জ্বলদর্চি

রবিবারের গুচ্ছকবিতা

রবিবারের গুচ্ছ কবিতা 
পা র্থ  সা র থি  চ ক্র ব র্তী


আলো-ছায়া   

মাটির কাছে একগাছা আবছা আলো 
নিত্য খেলা করে ছায়ার সাথে 
পাখিরা ঝাঁক বেঁধে আকাশচারী হয় 
অদৃশ্য জাল কেটে শূন্যে ভেসে বেড়ায় 
শূন্য থেকে মহাশূন্যে পাড়ি দেয় 
পৃথিবীর বুকে নিজের ঠিকানা লিখে রেখে 

বনের পশুরা সহজেই মেতে ওঠে আদিম খেলায় 
যার নিয়মকানুন আমি কিছুই বুঝি না 

একাই বসে আছি ঘাসের বনের উপর 
যা বলতে চাই, বা না বলতে চাই
বলেই যাচ্ছি, কেউ শুনেও শুনছে না।


 ঝর্না   

ঝর্নার জলে আমার ঠিকানা ভেসে যায় 
ঠোক্কর খায় পাহাড়ি পাথরের গায়
বিশ্বাস করো, কিছু পাথর নরমও হয়
চোখের জলেও ভেঙে যায়,  আর ঝর্নার জল!

প্রবাহের মধ্যে খুঁজি আপাত কঠোরতা
যেন সর্বস্ব আমার মুষ্টিবদ্ধ হাতের তালুতে 

পাথরের গায়ে শৈবাল জমে প্রবাহের বিপরীতে 
ঠিকানাও আশ্রয় পায় অনৈতিক কোণে 

চারদিকের নিস্তব্ধতা খানখান হয়ে যায় 
হঠাৎ বয়ে যাওয়া অর্বাচীন এক দমকা হাওয়ায়


বর্ষাসাজ 

 বর্ষাসাজে সেজেছে আজ গ্রাম, শহর
কৃষক হরি সকাল থেকে পড়ে আছে ক্ষেতে
সে প্রাণপাত করে কি বুনছে, সবাই জানে 
কিন্তু কোন ফসলে কতটা ঘাম মিশে আছে 
তা শুধু কৃষক রহিম ছাড়া আর কি কেউ জানে? 

হরির ছেলে হারাধন পাশের বাড়ি যায় 
অনলাইনে ক্লাস করতে, রফিক ও আসে সেখানে 
অন্তর্জালে যুক্ত করে বিদেশী অ্যাপে অঙ্ক কষে
শুনে হরি মাথা চুলকে আকাশ দেখে

সময়ের চাল মানুষকে একসাথে রেখেও,
কত আলাদা করে রাখে সেই মানুষের থেকে 


ধানক্ষেত ও বালক

সুদীর্ঘ একটা ধানক্ষেত রাস্তার পাশে শুয়ে আছে 
ওপারে একটা লেভেল ক্রসিং 

ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যে একটা বালক একা হেঁটে যাচ্ছে 
জলে থৈ থৈ মাঠের পাশে 

তার ছাইরঙা হাফপ্যান্টে ফুটে উঠেছে মেঘের রঙ
সূর্য-চাপা আবছা আলোতে

ঢাকা পড়ছে সব কষ্ট, না-পাওয়ার অভিমান 
যেতে যেতে মাঝে মাঝে সে থামছে

জলে ডুবে থাকা ধানক্ষেতে খুঁজে বেড়াচ্ছে নিজেকে 
দু'হাত দিয়ে তুলে আনছে কাদামাখা ভাত





Post a Comment

2 Comments

  1. প্রতিটি কবিতাই খুব ভালো লাগল।শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই কবিকে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা নিরন্তর ।

      Delete