জ্বলদর্চি

অন্যধারার শর্টফিল্ম - ৩/ নিসর্গ নির্যাস মাহাতো


অন্যধারার শর্টফিল্ম- ৩

নিসর্গ নির্যাস মাহাতো 

পুরস্কার, ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া আর বয়কটের হিসাব ছেড়ে আসল ফিল্ম হোক


শর্ট ফিল্ম একটা আন্দোলন। লিটল ম্যাগাজিনের মতোই। এখানে প্রতিভা প্রকাশ করতে 'নেপোটিজম' ব্রাত্য থাকাই শ্রেয়।

ফিল্ম শিখলাম না। কিন্তু স্বঘোষিত ব্রোকার হয়ে গেলাম, ঠিকা নিয়ে নিলাম কে কার সাথে কাজ করবে বা কে কার সাথে কাজ করবে না, তাহলেই খাইসে! ব্যক্তিগত শত্রুতা ভুলে জোট বদ্ধ হয়ে কাজ করার নামই শিল্প। ফিল্ম শিল্পের সেই ধারা যেখানে সমস্ত শিল্প একসঙ্গে ফুটে ওঠে। তাহলে কাউকে বেঁধে দেওয়া কেন? আমি শর্ট ফিল্ম জানলাম না। শেখার প্রাথমিক এরও প্রাথমিক পর্যায়ে হাবুডুবু খাচ্ছি। তবু তার আগেই সিন্ডিকেট তৈরি করে ফেলতে চাইছি। এতো ইন্ডাস্ট্রির পায়ে কুড়াল মারার অবস্থা!
যে যার নিজের মত শর্ট ফিল্ম বানানোর চেষ্টা করে। সেটাই কাম্য। অথচ কোথাও কোথাও নিজের কাজ ছেড়ে অন্যের দিকে ঝুঁকে পড়াটা নিজের পেছনেই 'বালখিল্য' স্টিকার চেটানো। কে কোথায় পুরস্কার পাচ্ছে, কোন কমিটি থেকে কার নাম সাজেস্ট করা হলো, কে কেমন কাজ করে। পুরস্কারের তালিকায় ওদের টিমের নাম কেন? বা এর/ এদের প্রোজেক্ট বিচারকের কাছে স্ক্রিনিংয়ের জন্য যাওয়ার আগেই চেপে দেওয়া হবে এই আলোচনা ও পরিকল্পনা হওয়া লজ্জাজনক।

ফিল্ম মানে টিমওয়ার্ক। এখানে এর ওর নামে কুৎসা রটানোটা আর যাই হোক শিল্প নয়। 'এ কাজ করতে করতে হাওয়া হয়ে যায়', 'এর কাজ কোয়ালিটির নয়', 'ও কাজ ডুবিয়ে দেবে', এই 'এর-ওর' কথাগুলো তাদের সামনেই বলা উচিত।  পেছনে বলে লোকের হয়তো একটা কাজ ফুসলিয়ে নেওয়া যায়, তাতে যোগ্যতা থাকে না। বরং সাফাই দিতে হয় 'তাড়াহুড়োতে করেছি বলে এরকম না হলে আরো বেটার হতো'। দর্শক শর্ট ফিল্ম দেখতে চায়। তাঁরাই বিচারক। তাঁরা বলবেন কোনও মিউজিক ভিডিও ভালো না খারাপ। এখানে অজুহাত শোনার জন্য কেউ বসে নেই। 

ভালো বা খারাপ, এই বিষয় আপেক্ষিক। কিন্তু 'কাঠি' না করে নিজের কাজের প্রতি মন দেওয়াটাই আশু প্রয়োজন।
আমাদের জেলাতেই সিনেমাটোগ্রাফার বলতে এক কথায় উঠে আসে সুমন রোম, কৃষ্ণা ভিলানি, সৌরভ নায়েক, সৌরভ ভট্টাচার্য্য, অয়ন দাস, মানস রায়, সৈকত সিং, সৈয়দ দীপু-এর নাম। 

আবার এডিটর বললেই চোখের সামনে ফুটে ওঠে সুমন্ত সাহা, সুনীল বিশ্বাস, সৌরভ কোনারের নাম। 

শর্ট ফিল্ম বা মিউজিক ভিডিও যদি বাড়ি হয় তবে তার ভিত স্ক্রিপ্ট। স্বতন্ত্রভাবে যারা স্ক্রিপ্ট লেখেন তাঁদের কথা বলতে গেলে প্রথমেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়, নির্মাল্য মুখোপাধ্যায় ও সুমন্ত সাহা, সোমদত্তার নাম। 

এই তিনটি ক্ষেত্রে যাঁদের নাম উল্লেখ করলাম তাঁরা ভাবেন অন্যভাবে। এই অন্য ভাবনাটাই দর্শক প্রেফার করেন। না হলে প্রতি গল্পেই গতানুগতিকভাবে প্রেম, বিরহ ঢুকে গিয়ে কেবলমাত্র এটাই সাবজেক্ট হয়ে দাঁড়ায়। সেখানে গল্প নিয়ে আর খেলার জায়গা থাকে না। 
নিজেকে জাত শিল্পী ভাবা আর তা হয়ে ওঠার চেষ্টা করার মাঝে থাকে বিস্তর ফারাক। আমার প্রজেক্ট আমি স্যাটিসফায়েড হয়ে রিলিজ করতে পারি। কিন্তু নিজেই নিজের প্রজেক্টকে 'সেরা' ঘোষণা করতে পারি না।  সেটা করবেন দর্শক।

 সমালোচনা শোনার জায়গাটা নিজেকেই করতে হবে নিজের পরবর্তী কাজ আরও ভালো করার জন্য। অবশ্যই সেই সমালোচনা যদি সমালোচনা হয়ে ওঠে তবেই। 

পরবর্তী আলোচনা:

১. প্রোডাকশন হাউস
২. ডিরেকশন
৩. ডকুমেন্টরি
৪. প্রোজেক্টে বন্ধু মহল
৫. অভিনয়
ক্রমশ...

-------------------
আরও  পড়ুন 

Post a Comment

0 Comments