডাঃ অর্চনা সামন্ত। এছাড়া উপদেষ্টামণ্ডলী রূপে ডাঃ মানগােবিন্দ মণ্ডল, নন্দদুলাল ভট্টাচার্য্য, অধ্যাপক বিমলকৃষ্ণ দাস, শ্যামলেন্দু মাইতি, ডাঃ শ্যামাপদ পাল এবং ডঃ সুবীর কুমার বসু ( ২০১১ এর তথ্যানুযায়ী)। যে কোনও ব্যক্তি বাৎসরিক ৪০ টাকা অথবা আজীবন সদস্য ৪০০ টাকা জমা দিয়ে 'সুস্বাস্থ্য চক্র'-এর সদস্য হলে বিনামূল্যে পেয়ে থাকেন সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য বিষয়ক এই বিজ্ঞান পত্রিকাটি।
পত্রিকার মুখ্য পরিচালকই হলেন পত্রিকার সম্পাদক ডাঃ দিবাকর সামন্ত (এম.বি.বি.এস. - গােল্ড মেডেলিস্ট, এম.ডি. - কলকাতা)। 'সুস্বাস্থ্য বার্তা'-তে বিভিন্ন সময়ে লিখেছেন ডাঃ তাপস রঞ্জন দাস মহাপাত্র, ডাঃ মণীষ প্রধান, ডাঃ বন্দনা বিশ্বাস, অধ্যাপক আঃ এস.এন. বসু, অধ্যাপক ডঃ পি.এন. সেন, ডাঃ প্রণতি সেন, ডাঃ মানবেন্দ্র মান্না, ডঃ এম, কে, সামন্ত, ডঃ এম, বি, সেন, ডাঃ দ্বিপেন্দ্র নাথ সিংহ, ডঃ এস.সি. চক্রবর্তী, ডাঃ জি, কে, ঘােষ, ডাঃ আর.এস. মজুমদার, ডাঃ অসীম কুমার মাইতি, ডাঃ অবিনাশ চন্দ্র রায়, ডাঃ এম. এল. শিকদার, ডাঃ মল্লিকা চ্যাটার্জী, ডাঃ রবীন্দ্রনাথ দত্ত, ডাঃ ই. এন. ঘােষ, ডাঃ সােমা চ্যাটার্জী, ডাঃ হৃষিকেশ লাহা, ড অমিয় কুমার সেনগুপ্ত, ডাঃ আশিষ কুমার, ডাঃ এম. জি, মণ্ডল, ডাঃ রঞ্জিত মণ্ডল, ডাঃ গােবিন্দ গুপ্ত প্রমুখ ১০০ জনের বেশি বিখ্যাত ডাক্তারবাবু। তাঁরা লিখেছেন কৃত্রিম প্রজনন, গর্ভাবস্থায় সতর্কীকরণ, জরায়ুর মুখে ক্যানসার, রজোনিবৃত্তি, মাতৃদুগ্ধ শিশুকে খাওয়ালে, ইউটেরান ইনসেমিনেসান, প্রসূতি মা ও বহুমূত্র রোগ, কুষ্ঠ রোগ ও আমাদের অবস্থান, পরিবেশ পরিষেবা, বিশ্ব বধিরতা দিবস, এইডস, স্মৃতিভ্রংশ, নীরব ঘাতক উচ্চ রক্ত চাপ, ভ্রুণনাশ ও মানসিক প্রতিক্রিয়া, টিকাকরণ ইত্যাদি বিষয়ে।
ভেষজ -- মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক মদনমােহন বেরা ছিলেন এই পত্রিকার অবৈতনিক সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রক। তবে পত্রিকাটির কোনও রেজিস্ট্রেশন ছিল না। মাত্র তিনটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। মার্চ ২০০৬ এর একটি সংখ্যা হাতে এসেছে। দাম ছিল ১০ টাকা। সংখ্যায় পত্রিকা সম্পর্কে লেখা আছে - সম্পাদক মদন মোহন বেরা, উপদেষ্টামণ্ডলীর প্রধান ডাঃ কমলাকান্ত বিশ্বাস, ডাঃ অগম প্রসাদ রায়, ডঃ তারকনাথ রুদ্র, সঞ্জয় কর, আশিষ মণ্ডল, সােমজিৎ মাইতি।
'ভেষজ' পত্রিকাটি মাসিক বিজ্ঞান পত্রিকা ছিল। গ্রীণ ইন্ডিয়া এগ্রো প্রজেক্ট-এর সৌজন্যে পত্রিকাটি প্রকাশিত হত নূতন ডিহি, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর - ৭২১৫০৭ থেকে। সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে "গ্রাম বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও অনেক উদ্ভিদ আছে যেগুলির ভেষজ গুণাগুণ নিয়ে অনুসন্ধান ও গবেষণার প্রয়ােজন আছে। আমরা এই পত্রিকার মাধ্যমে এইসব অজানা অদেখা উদ্ভিদগুলির সম্বন্ধে বিস্তৃত বিবরণ সবার কাছে তুলে ধরতে চাই। যাঁরা এই বিষয়ে সামান্য হলেও আলােকপাত করতে পারবেন, তাঁদের সনির্বন্ধ অনুরােধ জানানাে হচ্ছে তাঁরা যেন কোন দ্বিধা সংকোচ না করে আমাদের সঙ্গে যােগাযােগ করেন। মানব হিতৈষনায় আমাদের সঙ্গে সামিল হােন এবং আমাদের সাহায্য করুন'।
মােট ৪৮ পাতার পত্রিকাটিতে ভেষজ বিষয়ক নানা লেখা ছিল। সেগুলি হ'ল কাজুর যাদু- মিনতি বেরা, রান্নাঘরে ভেষজ রসুন- ডঃ সুচন্দন দাস, অব্যর্থ রােগ নিরাময়ের জন্য কয়েকটি ভেষজ- মদনমােহন বেরা, দেহ সুস্থতার প্রয়ােজনে গাছ গাছালি নিয়ে দু চার কথা- যোগাচার্য্য সুব্রত মুখােপাধ্যায়, শতমূলি - ডঃ কমলাকান্ত বিশ্বাস, ভারতীয় ভেষজ উদ্ভিদের ব্যবহার - ডাঃ হরেন্দ্র কুমার সিংহদেব, পেটের অসুখ নিরাময়ে ৫০ টি ভেষজ- ডঃ অচিন্ত্য কুমার সামন্ত ইত্যাদি প্রবন্ধ।
বিজ্ঞান বর্ণালী -- বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে নিবেদিত 'কন্টাই সায়েন্স একাডেমি' কতৃক প্রকাশিত বার্ষিক বিজ্ঞান পত্রিকা হোলো "বিজ্ঞান বর্ণালী"। পত্রিকাটির প্রথম প্রকাশিত হয় এপ্রিল ২০১৭ তে। দ্বিতীয় সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে জুন ২০১৮ তে। এবং তৃতীয় সংখ্যা এপ্রিল ২০১৯ তে হলেও এখনও ২০২০ এর সংখ্যা প্রকাশিত হয়নি।
পত্রিকার প্রকাশক 'কন্টাই সায়েন্স একাডেমি'র সম্পাদক তথা বিজ্ঞান শিক্ষক শ্রেয়ম জানা ও সভাপতি তথা কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের অধ্যাপক ড. প্রদীপ্ত পঞ্চাধ্যায়ী। যাঁরা বিজ্ঞানকে ভয় পায় বা যাঁরা বিজ্ঞানকে ভালোবাসে, তাঁদের জন্য এই 'বিজ্ঞান বর্ণালী' পত্রিকার প্রকাশ করা হয়। সম্পাদকমণ্ডলীতে আছেন অনুভব বেরা, দিলীপ বেরা, কৌশিক নন্দ, সৌম্যজিৎ সাহু, উদয়শঙ্কর জানা ও চন্দন ভুঁইয়া।
'কন্টাই সায়েন্স একাডেমি' হলো বিজ্ঞান শিক্ষক এবং অধ্যাপকদের একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সংগঠন। এখানে কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নয়, কেবল বিজ্ঞান চেতনা ও বিজ্ঞান ভাবনা প্রকাশ পায় নানা ভাবে। এই পত্রিকায় ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিছু সহজ হাতে কলমে বিজ্ঞান পরীক্ষার উপস্থাপন করা থাকে। যা খুব আকর্ষণীয়। মূলত বিজ্ঞান শিক্ষক, অধ্যাপক, গবেষকরা লেখেন এখানে। পত্রিকাটির দাম ৩০ টাকা হলেও ছাত্র ছাত্রীদের জন্য মাত্র ২০ টাকা। কোনো সরকারি রেজিস্ট্রেশন এখনও হয়নি পত্রিকাটির।
মেদিনীপুর কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. সুভাষ চন্দ্র সামন্ত, ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টার এর অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী বিধান কুমার ভৌমিক, হাওড়া যোগেশ চন্দ্র গার্লস হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা আরতি মুখোপাধ্যায়, দিঘা ডি. জে. শিক্ষাসদনের শিক্ষক নন্দগোপাল পাত্র, অল ইন্ডিয়া রেডিও এর প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ ড. মানস প্রতিম দাস, রামনগর কলেজের অধ্যাপক বিনয় ভূষণ দাস, জুনবনি রবীন্দ্র বিদ্যভবনের প্রধান শিক্ষক দিলীপ বেরা, রয়েল আই টি আই এর ডিরেক্টর বরুণ জানা, বিখ্যাত কুইজ মাস্টার ও শিক্ষক ড. মৌসম মজুমদার, প্রধান শিক্ষক বসন্ত কুমার ঘোড়ুই, প্রধান শিক্ষক দুর্গাপদ মিশ্র সহ আরো অনেকে।
আরো অনেকে এই পত্রিকায় লেখেন। যেমন, কন্টাই পাবলিক স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল সমরেন্দ্র নাথ দাস, কাঁথি হাই স্কুলের শিক্ষক সৌম্যজিত সাহু, কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের কৌশিক নন্দ, বিজ্ঞান শিক্ষক চন্দন ভূঁঞা, বিজ্ঞান শিক্ষক অনুভব বেরা সহ আরো অনেকে। পত্রিকাটি এখন জেলার মধ্যে টিমটিম করে বিজ্ঞান প্রসারে ও প্রচারে বাতি জ্বালিয়ে রেখেছে।
বিজ্ঞানের খবর -- ট্যাবলয়েড সাইজের মাসিক পত্রিকা। অনিয়মিতভাবে প্রকাশিত হত। ১৯৯৩ সালের ২৯ শে নভেম্বর পত্রিকার প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। এখন অবশ্য প্রকাশ হচ্ছেনা। পত্রিকার সম্পাদক তমলুক শহরের হ্যামিল্টন হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ড. সােমনাথ মিশ্র।
'বিজ্ঞানের খবর' নামে পত্রিকাটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর - ৪০/এ/৯৩-টি সি। চার পাতার কাগজটি দুই মেদিনীপুরের অন্যতম সমীহ আদায়কারী বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদপত্র। তমলুক সায়েন্স ফোরামের পত্রিকা এটি। পত্রিকাটিতে নিয়মিত লিখতেন ড. সােমনাথ মিশ্র, ডাঃ কল্যাণময় বসু, বিদ্যুৎবরণ দে, ডাঃ স্বপন ভৌমিক, অধ্যাপক তপন মিশ্র, কার্তিক চন্দ্র জানা প্রমুখ। দাম ছিল ২ টাকা প্রতি সংখ্যা। বিদ্যাসাগর প্রেস থেকে ছাপা হত। উপদেষ্টামণ্ডলীতে যাঁদের নাম ছিল তাঁরা হলেন ডাঃ কল্যাণময় বসু, কার্তিক জানা, অধ্যাপক বিদ্যুতবরণ দে, ডাঃ ডি.কে. পাত্র, ডাঃ শান্তনু পতি, ডাঃ স্বপন কুমার ভৌমিক, নন্দদুলাল জানা, রামেশ্বর মিশ্র, বুলু লাহা, কৃষ্ণা মজুমদার, গিরিজাশঙ্কর ভট্টাচার্য, দীনবন্ধু গােস্বামী, তরুণ সামন্ত, মিজারুল রহমান, রঞ্জিত কর, বৈদ্যনাথ বেরা, গৌরহরি মাইতি, গােবর্ধন মাইতি, কালােবরণ পট্টনায়ক, সরােজ চক্রবর্তী, অধ্যাপক অশােক মিশ্র, সাম্য চক্রবর্তী, নৃপেন্দ্রনাথ বেরা, সুজাউদ্দিন আহমেদ, সুশান্ত অধিকারী, করবী দে, আবির চক্রবর্তী, স্বপন কুমার চন্দ এবং অদ্বৈত দাস। পত্রিকার যে সংখ্যাটি (২৬ শে কার্তিক, ১৪১২ ) হাতে এসেছে তাতে ছাপানাে হয়েছে ক্লোন ঘােড়া, ব্যাকটেরিয়ার আসবাব, বিরল ইঁদুর, বিজ্ঞান শিক্ষা ও সামাজিক পরিবেশ, বিজ্ঞান মঞ্চের সম্মেলন ও আমরা, তৃষ্ণার্ত পৃথিবী ইত্যাদি লেখাগুলি। পত্রিকার শুরুতেই রয়েছে আলবার্ট আইনস্টাইনের কথা। বাইরের পৃথিবীর পদার্থবিদ্যা যত দরকার, বাইরের পৃথিবীকে পদার্থবিদ্যার প্রয়ােজন তার চেয়ে বেশি। ২০১৮ তে পত্রিকাটি একবার নতুন করে প্রকাশিত হলেও দ্বিতীয় বার আর প্রকাশ হয়নি। তখন এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের তৎকালীন ডিপিও সুমন বিশ্বাস। পত্রিকার সহ সম্পাদক হয়েছিলেন ভাস্করব্রত পতি। আবারও পত্রিকাটি নিয়মিত প্রকাশের ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন সম্পাদক ড. সোমনাথ মিশ্র।
প্রকৃতি ও বিশ্ব -- বছরে চারটি সংখ্যা হিসেবে প্রকাশিত হত প্রকৃতি ও বিশ্ব পত্রিকাটি। ১৯৯৫ সাল থেকে প্রকাশনা শুরু হলেও এখন বন্ধ। মেদিনীপুর সায়েন্স সেন্টার, গােলকুঁয়াচক, মেদিনীপুর থেকে প্রকাশিত হত। প্রধান সম্পাদক ছিলেন ড. শৈবাল রায়। প্রতি সংখ্যার মূল্য ৭ টাকা। মূলতঃ স্থানীয় দূষণ সমস্যার উপর সমীক্ষামূলক লেখা গুরুত্ব পেতো এখানে।
বাঁকুড়া যুক্তিবাদী -- এটির রেজিস্টার্ড ঠিকানা হল ৭২/৮ দেবী নিবাস রােড, কলকাতা - ৭৪। প্রতি মাসের পয়লা তারিখে মুদ্রক, প্রকাশক, স্বত্ত্বাধিকারী এবং সম্পাদক তরুণ রক্ষিতের ব্যবস্থাপনায় প্রকাশিত হচ্ছে। ট্যাবলয়েড সাইজের কাগজের দাম ২ টাকা। এতে পরিষ্কার লেখা রয়েছে ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি এবং হিউম্যানিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখপত্র। সমিতির রেজিষ্ট্রেশন নং - এস/৬৩৪৯৮।
প্রতি রবিবার যুক্তিবাদী সমিতির পক্ষ থেকে আলােচনা সভার আয়ােজন করা হয়। তান্ত্রিক জ্যোতিষী অলৌকিক ক্ষমতাধরদের বুজরুকি ফাঁসের ঘটনা হাতে কলমে দেখানোর জন্য যুক্তিবাদী সমিতি করে থাকে 'অলৌকিক নয় লৌকিক' নামক অনুষ্ঠান। বিজ্ঞান ও কুসংস্কার বিষয়ক নানা লেখা এতে প্রকাশিত হয়। কবিতাও থাকে। পত্রিকাতে বিজ্ঞাপন আকারে পাঠকদের জানানাে হয়। পত্রিকা সম্বন্ধীয় মতামত জানাতে অথবা কোনাে অলৌকিক ঘটনার ব্যাখ্যা জানতে চিঠি লিখতে বলা হয়। পত্রিকার চারটি পাতায় চারটি বিশেষ বাক্য লেখা থাকে পাঠকদের জন্য। সেগুলির কয়েকটি হল – (১) এ যুগের অনেকেই বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করলেও বা বিজ্ঞানের কোনাে বিভাগকে নেশা হিসেবে গ্রহণ করলেও মনেপ্রাণে বিজ্ঞানী হতে পারেননি, পারেননি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গীকে গ্রহণ করতে (২) সহধর্মিনী, প্রেমিকা, সহযােদ্ধার চেয়েও নারীর বড়াে পরিচয় হয়ে ওঠা উচিত সে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, স্বাধীন, স্বতন্ত্র সত্তা (৩) সাংস্কৃতিক আন্দোলন কখনই সদস্য বাড়িয়ে দল ভারি করার হুজুগ নয়। এই আন্দোলন কিছু আগিয়ে থাকা চিন্তাকে বহু মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেবার আন্দোলন (৪) আজ পর্যন্ত যত অবতার দেখা গেছে সব অবতারই রােগমুক্তির জন্য রােগীকে ঈশ্বরের উপর ভরসা রাখতে বললেও নিজেরা ভরসা রাখেন ঈশ্বরের পরিবর্তে ডাক্তারের উপর।
বিজ্ঞান ও সমাজ চিত্র -- বিজ্ঞান মঞ্চের হলদিয়া শাখার উদ্যোগে একসময় দেবদাস মুখােপাধ্যায়ের সম্পাদনায় প্রকাশিত হত 'বিজ্ঞান ও সমাজচিত্র' পত্রিকাটি। ত্রৈমাসিক এই পত্রিকাটি কয়েক বছর চলার পর বন্ধ হয়ে যায়। আশিষ লাহিড়ী ছিলেন এই পত্রিকার কর্ণধার। নিয়মিত লিখতেন দেবদাস মুখােপাধ্যায়, অরুনাভ মিশ্র প্রমুখ। তবে পত্রিকাটি সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায়নি।
টপ কোয়ার্ক -- প্রথমে পত্রিকাটির নাম ছিল 'কোয়ার্ক'। পরবর্তীতে নাম হয় 'টপ কোয়ার্ক'। ১৯৯৩ সালে ঝাড়গ্রাম থেকে এটি প্রকাশ করেছিলনে বিজন ষড়ঙ্গী। কিন্তু কয়েক বছর পরে তিনি আত্মহত্যা করলে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। অথচ মেদিনীপুরের বিজ্ঞান পত্রিকা হিসেবে এটির ভূমিকা ছিল নজরকাড়া। ত্রৈমাসিক এই পত্রিকাটির দাম ছিল ৩০ টাকা। ঝাড়গ্রামের বিশিষ্ট লােকগবেষক ড. সুব্রত মুখােপাধ্যায় জানান, ঝাড়গ্রাম ব্লকের চিচুলগেড়িয়াতে সিলিকোসিস রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। বেশ কিছু লােক মারা যায়। এরপর বিষয়টি নিয়ে সুপ্রীম কোর্টে যায় এই পত্রিকাটি। ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয় মালিকপক্ষ। ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের সম্প্রসারণের সময় গাছ কাটার ঘটনাতে প্রতিবাদে মুখর হয়েছিল এই পত্রিকা গােষ্ঠী। বিভিন্ন সময় বিজ্ঞান বিষয়ক প্রদর্শনী, আলােচনা সভা, সেমিনার আয়ােজন করত 'টপ কোয়ার্ক'। এই পত্রিকার সাথে নানাভাবে যুক্ত ছিলেন বিজ্ঞানী ড. সূর্যেন্দু বিকাশ কর মহাপাত্র, সুকোমল বসু প্রমুখ।
বাই মান্থলী স্বাস্থ্যশ্রী রক্ষা -- দ্বিমাসিক এই পত্রিকাটি ১৯৯১ এর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম প্রকাশিত হয়। এখনও প্রকাশিত হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর থেকে নিবন্ধীকৃত এই পত্রিকার সম্পাদক ডাঃ সমীর রঞ্জন মণ্ডল। কাঁথিতে এর সদর দপ্তর। মূলত স্বাস্থ্য বিষয়ক লেখা প্রকাশিত হয়।
উপরােক্ত পত্রিকাগুলির বাইরে আরও যেসব পত্র-পত্রিকার সন্ধান পাই সেগুলি সম্পর্কে তেমন বিস্তৃত তথ্য মেলে না। এগুলি বিজ্ঞান, পরিবেশ, কৃষি বিষয়ক লেখা প্রকাশ করে থাকে। পত্রিকাগুলির অধিকাংশই বন্ধ। উত্তর ইন্দা (খড়গপুর) থেকে অশােকানন্দ প্রসাদের ত্রৈমাসিক 'ফ্লোরিকালচার', সঙ্গত বাজার থেকে নরেন্দ্রনাথ দাসের 'কৃষক কল্যাণ’, ক্ষীরপাই এর অলােক কুমার ঘােষের 'মাসিক পল্লী প্রচার', রাজারাম সিংয়ের 'বনবাসী সমাচার’, ভগবানপুরের নিকুঞ্জবিহারী দত্তের মাসিক 'সচিত্র কৃষক’, অরুণাংশু প্রধানের 'হোমিও বার্তা', সােমনাথ রায়ের 'আর্যভট্ট', ঝাড়গ্রামের দীপ্তিবিকাশ পালের 'গণবিজ্ঞান চেতনা' বা 'জ্ঞান বিজ্ঞান জিজ্ঞাসা’, প্রাণতােষ মাইতির 'স্বাস্থ্য বার্তা’, সনাতন মাইতির 'বিজ্ঞান বার্তা’ উল্লেখযােগ্য।
কৃষক ফ্রন্টের খবর গুরুত্ব পেতাে ১৯৭৩ থেকে প্রকাশিত 'মাসিক পল্লীপ্রচার'এ। সম্পাদক ছিলেন অলােক কুমার ঘােষ। ১৯৭৫-এ অবশ্য পাক্ষিক হয়ে যায়। ঘাটালের ক্ষীরপাই থেকে প্রকাশিত হত। আবার 'বনবাসী সমাচার’ ছিল নিখিল ভারত বনবাসী পঞ্চায়েতের স্থানীয় মুখপত্র। এতে বনজীবী মানুষের সমস্যা প্রাধান্য পেলেও জাতীয় আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ যেমন রাশিয়ার সাথে ভারতের অর্থনৈতিক সম্পর্ক, আসাম সমস্যা ইত্যাদির উপরে বিশ্লেষণাত্মক রচনা ও তথ্য এবং স্থানীয় পরিবেশ নির্ভর গল্প, পদ্য-ও প্রকাশিত হয়ে থাকে। এটি চার পৃষ্ঠার ক্রাউন ১/৪ কাগজ। 'সচিত্র কৃষক' মাসিক পত্রিকাটি ১৯০৭ থেকে ১৯১৪ পর্যন্ত মাত্র ৮ বছর ধরে প্রকাশিত হয়েছিল। কৃষি ও কৃষকের উন্নতি বিধানের চেষ্টায় নিয়ােজিত ভগবানপুরের জনাদাঁড়ি গ্রামের নিকুঞ্জবিহারী দত্তের সম্পাদনায় প্রকাশিত পত্রিকাটির প্রকাশস্থল জানা যায়নি। কারও কারও মতে এটি কলকাতা থেকে ছাপা এবং প্রকাশিত হত। সম্প্রতি ঘাটাল থেকে কেশব মেট্যার সম্পাদনায় বিশিষ্ট শিল্পীদের এই সময়ের চিত্রকলা নিয়ে 'মহুল ডট ইনে'র 'করোনা Canvas' প্রকাশিত হয়েছে। এই অতিমারীর সময়ে এটি একটি ভিন্ন স্বাদের পাওয়া।
দুর্ভাগ্যের বিষয় পূর্ব মেদিনীপুর,পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম থেকে বিজ্ঞান বিষয়ক পত্র পত্রিকা আজ আর প্রকাশিত হয় না তেমনভাবে। বিজ্ঞান বিষয়ক চর্চাও স্তিমিত। ক্যারিয়ার সর্বস্ব মানসিকতা আর আত্মকেন্দ্রীকতা এর মূল কারণ। দুই মেদিনীপুর থেকে বহু ছাত্রছাত্রী বিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করছেন, বিজ্ঞানী হয়েছেন অথচ তাঁদের মধ্যে বিজ্ঞান বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধির ইচ্ছা সেভাবে প্রকাশিত হয়নি।
এখানেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র আইআইটি (খড়গপুর)। অথচ তেমন বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা কোথায়? পাঠকও নেই। লেখকও তাই অনুপ্রেরণা পাচ্ছে না লেখার। তবে কিছু সাহিত্য পত্র-পত্রিকায় মাঝে মধ্যে দু একটা বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ লক্ষ্য করা যায়। যদিও তা অতি নগণ্য। বেশিরভাগ জগতেই থাকে রাজনৈতিক খবরাখবর, সামাজিক অধঃপতন এবং একে অন্যের প্রতি বিষোদগার জাতীয় সংবাদ। বিজ্ঞান, পরিবেশ, কৃষি সেখানে ব্রাত্য।
তথ্যসূত্র :
১. সারস্বত সাধনায় মেদিনীপুর - পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘ, মেদিনীপুর জেলা কমিটি (২০০১), [মেদিনীপুর জেলার পত্র পত্রিকা - দীপঙ্কর দাস]
২. মেদিনীপুর ও ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিবর্তন (দ্বিতীয় খণ্ড) - বিনােদশঙ্কর দাশ ও প্রণব রায় (১৯৯৮) [সাময়িক পত্র পত্রিকা - পুলক রায়]।
৩. ব্যক্তিঋণ – ড. সন্তোষ কুমার ঘােড়ই, ডাঃ দিবাকর সামন্ত, বিমল দাস, অহিভূষণ পাত্র, ড. সােমনাথ মিশ্র, আশিষ লাহিড়ী, ড. সুব্রত মুখােপাধ্যায়, ড. মদনমােহন বেরা, শ্রেয়ম জানা, ড. মৌসম মজুমদার প্রমুখ।
-----
2 Comments
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রপত্রিকার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। জেলায় জেলায় সাহিত্যপত্রিকা প্রকাশ, সম্পাদনা ও লেখকের অভাব নেই কিন্তু বিজ্ঞান বিষয়ক রচনা লিখবার মানুষ আরও কম। এই প্রতিবেদন টি উল্লেখযোগ্য। প্রসঙ্গত জানাই " বিজ্ঞান মনীষা" আসানসোলেও আমি মাঝেমধ্যে পেয়েছি, / পার্থ প্রতিম আচার্য
ReplyDeletecan anyone give the contact number of tamluk science society?
ReplyDelete