জ্বলদর্চি

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর কহিলেন:ইহাও হইতে পারে, উহাও হইতে পারে/গৌতম বাড়ই


ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর কহিলেন:
ইহাও হইতে পারে, উহাও হইতে পারে

গৌতম বাড়ই

শশিকান্ত বললেন আশার কথা এবং অবশেষে বললেন না। আজকাল যেমন হয় আর কী! প্রশ্ন একটাই। উত্তর  ঐ যে-- ইহাও হইতে পারে, উহাও হইতে পারে। সবকিছু এখন ধোঁয়াশা। শশিকান্তকে চিনতে পারলেন তো! আমাদের ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর মাননীয় শ্রী শশিকান্ত দাস। একবার বললেন আশার কথা অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ধারাবাহিক অবনতির পর। আবার বললেন এই উৎসবের মরসুম কেটে গেলে জানিনা কী হবে। ওতেই আমাদের প্রমাদ গুণতে হল। কারণ আজকের খবরের সঙ্গে একটা ছোট খবরও লেগে ছিল, আগামী বছরের প্রথম ছ'মাসে ৩২০০০ হাজার কর্মী কমাবে ওয়াল্ট ডিজনি। কারণ দর্শক বিপুল ভাবে কমেছে থিম পার্কগুলিতে।
দেশটার তো দু-দুটো নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ছিল। তাদের কাছ থেকে এই অতিমারির সময়ে যেখানে বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দা চলছে পরামর্শ নেওয়া যেতেই পারত, প্রয়োগ করাই যেত দেশের আর্থিক হাল ফেরানোর জন্য। আসলে আমাদের আজ ভুলে ভরা দেশ। যোগ্যলোকের থেকেও অযোগ্যলোকেরা সংখ্যা বেশি। আর ক্ষমতার দাম্ভিকতা মানুষকে সব ভুলিয়ে দেয়। প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী যদি অর্থনীতি না ভাল বোঝেন তাহলে যোগ্য অর্থনীতিবিদ বা অভিজ্ঞ গোষ্ঠীর ওপর দেশের বা রাজ্যের আর্থিক হাল ফেরানোর দায়িত্ব দেওয়া উচিত।এখন হাল ফেরানোর থেকেও চমকদারির রাজনীতিতেই আমাদের বিপন্নতা গ্রাস করছে। প্রধানমন্ত্রী অথবা মুখ্যমন্ত্রী বা যে কোন মন্ত্রী আমাদের কাছে, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে এক একটা আইকন। তাই এমন কিছু কথা আমরা আশা করি না তাদের মুখে যা অন্তঃসারশূন্য হয়। কথার যেন একটা ধার ও ভার থাকে। ইনস্ট্যান্ট কথা প্রতিনিয়ত চলে না।সমস্ত কিছু বিচার বিশ্লেষণ না করে পুরো খোলনলচে পাল্টালে তার অগ্রিম বিপদটাও বুঝে নিতে হয় আগেভাগে। নোটবন্দী, জিএসটি এইসব যেতে না যেতেই এক কোভিডে আমরা তলিয়ে গেলাম অন্ধকারে। এখন কৃষিবিলের বিপদ অচিরেই হয়ত বুঝব।

এদিকে আজ নতুন করে শুনলাম আলুবাবা জীবন নাকি অনেক জায়গা জুড়ে আছে, পুরাতন আলুবাবারা। নতুন আলুবাবাদের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতেই হবে। সাতলক্ষ টন আলু মজুত আছে। কোথায়? না রাজ্যের হিমঘরে। কখন জানা গেল? দাম বাড়তে বাড়তে পঞ্চাশ ছুঁয়ে যেতেই। কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের আগেও আলুর দাম খুব একটা কম ছিল না।এই আলুবাজি আর পেয়াঁজিমারা দেখে দেখেই আমরা চলব। আসলে এত এত গরীবগুর্বোদের দেশে কোটিপতির জনপ্রতিনিধি হলে যা হবার তাই হচ্ছে।ওনাদের তো আলু পেঁয়াজ একশ বা পাঁচশো হলে কিছুটি এসে যায় না। আমরা কপালের ঘাম মুছি। ছেলেমেয়ের পাতে একটু আলুসেদ্ধ দিতে পারব না বলে। যখন বিরোধীতা করেন রাজনৈতিক নেতারা তখন ভাড়াবৃদ্ধি হলে ট্রাম পোড়ানো হয়, আলু পেঁয়াজের ছবি আর প্লাকার্ডে থালা হাতে বলা হয় আমরা এখন খাব কী? আর মসনদে বসে ঠিক ওরকম অবস্থায় পড়লে ঠুঁটো জগন্নাথ সব। মানেটা তোরা এখন খাবি খা। রাজা আসে, রাজা যায়, নিয়মনীতি পাল্টায় না।

আমাদের ঘরে ফেরা একরাশ দুঃখ নিয়ে। একরাশ কালো অন্ধকারে। কাজের বদলে ভিখিরি বানিয়ে রেশনের ভিক্ষেপাত্র ধরানোর এক চরম খেলা চলছে।শিক্ষা স্বাস্থ্য নিয়ে আজও সুষ্ঠু নীতি প্রনয়ণ হল না সারাদেশে।

তাই শশিকান্ত যথার্থ বলেছেন, ইহাও হইতে পারে আবার উহাও হইতে পারে। আমরা এরকম শুনতেই থাকব আর শুনছি সত্তর বছর ধরে। মেরা ভারত মহান।

আরও পড়ুন

Post a Comment

1 Comments