২০২১ নতুন বছর নতুন লেখা
গুচ্ছ ছড়া
মায়া দে
শীত
উত্তরে বয়
শীতল মলয়
পাতা খরখর
ঝরে ঝরঝর
সর্ষের ফুল
দুল দুল দুল
নাচে প্রজাপতি
আহ্লাদে মাতি
গন্ধ মধুর
নলেন গুড়
মোয়া সন্দেশ
পিঠে পুলি বেশ
নতুন ধান
জাগে আঘ্রাণ
সোনাঝুরি রোদ
আমোদ প্রমোদ।।
খুব ঝামেলা
শীতের বেলা
দিই কাঁথা মুড়ি
বসি হামাগুড়ি
কাঁপি ঠকঠক
মুখে বকবক
নড়চড় নয়
আছে শীত ভয়।
শীত যে মিঠে
মাথার উপরে পাখা তো নেই
নেই তো ছাতা মাথায়
সোয়েটার চাদর টুপি মোজা
লেপ কম্বল কাঁথায়।
রোদ দেখে আর পাই না ভয়
ছুট দিই না ছায়ায়
বরং একটু পিঠ মেলে দিই
মিষ্টি রোদের মায়ায়।
ঠান্ডা জলেও ছ্যাঁকা লাগে
জলকে লাগে ভয়
বীরের মতোন ঝপাং স্নান
শীত করেছি জয়।
ঠান্ডা হাত ঠেকাবো গালে
মুখটা যদি বাঁকে
কমলালেবুর খোসা ছিঁড়ে
নিংড়ে দেব চোখে।
কেমন মজা ধরছে জ্বালা?
বুকে নয় এ চোখে
ঝোলাগুড় আর শুকনো মুড়ি
খাবো চেখে মেখে।
কথায় কথায় রোদ যে পালায়
শেষ হয় যে বেলা
এই মরেছে ! ছাদের থেকে
লেপ নামানোর পালা।
দুপুরবেলা টককুল গিলে
রাত্রিবেলা পিঠে
যে যাই বলো শীতকালটা
বড্ড লাগে মিঠে।
জামাইষষ্ঠী
কেষ্টা চলে জামাইষষ্ঠী
মিষ্টি হাঁড়ি হাতে
জৈষ্ঠী মাসের রোদ্দুরে তার
উঠলো মাথা তেতে।
পেছন পেছন বৌ চলেছে
মনটা খুশি খুশি
বরের মাথা যাচ্ছে তেতে
ভেবেই মুচকি হাসি।
কেষ্টা নিলো মাথায় হাঁড়ি
রোদ থেকে তো বাঁচা
দুহাতে ধরা মিষ্টি হাঁড়ি
পথে লোটায় কোঁচা।
পিছন ফিরে চোখে চোখে
বৌকে ডেকে কয়
যত্নআত্তি ভালোই পাবো
নেই তাতে সংশয়।
শাশুড়ি ডাকেন বাবাজীবন
মাথায় রাখেন হাত
আদরযত্নে বেশ খেতে দেন
পঞ্চব্যঞ্জন ভাত।
চলছে দোঁহে পায়ে পায়ে
উড়ু উড়ু মন
কেষ্টার গায়ে মিষ্টি গন্ধ
বৌয়ের রনন ঝনন।
এমন সময় হঠাৎ কেষ্টা
হোঁচোট খেল পায়
কোঁচা গেল পায়ে আটকে
মিষ্টি হাঁড়ি ঢায়।
পথে লুটোয় রসোগোল্লা
হাঁড়ি ভেঙে চৌচির
কেষ্টার সাধের জামাইষষ্ঠী
বৌ কেঁদে অস্থির।
পেট
পেটটা নিয়ে নানান কথা
পেটটা নিয়ে চব্য
পেটটা যে কার কেমন হবে
যা আছে ভবিতব্য।
কারো পেট চিড়েচ্যাপ্টা
কারো পেট ফুলো,
কারোর আবার ধামার মতো
আস্ত একটা নুলো,
খবর লাগা খায় সে কতো
ঢোকায় কতো রোজ
বেখাপ্পা এই পেটের জন্য
কতো লাগায় ভোজ,
তাই বলে আমি---এই বলি না
চ্যাপটা চিড়ে পেটটা
একটু খাবার চিমটে খায়
ফেলে রাখে সবটা,
চ্যাপটা পেট ফুলো পেট
এক রকমই হয়
ভালো খাবার সামনে পেলেই
জিভে যে জল বয়।
পিছন ফিরে আর কি তাকায়?
কারো কথা কি ভাবে?
হাপুস হুপুস শব্দ করে
গাপুস গুপুস খাবে।
মস্ত বিরাট উনি
নাক থ্যাবড়া চশমা সাঁটা
মস্ত বিরাট কবি
হিজিবিজি লিখেই চলেন
এটাই তাঁর হবি।
মাথামুন্ডু হাত পা
কিছুই নেই লেখায়
কলম গুঁজে মাথা চুলকে
কেবল মগজ খাটায়।
হিং টিং ছট ফট ফটা ফট
বিদঘুটে সব লেখা
জোর করে সে জাপ্টে ধরে
যদি পায় সে দেখা।
পালাবি কোথা? মাথায় ঢোকা
বিদঘুটে সব কাব্য
ভিমরি খেয়ে মরবি শেষে
চলবে যতো চব্য।
কবির আবার দারুণ নেশা
কেবল ছবি আঁকায়
আঁকা দেখেও আঁৎকে উঠবে
জ্যাঠায় বাবায় কাকায়।
মন্দ নয় হাত যে জাদু
ছবিগুলো যেন সাচ্চা
হঠাৎ যদি সামনে দেখে
চেঁচিয়ে কাঁদবে বাচ্চা।
লেখায় আঁকায় বিশাল মান
বিশ্বমানের কবি
আরে রামো ! নিন্দা কিসের?
এমন জিন্দা ছবি।
জ্বলদর্চি পেজ- এ লাইক দিন👇
আরও পড়ুন।
0 Comments