গুচ্ছ কবিতা
তাপস ওঝা
'দুঃখকথা'
এক ।।
এক একটা দুঃখের এক একরকমের অঙ্গভঙ্গি
খেজুর গাছের ছায়ার দুঃখের সঙ্গে
সূর্যক্লান্ত পথিকের দুঃখের তেমন মিলমিশ নেই,
কাল্পনিক সংলাপের সঙ্গে
যেমন ভাবসাব নেই নিজস্ব কথাদের
অপরিসর বারান্দার।
বরেণ্য শিল্পী দুঃখ পাবেন বলে
যারা লুকিয়ে রেখেছিল তাঁর বয়সের কথা,
জনশূন্য সঙ্গীত-সভা তাদের ব্যঙ্গ করেছিল
আলোকিত মধ্যরাতে ।
দুই ।।
স্বল্পায়ু দুঃখের কথা পাঁচকান করতে নেই-
লোকে বলাবলি শুরু করতেই
দুঃখটাতো ছোট হয়ে উড়ে যাবে
একলাইনের কবিতার মতো!
দুঃখ বিশদ হলে ভালো -
রামায়ণ হয়ে অনন্ত কান্নার জন্ম দেবে।
তিন ।।
উজ্জ্বল অসহায়তার নামও দুঃখ হতে পারে!
হাওয়ার হিমেও
অপেক্ষার ক্লান্ত ঘরে ঘুম না-ভেঙে
পবিত্র সমাধি হতে পারে ।
'এত দুঃখে কীভাবে ঘুমোতে পার?'
কে বলেছে হঠাৎ দেখতে গিয়ে
চোখ খুলেছ যেই
দুঃখও অসহায় হয়ে ছুঁয়েছে তোমার
দুই চোখ !
চার ।।
পাথরের গায়ে এ পর্যন্ত যত নাম পড়তে পেরেছ
হতে পারে, তাদের অর্ধেক নাম
দুঃখ দিয়ে লেখা !
উপকথনের স্মৃতি তেমন বিশ্বস্ত নয়-
হয়তো বৃষ্টির দিনে
পাথরে লেখা নাম
স্মৃতির নামের সঙ্গে মিলেমিশে গেল-
বৃষ্টি যে থামবে কখনও
এমন মনেও হোল না!
পাঁচ ।।
ভুবনে তিমির থাকে,
তিমিরেও সুখদুঃখ থাকে।
মন্ত্রীদের মতো মিথ্যেকথা সকলেই
দিনমানে বলতে পারে না।
তারা তিমিরের অপেক্ষায় থাকে।
ভুবনের অন্ধকারে মিথ্যেকথা বলা হয়!
যারা মন্ত্রী নয়,
যারা সাধারণ মানুষের মতো,
তাদের প্রাণের কথা
দুঃখে দুঃখে মিথ্যে হয়ে যায়।
জ্বলদর্চি পেজ- এ লাইক দিন👇
আরও পড়ুন
গুচ্ছ কবিতা / শ্যামলকান্তি দাশ
2 Comments
খুব সুন্দর সবকটি কবিতা।তাপসদা।
ReplyDeleteচমৎকার ( প্রত্যেকটি কবিতা )
ReplyDelete