জ্বলদর্চি

বিজ্ঞানে ঈশ্বরের চিহ্ন -১৩ / পূর্ণচন্দ্র ভূঞ্যা


★  বিজ্ঞানে ঈশ্বরের চিহ্ন ― ১৩

◆ পর্ব ― ১৩

সময় একমুখী ?

"অতীত হল বিদেশ যেখানে কাজকর্ম পৃথকভাবে সম্পন্ন হয়। কিন্তু ভবিষ্যৎ থেকে অতীত কেন এত আলাদা? আমরা কেন অতীতকে স্মরণে রাখি, ভবিষ্যৎকে নয়?"― এমন মোক্ষম প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন ব্রিটিশ ছোট গল্পকার এল. পি. হার্টলে, তাঁর 'The Go Between' পুস্তকে। সত্যিই তো, কাল বা সময় কেন অতীত পেরিয়ে বর্তমান হয়ে ভবিষ্যৎ অভিমুখী? উল্টো দিকে কেন প্রবাহিত হবে না সে? সময়ের সঙ্গে প্রসারণশীল ব্রম্ভাণ্ডেরই বা কী সম্পর্ক? এমন হাজারো প্রশ্নে নাজেহাল পণ্ডিতগণ।

আসলে সময় হল এমন এক স্বতন্ত্র রাশি যা একটি নির্দিষ্ট ত্রিমাত্রিক দেশে ঘটা দুটি অনুরূপ (হুবহু একই) ঘটনার ভেতরে মাত্রাগত পার্থক্য নির্দেশ করে। এ হেন কালের ধর্ম সম্বন্ধে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ বদল হয়েছে। বিংশ শতকের আগে মানুষ 'পরম কাল' (Absolute Time)-এ বিশ্বাস করত। কিন্তু আইনস্টাইনের অপেক্ষবাদ তত্ত্ব আবিষ্কার সে-ধারণার গোড়ায় আঘাত হেনে সমূলে উৎখাত করে। পরিত্যক্ত হয় পরম কাল সম্পর্কিত ধ্যান-ধারণা। তার বদলে কালের মাপন পর্যবেক্ষকের ব্যক্তিগত বিষয়ে পরিণত হয়েছে যা তার নিজস্ব ঘড়ি দ্বারা নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ কালের যাপন বিভিন্ন পর্যবেক্ষকের কাছে ভিন্ন ভিন্ন রকম সাংখ্যমানে পর্যবসিত। 

সময় কোন অভিমুখে প্রবাহিত হয়? ― এমন প্রশ্নের সম্মুখে বাঘা বাঘা পণ্ডিতগণ বারবার হোঁচট খেয়েছেন। আর তাই মহাকর্ষের সঙ্গে কণা-বলবিজ্ঞানকে মেলানোর চেষ্টার ফলে বাস্তব কালের সঙ্গে ঋনাত্মক বা কাল্পনিক কালের ধারণা উপস্থাপিত করা হয়েছে।

ব্রম্ভাণ্ড সৃষ্টির নেপথ্যে বিগব্যাঙ তত্ত্বের অবদান আজ সর্বজন স্বীকৃত। এই বিগব্যাঙ থেকে সময়ের পথ চলা শুরু বলে পণ্ডিতদের ধারণা। যেহেতু প্রচলিত গণিত বা বিজ্ঞানের বিধিগুলি বিগব্যাঙ কাল কিংবা তার আগে প্রযোজ্য নয়, তাই বিগব্যাঙ ক্ষণই শূন্যকাল (Zero Time)-এর ধারণা দেয়। তারপর থেকে ব্রম্ভাণ্ডে বাস্তব কাল (ধনাত্মক সময়)-এর পথ চলা শুরু। গণিতের সংখ্যা তত্ত্বের মতে, শূন্যের আগের সংখ্যাগুলি ঋনাত্মক সংখ্যা। অর্থাৎ বিগব্যাঙের ঘটনা-বর্তমানের আগের সময় ঋনাত্মক কাল। 
                         

কিন্তু সে-কালে পৌঁছনো প্রায় অসম্ভব। তাই তার উপস্থাপন অপ্রয়োজনীয়। বরং ঋনাত্মক বা কাল্পনিক কালের উপস্থাপন একটু ভিন্ন আঙ্গিকে করা যায়। 

যদিও সময় নিরপেক্ষভাবে বিজ্ঞানের বিধিগুলি প্রমাণিত সত্য, তা অতীত ও ভবিষ্যতে সমানভাবে প্রযোজ্য। এ প্রসঙ্গে কনা-বলবিজ্ঞানের একটি উপপাদ্য বিশেষ উল্লেখ্য। সেখানে কাল্পনিক সময়ের উপস্থাপন একটু ভিন্ন আঙ্গিকে করা হয়েছে। সে কারণে হয়তো বা কাল্পনিক কালের ভাবনা কারও কারও মনে উদয় হতে পারে। তবে অচিরেই প্রমাণিত হবে সে ভাবনা ভ্রান্ত। বাস্তব ক্ষেত্রে তার অস্তিত্ব নেই। কনাবিজ্ঞানের সে নিয়মটি কী? 

তা হল C.P.T. থিওরেম। C-এর অর্থ কণিকার বিপরীত কণিকায় পরিবর্তন। P-এর অর্থ বিপরীত পার্শ্বপ্রতিবিম্ব গ্রহণ। এর ফলে ডান ও বামের পারষ্পরিক পরিবর্তন করা যায়। T -এর অর্থ সব কণার গতির অভিমুখ বিপরীতমুখী করা। অর্থাৎ কণার গতি পশ্চাৎমুখী করা। 
C.P.T. নিয়ম অনুযায়ী ― বিজ্ঞানের বিধিগুলি C, P ও T -এর যৌথ ক্রিয়ায় অপরিবর্তনীয়। এখন যদি C ও P -এর ক্রিয়ার সমন্বয়ে উক্ত বিধিগুলি স্থির থাকে, তাহলে পৃথিবী ব্যতীত অন্য কোন গ্রহে অ্যান্টিম্যাটার দিয়ে গড়া অধিবাসী পৃথিবীর বিপ্রতীপ পার্শ্বপ্রতিবিম্ব হলে উক্ত গ্রহে তাদের জীবন-চক্র আমাদের মতো গণিতের নিয়ম মেনে একই রকম হবে। আবার C ও P-এর যৌথ ক্রিয়ায় বিজ্ঞানের নীতিগুলি অপরিবর্তিত থাকলে শুধুমাত্র T -এর  ক্রিয়ার ক্ষেত্রেও সেগুলি ধ্রুবক থাকবে। সেক্ষেত্রে কণার গতির অভিমুখ পশ্চাৎমুখী হলে কাল্পনিক কালের ধারণা মান্যতা পায়। অথচ বাস্তবে তার উপলব্ধি সম্ভব না। একটা উদাহরণ দিলে বিষয়খানা আরও পরিস্কার হবে।

ধরা যাক, চিনামাটির তৈরি একটি কেটলি কাঠের টেবিলের ওপর রাখা আছে। কেটলিটি হঠাৎ টেবিল থেকে পাকার মেঝেতে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। এই ঘটনার একটি আলোকচিত্র নিলে বোঝা যায় ঘটনাপ্রবাহের অভিমুখ কোনদিকে। এখানে টেবিলের ওপর অখণ্ড কেটলি যদি অতীত কাল নির্দেশ করে, তবে মেঝেতে চিনামাটির টুকরোগুলোর অবস্থান অবশ্যই ভবিষ্যৎ কালে। এখন আলোকচিত্রটি পশ্চাৎগামী করলে স্ক্রিনে দেখা যায় ভবিষ্যতের বিশৃঙ্খল চিনামাটির টুকরোগুলি জোড়া লেগে মেঝে থেকে লাফিয়ে টেবিলের উপরে উঠে অতীতের আস্ত কেটলি পুনর্নির্মাণ করেছে।
     
এখানে সময় ভবিষ্যৎ থেকে অতীতে গমন করে। এটাই কাল্পনিক সময়ের অভিমুখ, আদতে যা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ আমরা প্রত্যেকে আমাদের শুভ জন্মদিন কিংবা জন্মক্ষণটি (যা আসলে অতীত) স্মৃতিতে ধরে রাখি। কিন্তু জীবিত মানুষের মৃত্যুকাল বা মৃত্যুক্ষণ (যা ভবিষ্যৎ কাল) সম্বন্ধে কোন তথ্য আমরা জানি না। অতীতকে যত সহজে স্মৃতিস্থ করা যায়, ভবিষ্যৎকে করা যায় না কেন? এর কারণ কী? সময় একমুখী বলেই কি ভবিষ্যৎকে স্মৃতিতে ধরতে পারে না কেউ? একমুখী সময়ের অপ্রতিসমতার কথা প্রথম উত্থাপন করেছিলেন ব্রিটিশ মহাকাশ বিজ্ঞানী আর্থার এডিংটন। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে। ভবিষ্যৎদ্রষ্টা হলে শেয়ারবাজারে দারুণ দাঁও মারা যেত তাহলে।

কেটলির ভাঙা টুকরোগুলোএকত্রিত হয়ে লাফ দিয়ে পুনরায় টেবিলের ওপর ওঠে না কেন তার ব্যাখ্যা দেয় তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র। 

তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র কী? 
এই সূত্র অনুসারে ― কোন বদ্ধ তন্ত্র (Closed System)-এর এনট্রপি সময়ের সঙ্গে সর্বদা বৃদ্ধি পায়। 

এনট্রপি কী? 
এনট্রপি হল একটি ঘটনার বিশৃঙ্খলার পরিমাপ, কোন বিস্ফোরণ বা প্রাকৃতিক ঘটনায় যার পরিমাণ বাড়ে। পূর্বের উদাহরণে টেবিলের উপর আস্ত চিনামাটির পাত্র একটি উচ্চমানের সুশৃঙ্খল অবস্থা এবং মেঝেতে ছড়ানো ছেটানো ভাঙা টুকরোগুলি তার বিশৃঙ্খল অবস্থা। তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র অনুযায়ী কোন বদ্ধ তন্ত্রে যেহেতু বিশৃঙ্খলার পরিমাণ বাড়বে, তাহলে টেবিলের উপর অতীতের কেটলি থেকে ঘটনাপ্রবাহ ভবিষ্যতে মেঝের ভাঙা টুকরোর দিকে ধাবিত হয়, উল্টো দিকে নয়। কারণ ঐ অভিমুখে বিশৃঙ্খলা বাড়ে।

এছাড়া কালের এমন অনেক তীর আছে যা প্রমাণ করে কাল অতীত থেকে ভবিষ্যৎগামী। এখানে কালের তেমন কিছু তীর উল্লেখ করলাম ―
           ১. কালের তাপগতীয় তীর
           ২. কালের মনস্তাত্ত্বিক তীর
           ৩. কালের মহাজাগতিক তীর
           ৪. কালের কোয়ান্টাম তীর
           ৫. কালের বিকিরণ তীর
           ৬. কালের কণাবাদী তীর

এখানে প্রথম তিনটি বিশেষ তীরের আলোচনা তুলে ধরব, প্রিয় পাঠক। তাতে পঠনের ভার অনেক কমে। প্রথমত কালের তাপগতীয় তীরের অভিমুখে সময়ের সঙ্গে এনট্রপি তথা বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পায়। বিস্ফোরণ হোক অথবা দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপ ― যে কোন প্রাকৃতিক ঘটনায় বিশৃঙ্খলা বাড়ে বই কমে না। তাই প্রাকৃতিক সমস্ত ঘটনায় এনট্রপি বাড়ে। এক কাপ গরম চা ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হয় যদি পারিপার্শ্বিকের উষ্ণতা কম থাকে। সেক্ষেত্রে তাপ বেশি উষ্ণতার চা থেকে কম উষ্ণতার পরিবেশে প্রবাহিত হয়। তাপ হল শক্তির আর একটি বিশৃঙ্খল রূপ। তাই পরিবেশে তাপ ছড়িয়ে পড়ে পারিপার্শ্বিকের বিশৃঙ্খল অবস্থা বাড়ে। তার ফলে এনট্রপি বৃদ্ধি পায়।

আবার ঐ চায়ে আলতো চুমুক দেওয়ার সময় যখন কাপে ঈষদুষ্ণ চায়ের পরিমাণ কমে অর্ধেক হয়, তখন তার অতীত সদ্য গরম চায়ের উত্তাপ স্মৃতির মধ্যে ধরে রাখি। কিন্তু যখন ভবিষ্যতে কাপে চায়ের পরিমাণ তলানিতে ঠেকবে তখন তা কতটা ঠাণ্ডা হবে তার আগাম আন্দাজ করা অসম্ভব। অর্থাৎ অতীতের তথ্য স্মৃতিতে ধরে রাখলেও ভবিষ্যতের তথ্যগুলো কোন এক ভৌতিক উপায়ে স্মরণে রাখা সম্ভব হয় না। যে ক্রমে বিশৃঙ্খলা বাড়ে, এনট্রপি বৃদ্ধি পায়; সে-ক্রমেই বিভিন্ন বিষয়-ঘটনাপুঞ্জ স্মরণে থাকে। তাই বলা যায়, যে অভিমুখে কালের তাপগতীয় তীর চলমান, সেই একই অভিমুখে কালের মনস্তাত্ত্বিক তীরও ধাবমান। ১৯৫১ সালে হ্যারল্ড ব্লাম কালের তীর (তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র) এবং জৈবিক বিবর্তনের মধ্যে সম্পর্ক অন্বেষণ করেন। তার 'Time's Arrow and Evolution' বইতে। তিনি বলেন বিশেষ নকশার বিবর্তন পৃথিবী ও তার তাপগতীয় প্রক্রিয়ার অজৈব স্বভাব দ্বারা পূর্বনির্ধারিত।

কিন্তু কালের তাপগতীয় তীরের অস্তিত্ব আদৌ কেন থাকবে? অথবা অন্যভাবে বললে, কালের একটি প্রান্তে (যে প্রান্তকে আমরা অতীত বলি) মহাবিশ্ব কেন উচ্চস্তরের সুশৃংখল অবস্থায় থাকবে? কালের যে অভিমুখে বিশৃঙ্খলা বাড়ে, সেই একই অভিমুখে ব্রম্ভাণ্ড প্রসারণশীল কেন? ব্রম্ভাণ্ড যখন সংকোচনশীল তখন কালের অভিমুখ বিশ্বের প্রসারণশীল অবস্থার উল্টো হবে কি? সেক্ষেত্রে মহাবিশ্বের সমগ্র ইতিহাসে কালের অভিমুখ অভিন্ন থাকার কথা নয়।

ব্রম্ভাণ্ডের সীমান্তহীনতার শর্ত তার প্রসারণের পক্ষে যুক্তি খাড়া করে। কিন্তু মহাবিশ্ব সম্প্রসারণ বন্ধ করে সংকোচন শুরু করলে কেমন হবে কালের অভিমুখ? সংকোচনশীল বিশ্বে বিশৃঙ্খলা তথা এনট্রপি হ্রাস পাবে বলে আপাতভাবে মনে হলেও বাস্তবে তার উল্টো ঘটনা ঘটে। তাছাড়া সীমান্তহীন অবস্থা মানেই সংকোচন প্রসারণের কালিক বিপরীত হবে তার কোন আবশ্যিকতা নেই ― এমনই ধারণা তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং (১৯৪২ ― ২০১৮)-এর (The Arrow of Time in 'A Brief History of Time' written by Stephen Hawking)।
                      
সীমান্তহীন অবস্থায় ব্রম্ভাণ্ডের সংকোচন চলা কালে বিশৃঙ্খলা একটানা বাড়তে থাকবে। কারণ সংকোচন দশা শুরুর অনেক আগে বিশ্বের সব তারকার মৃত্যু ঘটবে।তাদের মধ্যেকার প্রোটন ও নিউট্রন কণাগুলির ক্ষয়ের ফলে জন্ম নেবে স্থায়ী প্রাথমিক কণিকা কোয়ার্ক, বোসন এবং বিকিরণ। তখন মহাবিশ্ব থাকবে সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল অবস্থায়। অর্থাৎ শুধু প্রসারণের জন্য বিশ্বের বিশৃঙ্খলা বাড়ে না, বাড়ে তার সীমান্তহীনতা অবস্থার জন্য। তবে বিশ্বে বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব কেবল ব্রম্ভাণ্ডের প্রসারণ দশাতেই থাকতে পারে। কারণ তার জীবিত থাকার জন্য প্রয়োজন খাদ্য। খাদ্য তাপে রূপান্তরিত হয়। তাপ শক্তির এক বিশৃঙ্খল রূপ। আর তাই সংকোচনশীল মহাবিশ্বে বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব একেবারেই অসম্ভব, যদিও বিগব্যাঙ এবং বিগক্রানচ উভয়ই ব্রম্ভাণ্ডের দুটি অত্যন্ত সুশৃঙ্খল দশা।

সুতরাং প্রিয় পাঠক, কালের অভিমুখ হল সেটাই যে অভিমুখে বিশৃঙ্খলা বাড়ে; যে অভিমুখে আমরা অতীত স্মরণে রাখি, কিন্তু ভবিষ্যৎ স্মরণ করি না; যে অভিমুখে মহাবিশ্ব প্রসারণের পরে সংকুচিত হয়। তা না হলে, কালের তীর উভমুখী হলে তার প্রতিসাম্য নীতির জন্য পরমেশ্বর ভগবানের মতো আমরাও ভবিষ্যৎ দর্শন করে জ্যোতিষবিদ্যায় হাত পাকিয়ে খুব নাম-যশ-প্রতিপত্তির অধিকারী হতাম।

Post a Comment

1 Comments

  1. হকিং-এর স্টিং থিয়োরি পড়েছি। বিজ্ঞানে ঈশ্বর চিহ্ন পড়লাম। বোঝানোটা সুন্দর হয়েছে। সংকোচনকালে এনট্রপির অভাবে প্রাণীর আবির্ভাব সম্ভব নয়। কিন্তু প্রসারণ সীমা কতটা এবং সংকোচন ও প্রসারণে মহাবিশ্বে কতটা সময় ব্যয় হয় তার ধারণা পাওয়া গেল না। যদিও সেই সময় সৌর সময় নয়। তবে আমাদের ধারণা তো সৌর সময়ের তাই সেই নিরিখে একটা ধারণা পাওয়া গেলে মন্দ হতো না। সেটা এতোই বিশাল যে তা অঙ্কে প্রকাশ করা বেশ মুশকিল, তবু অঙ্কই পারে ঠিক মতো তা ফুটিয়ে তুলতে। আর শেষে জ্যোতিষীর অবতারণা মূল প্রতিপাদ্যকে একটু খেলো করে দেওয়া হলো না ? জ্যোতিষশাস্ত্র পুরো বিজ্ঞান নয়। এটি অ্যাপ্লায়েড ফিলোজফি। এর সঙ্গে মহাবিশ্বের সংকোচন প্রসারণ, বিগ ব্যাং, বিগ ক্রাঞ্চ এসবের কোন যোগ নেই। বরং বলা যায় জ্যোতিষচর্চা একটি অন্তর্বতী খণ্ড সময়ে অর্জিত কিছু জ্ঞানের ফলিত প্রয়োগ। লেখক এখানে সংযত হলে লেখাটি আরো ভালো লাগতো।

    ReplyDelete