রাত আকেলি হ্যায় – একলা রাত, লুকোনো পাপ, রহস্যের ঠাসবুনট।
রেটিং – 4/5
পরিচালনা - হানি ত্রেহান
অভিনয় – নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী, রাধিকা আপ্তে, তিগমংশু ধুলিয়া, শিবানী রঘুবংশী, ইলা অরুণ, নিশান্ত দাহিয়া, স্বানন্দ কিরকিরে, আদিত্য শ্রীবাস্তব, খালিদ তায়াবজি।
মুক্তি – ৩১ জুলাই, ২০২০ / নেটফ্লিক্স
অর্থ, ক্ষমতা আর কামবাসনা – এই ত্রয়ীর কম্বিনেশন খুব ‘ডেডলি’! এই ককটেলের ঝাঁঝে সত্যকে চেপে দেওয়া যায়, পরিবর্তন করে ফেলা যায় অনায়াসে। এর নেশায় বিকিয়ে যায় আত্মসম্মান বোধও। কিন্তু এই ডেডলি কম্বিনেশন কখন যে মানুষকে ডেডবডি করে দেয় সেই বাস্তবিকতাই অত্যন্ত সহজভাবে তুলে ধরেছেন পরিচালক। উত্তরপ্রদেশের বিয়ের মরসুম। এক সুন্দর সাজানো জমকালো পারিবারিক পরিবেশে শুরু হয় গল্প। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই পাল্টে যায় ছবি। বরের ঘরে সাজানো খাটে পাওয়া যায় সদ্য বিবাহিত বরের গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত মৃতদেহ। চার দেওয়ালের মধ্যে ঘটে যাওয়া এক নিখুঁত খুনের জট ছাড়াতে হাজির হন ইন্সপেক্টার জটিল যাদব (নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী)। তার তদন্তের হাত ধরে গল্প নেয় একাধিক মোড়। পরিস্থিতির সাথে সাথে বদল ঘটে পারিবারিক সম্পর্কের, পাল্টায় বয়ান, ধাপে ধাপে এক জটিল খুনের রহস্যভেদের সাথে সাথে খুলতে থাকে পাঁচ বছর আগে এই পরিবারকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া নানান পাপচক্রের জট।
ক্ষুরধার অভিনেতা হিসেবে নিজেকে বারবার প্রমাণ করে চলেছেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি।‘রাত আকেলি হ্যায়’ এর একগুঁয়ে পুলিশ অফিসার জটিল যাদব তার ব্যতিক্রম নয়। নাওয়াজের অভিনয় ‘রাত আকেলি হ্যায়’ ছবির কাণ্ডারি হলে তাকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন রাধিকা আপতে। খুব সুন্দর ও নিখুঁত করে সাজানো এই গল্পের প্লট। যার ফলে প্রতিটি ধাপেই বাড়তে থাকে কৌতুহল, রহস্য ক্রমেই ঘনিভূত হয়ে ওঠে। এই ছবির গল্প প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পরিচালিত হয়েছে নারী চরিত্রদের হাত ধরে। নির্যাতিতা, প্রতিবাদী, সাহসিনী, নির্ভয়া, স্নেহময়ী- নারীর নানা রূপ বিস্মিত করেছে। পরিবেশ-পরিস্থিতি, আর্থিক অনটন কিংবা সম্মান বাঁচানোর তাগিদ কীভাবে এক মা অথবা মেয়ে, এক স্ত্রী অথবা রক্ষিতার জীবনের গতিপথ বদলে দিতে পারে এটাই ছবির সবচেয়ে শক্তিশালী বিষয়।
ছবিতে ক্রাইম থ্রিলার জ্যঁরের সব উপকরণই রয়েছে সমান অনুপাতে। কোথাও কোনও খামতি চোখে পড়ে না ছবির সেট থেকে শুরু করে ক্যামেরায়। কস্টিউম থেকে শুরু করে মেকআপ এক কথায় বলতে গেলে ছবিকে খুব যত্নের সঙ্গে বিশ্বাসযোগ্যভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। লক্ষ্ণৌ, কানপুরের গলি থেকে রাজপথ প্রতিটি ফ্রেমই যেন পার্ফেক্ট। ছবিকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে কোনও পর্বে গিয়েই একঘেয়েমি ভাব তৈরি হয়না। পরিচালনাতে কোনও খামতি না থাকলেও ছবির গল্প বলার ধরন বেশ কিছু চেনা ছবির কথা মনে করিয়ে দেয়। সময় এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে জটিলতার দাপট বৃদ্ধি পেলেও বেশ কিছু টুইস্ট ও টেরেফিক মোড় দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখে শেষ পর্যন্ত। ইতিমধ্যে নিজের টুইটার হ্যাণ্ডেলে এই সিনেমাটিকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে রিলিজ হওয়া সেরা সিনেমা হিসেবে মন্তব্য করেছেন এবং সিনেমার সাথে জড়িত সমস্ত কুশীলবদের অভিনন্দন জানিয়েছেন পরিচালক সৃজিত মুখার্জী।
রেটিং :
5 অসাধারণ
4 বেশ ভালো
3 ভালো
2 দেখতে পারেন
1 না দেখলেও চলবে
0 Comments